রিসাইকেল মানে ব্যবহার করা জিনিসকে বিভিন্ন পদ্ধতি অনুসরণ করে তা আবার পুনরায় ব্যবহার করার উপযোগী করে তোলাকে বুঝায়।
পাশাপাশি, টেক্সটাইল রিসাইকেল হল পুরোনো সুতা, ফ্যাব্রিক কিংবা অন্য কোনো ম্যাটেরিয়াল সংগ্রহ করে, পরবর্তীতে তা রাসায়নিক পদ্ধতি অনুসরণ করে টেক্সটাইল উপাদানের সাথে মিশ্রিত করে নতুন পণ্য তৈরি করাকে বুঝায়।
অনেকগুলো টেক্সটাইল ফাইবার মিশ্রিত করে কম্পোজিট ফাইবার তৈরি করা হয়। কেভলার ফাইবার, কার্বন ফাইবার সর্বোৎকৃষ্ট উদাহরন কম্পোজিট ফাইবারের। বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট, বিমান তৈরি, বিভিন্ন রকম স্যুট
তৈরিতে যা ব্যবহার করা হয়। ওয়েস্ট ম্যাটেরিয়ালকে ভালোমত রিসাইকেল করে এমন ফাইবার তৈরি করা যায়।
বর্তমানে টেক্সটাইল সেক্টরে রিসাইকেল এর কেন এত প্রয়োজন?
১. একটি টি-শার্ট বানাতে যে পরিমাণ তুলো লাগে বা উৎপাদন করার জন্য 2700 লিটার পানির প্রয়োজন হয় ।
বিশ্বের পানি দূষণের জন্য ৫ ভাগের ১ ভাগ দায়ী টেক্সটাইল শিল্প। বিশ্বের পরিবেশ দূষনের ৮% অংশিদার এই টেক্সটাইল সেক্টর। পরিবেশ দূষনের দিক দিয়ে টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রি ২য় অবস্হানে আছে।
২. টেক্সটাইল শিল্প বিশ্বব্যাপী বর্জ্য পানি মোট পরিমাণের 20% উৎপাদন করে এবং বিশ্বব্যাপী কার্বন নিঃসরণের 10% এর জন্য টেক্সটাইল শিল্প দায়ী । এই পরিমান সমস্ত পৃথিবীর সব আন্তর্জাতিক ফ্লাইট এবং সমুদ্র পরিবহণের জাহাজের মিলিত বায়ু দুষনের পরিমাণের চেয়েও বেশি।
৩. পরিবেশ সংরক্ষণ সংস্থা ( ইপিএ) এর মতে, ২০১৩ সালে ১ মিলিয়ন টন টেক্সটাইল বর্জ্য উৎপাদিত হয়েছিল।প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, প্রতি বছর প্রায় ৫০০ বিলিয়ন ডলার ক্ষতিগ্রস্থ হয় যেগুলি এমন পোশাকের কারণে খুব কমই পরা বা পুনর্ব্যবহারযোগ্য হয় না।
রিসাইকেল এর কিছু নানাবিধ ব্যবহারঃ
১.পানি খাওয়ার পর যে বোতলটি ফেলে দেওয়া হয়, সেই প্লাস্টিকের বোতল দিয়ে বর্তমানে তৈরি হচ্ছে ফাইবার। হ্যাঁ, অবাক হলেও সত্য । এই ফাইবার দিয়ে সুতা বানিয়ে রঙ-বেরঙের পলিস্টার কাপড় তৈরি হচ্ছে। এই তুলা আবার বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি করে বছরে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা আয়ের পথ তৈরি হয়েছে। প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবহার করে রি-সাইকেল পদ্ধতিতে তুলা তৈরি করার এই কৌশলটি এখন দেশেই সম্পন্ন করা সম্ভব হচ্ছে। বিশেষ করে ইউরোপিয়ান দেশগুলোতে, উদাহরণস্বরুপঃ স্পেন এর ক্লাব বার্সেলোনা তাদের নতুন মৌসুমের জার্সি প্লাস্টিকের বোতল রিসাইকেল করে তৈরি করেছে। যা এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
২ এক সমীক্ষা অনুযায়ী, তুলা বর্জ্য রিসাইকেল করে বাংলাদেশ বার্ষিকভাবে প্রায় ৫০০ মিলিয়ন ডলার সাশ্রয় করতে পারে
প্লাষ্টিকসহ বিভিন্ন waste ম্যাটারিয়াল রিসাইকেল করে পরিবেশকে ভালো রাখা যায়। বাংলাদেশ এর সকল ফ্যাক্টরি বিশেষ করে গার্মেন্টস সেক্টরে waste ম্যাটারিয়াল নিয়ে কাজ করলে; তবেই বাচবে পরিবেশ, বাচবে মানবসত্তা।
সূত্রঃ গুগল, অনলাইন নিউজপোর্টাল।
লেখকঃ
Md Ashiful Islam Sawon
Department of Textile Engineering
Southeast University