বর্তমান বিশ্বে যেমনি জনসংখ্যা বিপুল হারে বেড়েই চলেছে ঠিক তেমনি বেড়ে যাচ্ছে ফেব্রিকের বিপুল চাহিদা। এই বিপুল চাহিদার মধ্যেও যদি ফেব্রিকের অপচয় ঘটে তাহলে এই চাহিদা কোনোভাবেই সম্পূর্ণ করা সম্ভব না। অপরদিকে ফেব্রিকগুলি তাদের জীবনচক্রের পরে ফেলে দেওয়া হয় এবং যত্রতত্র পোড়ানো হয় । যার ফলে এটা মানুষ এবং বাস্তুশাস্ত্রের উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে। একটি সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে মার্কিন সরকার প্রকাশ করেছে “গার্মেন্টস ফেব্রিকে ব্যবহৃত “NPE”(Nonylphenol Ethoxylates) নামক এক প্রকার রাসায়নিক উপাদান পাওয়া গেছে যা খুবই বিষাক্ত এবং এটি ফেব্রিক পোড়ানোর পর গ্যাসে রূপান্তরিত হয় এবং আশেপাশের জলাশয়ের পানিকে বিষাক্ত করতে সক্ষম “, এদিকে আমরা গামেন্টস্ ফেব্রিকের উপর সম্পূর্ণ নির্ভরশীল। তাছাড়া দিনের পর দিন পোশাকের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে সাধারণ জনগণের। তাই টেক্সটাইল শিল্পে এসব দিককে বিবেচনা করে অব্যবহৃত ফেব্রিকের নতুন করে ব্যবহার করার দিক সুদূর প্রসারিত করেছে।
কিছু গামেন্টস্ ফ্যাক্টরি এই দিকটি নিয়ে বিবেচনা করেছে এবং অপচয়কৃত ফেব্রিক থেকে বিভিন্ন মানের তুলা এবং পরবর্তীতে ব্যবহারযোগ্য ফেব্রিকে রূপান্তরিত করেছে। উদাহরণসরূপ, ইতালির প্রাতো শহরে পুরানো ফেব্রিকের সম্ভার পাওয়া যায় । প্রায় ১০০র বেশি কম্পানি এই ছোট্ট জেলা শহরে। এইসব কম্পানিগুলো পুরনো ফেব্রিক থেকে বিভিন্ন ধাপ অনুসরণ করে তুলা সংগ্রহ করে থাকে। প্রথমত এরা বিভিন্ন দেশ এবং আশেপাশের গামেন্টস্ থেকে পুরনো ও অব্যবহারযোগ্য ফেব্রিক সংগ্রহ করে। এরপর রং এবং উপাদানের নির্ভর করে ফেব্রিকগুলো আলাদা করে এবং Carbonizing মেশিনের মাধ্যমে ফেব্রিকের ইমপিউরিটি দূর করে। পরবর্তীতে বিশাল ওয়াশিং মেশিনের সাহায্যে পরিস্কার করা হয় এবং ধাপে ধাপে কাটা হয় এরপর শুকানো হয়। শেষ পর্যায় উল ফাইবারে রূপান্তরিত হয়। এই তুলা ফ্যাশন কম্পানিতে বিক্রি করা হয় যা পরবর্তীতে নতুন ফেব্রিকের রূপ নেয়।
একটি বিশেষ গবেষণায় জানা গেছে প্লাস্টিক এবং পলিথিন ১০০ বছরেও মাটির সাথে মিশ্রিত হয় না যার ফলে মাটির উর্বরতা হ্রাস করছে। তাছাড়া সমুদ্রে চলাচল করা বিভিন্ন জাহাজ থেকে ফেলে দেওয়া হচ্ছে অজস্র প্লাস্টিকের জিনিসপত্র। যা পরিবেশে বসবাসরত অনান্য জীবের এবং পরিবেশের উপর ভয়াবহ প্রভাব বিস্তার করে। কিন্তু যদি প্লাস্টিক বা পলিথিন দিয়ে ফেব্রিক বানানো যায় তবে??
হ্যাঁ , এটা সম্ভব Eco-spun এমন একটি ব্র্যান্ড যা পুনর্ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের বোতল থেকে তৈরি পুনর্ব্যবহৃত ফেব্রিক বিক্রি করে। প্রতিবছর ৯ মিলিয়ন প্লাস্টিক-ভিত্তিক বর্জ্যগুলি স্থলভূমিতে নিষ্পত্তি করা হয় এবং সেই সমস্ত বর্জ্য পুনর্ব্যবহারের ক্ষেত্রে এ জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ কাজ পুনর্ব্যবহৃত টেক্সটাইল বিভাগের জন্য একটি অবিশ্বাস্য বিকল্প হতে পারে। দু’শ পিইটি বোতলগুলি একটি সাধারণ মাপের সোফাকে কভার করতে পারে । ইকো-ফাই ১০০% পুনর্ব্যবহৃত পিইটি ফাইবারগুলি থেকে তৈরি টেক্সটাইলগুলি তৈরি করে এবং হোম টেক্সটাইল, গাড়ির অভ্যন্তর, আসবাব, গৃহসজ্জার সামগ্রী এবং ক্রাফট আইটেমের মতো বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশন হিসাবে ব্যবহৃত হয়। উলের সাথে মিশ্রণগুলিও বাজারে খুব জনপ্রিয়। Lutradur ECO আরেকটি টেকসই ব্র্যান্ড যা নিষ্পত্তিযোগ্য পানীয় পিইটি বোতল ব্যবহার করে এবং সুতা তৈরি করে। এক বর্গমিটার ফ্যাব্রিক এক দুই লিটার পিইটি বোতল থেকে তৈরি করা হয়। সমুদ্রের ফাইবার সমুদ্র থেকে আপসাইক্লিং বর্জ্য দ্বারা তৈরি করা হয়। ২০১৭ সালে এই বিশেষ উদ্যোগটি প্লাস্টিকগুলিকে টেক্সটাইল ফাইবারে রূপান্তরিত করে।
Source : omicsonline.org , BBC News
Writer:
Md. Asfaq Rahman
Department of Textile Engineering
BGMEA University of Fashion & Technology
Batch:201