Thursday, December 26, 2024
Magazine
More
    HomeTechnical Textileসাসটেনেবল টেক্সটাইলের উদাহরণ হিসেবে পদ্ম ফাইবার

    সাসটেনেবল টেক্সটাইলের উদাহরণ হিসেবে পদ্ম ফাইবার

    টেক্সটাইল সেক্টরের এখন একটি হট টপিক সাসটেনেবল টেক্সটাইল।সাসটেনেবলিটি বলতে বোঝায় কোনো বস্তু কতটা টেকসই।আর টেক্সটাইল সেক্টরে এ কথার অর্থ দাঁড়ায়,পরিবেশ বান্ধব উপায়ে ফ্যাব্রিক তৈরি অর্থাৎ জৈবিক উপায়ে টেকসই কাপড় তৈরি।ইন্ডাস্ট্রি সেক্টরে এখন এ কথার মাহাত্ম্য অনেক বড় হয়ে দাঁড়িয়েছে।কারণ,জরিপে দেখা গেছে পরিবেশ দূষণের জন্য এক বড় অংশ দায়ী টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিগুলো।তাই বিশ্ব টেক্সটাইল এখন পরিবেশ ভারসাম্য রক্ষার্থে সাসটেনেবলিটিতে বেশি ঝুঁকছে।
    মানুষ জন্ম থেকেই প্রকৃতির সৌন্দর্যের মোহে আকৃষ্ট।এর আগেও প্রকৃতির অনেক সুন্দর উপাদান থেকে টেক্সটাইল সেক্টরে ফাইবার তৈরি হয়েছে।তবে এবারে একটু ব্যতিক্রম।পদ্ম ফুল থেকে তৈরি হচ্ছে ফাইবার।টেক্সটাইল সেক্টরে যা অনেকটা শুনতে ‘গোবরে পদ্ম ফুল’ এর মতো।নোংরা পানিতে জন্মানো এই ফুল মানব খাদ্যাভ্যাসের জন্য যেমন উপকারী তেমনটি সাসটেনেবল টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিতেও অবদান রাখতে সম্ভব হবে।বাজারে এই ফাইবার ‘Lotus Silk’ নামে বেশি পরিচিতি পেয়েছে।কয়েক শতাব্দী ধরেই থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া, মায়ানমারের মানুষ এই ফাইবারের পোশাক ব্যবহার করে আসছে।

    কিভাবে হবে এই ফাইবার :
    প্রথমে পদ্ম গাছের কান্ড সংগ্রহ করা হয়।তারপর দীর্ঘ পাতলা তন্তু পাবার জন্য শেষ প্রান্তে কাটা হয়।কয়েকটি কান্ড একত্রে নিয়ে মোচড় দিতে হয় যার ফলে পদ্ম তন্তু বেরিয়ে আসে।এরপর তন্তুগুলো ভালো করে ধুয়ে শুকানো হয়।পরবর্তীতে রোলিং করে সুতায় পরিণত করা হয়।এই রোলিং এর কাজেই একজন তাঁতির সাথে প্রায় ২০ জনের মতো শ্রমিকের প্রয়োজন হয়।সুতা তৈরি হয়ে গেলে সুতার জটকে বাশের তৈরি স্পিনিং ফ্রেমে রেখে ওয়ারপিংয়ের জন্য প্রস্তুত করা হয়।ওয়ারপিং এর অর্থ হলো সুতার কুন্ডলী পাকানো ।খুব ধৈর্য্য ও যত্ন সহকারে এই কাজগুলো করতে হয়।এই ফাইবার তৈরিতে কোনো রাসায়নিক বিষাক্ত উপাদান ব্যবহার করা হয় না।তাই সেদিক থেকে এই ফাইবার পরিবেশের জন্য শতভাগ পিওর।

    এই ফাইবারের তৈরি ফ্যাব্রিক দেখতে অনেকটা লিনেন ও সিল্ক কাপড়ের মতো। একটি পূর্ণাঙ্গ পোশাকের জন্য অনেক পদ্ম গাছের প্রয়োজন হয় এবং সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক ছোয়ায় তৈরি হওয়ায় লিনেন ও সিল্কের কাপড়ের তুলনায় পদ্ম ফুলের তৈরি কাপড় খুব ব্যয়বহুল।এই ব্যয় কমানোর জন্য এখন এই ফাইবারের সাথে সিল্ক, তুলাসহ অন্যান্য ফাইবার মিশিয়ে কাপড় তৈরি করা হয়।

    পদ্ম কাপড় অনেক হালকা,নমনীয়, আরামদায়ক,টেকসই,জীবাণু প্রতিরোধী(কারণ কাপড়টি প্রাকৃতিক মাইক্রো ফাইবার)।এছাড়াও এর একটি বিশেষত্ব হলো এই কাপড় অন্যান্য কাপড়ের তুলনায় অনেকটা কম নোংরা হয়।

    এই ফেব্রিকের গুনমান দেখে বানিজ্যিক ব্যবহারের জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে।বিশেষজ্ঞদের মতে,”প্রাকৃতিক ফাইবারগুলো তুলনামূলক পরিবেশ বান্ধব।আর যেহেতু এই ফাইবার ক্যামিকেলমুক্ত তাই বিলাসবহুল বাজারে এক আকর্ষণীয় প্রভাব ফেলতে পারে এই ফাইবার।” এসব ফাইবারের ব্যবহার কম হওয়ার কারণে এর উৎপাদন মুল্য আমাদের হাতের নাগালে থাকে না। একসময় অন্যান্য ফাইবারের তৈরি প্রোডাক্টগুলোও ব্যয়বহুল ছিল।কালের পরিক্রমায় সেসব ফাইবারের পোশাকও আজ প্রত্যেক মানুষের হাতের নাগালে।তাই আশা করাই যায় পদ্ম ফুলের ফাইবারও নিজের প্রাপ্যতা খুজে পাবে বানিজ্যিক বাজারে।

    সূত্র:গুগোল,উইকিপিডিয়া,ইউটিউব,টেক্সটাইল টুডে


    Writer Information :
    Bipro Brota Roy
    Ahsanullah University of Science and Technology
    Department of Textile Engineering
    (Batch-40)

    RELATED ARTICLES

    LEAVE A REPLY

    Please enter your comment!
    Please enter your name here

    Related News

    - Advertisment -

    Most Viewed