প্রতিটি ক্যাম্পাসের সবগুলো টিমের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ও সহযোগিতা ছিলো প্রোগ্রাম সফল করার প্রথম হাতিয়ার। সবাই সবার নিজস্ব জায়গা থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছে,যার ফলে টেক্সটাইল ইয়ুথ কার্নিভাল ২.৩ এত সুন্দর করে সম্পন্ন হয়েছে। ক্যামেরার সামনের প্রত্যেকেই ছিলো প্রাণবন্ত,সহজবোধ্য ও বন্ধুসুলভ। আর ক্যামেরার পিছনের প্রত্যেকে ছিলো সময়ানুবর্তী,পরিশ্রমী ও সৌহার্দ্যপরায়ণ।
টেক্সটাইল টেকনোলজির এই প্রতিযোগিতার যুগে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারস পরিবার ইন্ডাস্ট্রি ও একাডেমিয়ার মাঝে গভীর মেলবন্ধনটা সুষম ও সুন্দরভাবে পরিচালনা করার চেষ্টা করে যাচ্ছে।তারই ধারাবাহিকতায় আজ টেক্সটাইল ইয়ুথ কার্নিভাল ২.৩ দ্যা ইনস্টিটিউশন অফ ইঞ্জিনিয়ারস(আইইবি) তে অনুষ্টিত হয়েছে। উক্ত অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার, ম্যাম এবং ইন্ডাস্ট্রিয়াল এক্সপার্টরা তাদের মূল্যবান বক্তব্যের মাধ্যমে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারদের অদূর সোনালী ভবিষ্যতের দিকনির্দেশনামূলক বাণী পেশ করেন।
টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারস সোসাইটির ফাউন্ডার রিফাতুর রহমান মিয়াজী শুভেচ্ছা বক্তব্য দিয়ে মূল অনুষ্টান শুরু করেন। তারপর জি-স্টার র এর কান্ট্রি ম্যানেজার জনাব শফিউর রহমান বলেন, ফ্রেশার ও ইন্ডাস্ট্রির মাঝে দ্রুত সুসম্পর্ক তৈরী করতে টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রি ও ম্যাশিনারী সম্পর্কে জানার বিকল্প নেই।কাজে মনোযোগী ও দক্ষ ফ্রেশারদের চাকরি দিতে বেশিরভাগ কোম্পানি উন্মুখ হয়ে বসে আছে। ডেনিম নিয়ে যাদের আগ্রহ ও কাজ করার পরিকল্পনা আছে তাদের জন্য জি-স্টার সবসময় প্রস্তুত।
তারপর অ্যারোটেক্স গ্রুপ এর ডিরেক্টর অফ অপারেশনে দায়িত্বরত ‘আবরার আলম খান‘ বলেন, টেক্সটাইল পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের জন্য পূর্ব থেকে ইন্ডাস্ট্রির সংযোগ অপরিহার্য ভূমিকা পালন করে। আজকের এই টেক্সটাইল ইয়ুথ কার্নিভাল ২.৩ সেই পথটা আরো সুগম করে দিয়েছে। ইন্ডাস্ট্রি এক্সপার্টদের সাথে সুসম্পর্ক তৈরী ও পরামর্শ নিতে এরকম কার্নিভালের বিকল্প নেই। টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়াস সোসাইটিই পারবে ইন্ডাস্ট্রি ও একাডেমিকের মাঝে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরো সুন্দর করতে।
এরপর হুরাইন হাই-টেক ফেব্রিক্স লিমিটেড(যমুনা গ্রুপ)এর সিএমও মি. ‘আব্দুল হাকিম‘ সাহেব বলেন,আমাদের সবাইকে অধ্যাবসায়ী হতে হবে। শুরু থেকেই এক জায়গায় কোনো কাজে লেগে থাকলে শেষ পর্যন্ত ভালো জায়গায় যাওয়ার সুযোগ থাকে। বেশি অফার বা পদোন্নতির সুযোগ পেয়ে সাথে সাথে চাকরি পরিবর্তন না করে প্রথমত নিজের ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিয়ে কোম্পানির ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার বিষয়টা লক্ষ্য রাখতে হবে।ফলে পদোন্নতি সুযোগ পেলেই সাথেসাথে চাকরি পরিবর্তন করাটা সমীচীন নয়।
এরপর বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস্ এসোসিয়েশন(বিটিএমএ) এর ভাইস-প্রেসিডেন্ট ও প্রেসিডেন্ট একাধারে তাদের মূল্যবান বক্তব্য রাখেন। ভাইস-প্রেসিডেন্ট ‘আবদুল্লাহ আল মামুন‘ বলেন,বাংলাদেশের বাস্তবতায় তৈরি পোশাক শিল্পে দক্ষ মানুষের খুব প্রয়োজন। আধুনিক যুগে কেউই পোশাক ব্যতীত চলতে পারে না।পোশাক খাত আমাদের সাথে ওতোপ্রোতভাবে জড়িত,তাই পোশাক খাত দিনদিন ব্যাপকভাবে বিস্তৃত হচ্ছে।
ফ্যাশন ট্রেন্ডের যুগে প্রত্যেককে নিত্যনতুন চিন্তাভাবনা, সৃজনশীল ও পরিশ্রমী হতে হবে। সবসময় আধুনিকার সাথে নিজেকে আপডেট রাখতে হবে।নিজের সংস্কৃতির বাইরে গিয়ে চিন্তা করতে হবে,তাহলে বৈশ্বিক অর্থনীতির সাথে নিজেকে খাপ খাওয়ানো যাবে। নিজের লক্ষ্যে অটুট থেকে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। অবশেষে তিনি সকল শিক্ষার্থীদের জীবনের অগ্রযাত্রায় পাশে থাকার আশ্বাস দেন।
বিটিএম’র প্রেসিডেন্ট ‘মোহাম্মদ আলী খোকন‘ বলেন,মানুষ তার স্বপ্নের চেয়েও বড়,মানুষের পক্ষে কোনোকিছুই অসম্ভব নয়। টেক্সটাইল সেক্টর দেশের অর্থনীতিতে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখছে।চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রির মার্কেট অনেক বিশাল ও সুদূরপ্রসারী। বিগত এক যুগ ধরে দেশের রপ্তানি খাতে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করছে তৈরী পোশাক শিল্প। বিশ্বব্যাপি এই খাতের চাহিদা বেড়েই চলেছে।
তিনি আরও বলেন,অর্থ-বৈভবের পিছনে না ঘুরে আমাদের সবাইকে কাজের সাথে থাকতে হবে। তাই তিনি তরুণদের যোগ্য, পরিশ্রমী এবং দক্ষ হবার পিছনে গুরুত্ব আরোপ করেন।পরিশেষে,টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারস সোসাইটি নিবেদিত টেক্সটাইল ইয়ুথ কার্নিভাল ২.৩ সংশ্লিষ্ট সবাইকে ইন্ডাস্ট্রি ও একাডেমিয়ার মধ্যে দূরত্ব কমিয়ে কিভাবে আরো সুসম্পর্ক তৈরী করা যায় সে বিষয়ে আলোকপাত করেন।
টেক্সটাইল ইয়োথ কার্নিভালকে আনন্দ ও সৌন্দর্যমন্ডিত করার জন্য প্রধান অনুষ্ঠান শুরুর আগে কবিতা আবৃতি,নাচ,গান,সাংস্কৃতিক অনুষ্টান,রেফেল ড্র অনুষ্ঠিত হয় এবং বিজয়ীদেরকে পুরস্কৃত করা হয়। প্রধান অনুষ্ঠান শেষে বিশেষ অতিথির উপস্থিতিতে ফ্যাশন শো অনুষ্ঠিত হয়। টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারস সোসাইটি’র বিভিন্ন ক্যাম্পাস টিমের ডেডিকেটেড ও মোষ্ট এক্টিভ মেম্বারদের এওয়ার্ড ও সংবর্ধণা দেওয়া হয়। ফাউন্ডার রিফাতুর রহমান মিয়াজী’র বক্তব্য শেষে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারস সোসাইটি প্রেজেন্টস টেক্সটাইল ইয়ুথ কার্নিভাল ২.৩ উপস্থিত সবাইকে পারটিসিপেশন সার্টিফিকেট দেওয়া হয়।
টেক্সটাইল ইয়ুথ কার্নিভাল এর ইভেন্ট কনভেনর ও টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারস সোসাইটি’র সিওও মোঃ মোরশেদ আলী ইভেন্টটি অতি বিচক্ষণতার সাথে দেখভাল করেন। ফলে অনুষ্ঠানের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সবাই ছিলেন খুবই আনন্দিত ও হাস্যোজ্জ্বল।
নিজস্ব প্রতিবেদক
নিটার ১০ম ব্যাচ