মার্কিন ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রির আকার বিশাল। বর্তমানে এটি শত শত বিলিয়ন ডলারের মূল্যের প্রায়।করোনাভাইরাস মহামারী মার্কিন ফ্যাশন শিল্পের বৃদ্ধির হার এবং বিক্রয় পরিসংখ্যান উভয়কেই প্রভাবিত করেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পোশাকের বাজার 2019 পর্যন্ত প্রায় 368 বিলিয়ন ইউএস ডলার মূল্যবান ছিল, যার মধ্যে টিজেএক্স এবং ম্যাসির মতো শীর্ষস্থানীয় খুচরা বিক্রেতারা প্রায় 20 বিলিয়ন ইউএস ডলারের বিক্রয় নিয়ে এসেছিল।
ইউনাইটেড স্টেটস ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের (ইউএসএফআইএ) ২০২১ ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রি বেঞ্চমার্কিং স্টাডি অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেতা এবং ফ্যাশন সংস্থাগুলি আগামী দুই বছরে বাংলাদেশ থেকে সোর্সিং বাড়ানোর পরিকল্পনা করেছে। টেক্সটাইল ফোকাস অনুসারে, এই সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের উৎপাদিত বস্ত্র ও পোশাকের কম দামের কারণ এ হয়েছে। বাংলাদেশের পোশাক শিল্প (আরএমজি) একক বৃহত্তম রপ্তানি উপার্জনকারী। দেশের মোট রপ্তানি আয়ের অনেক বড় অংশ এই খাতের।
চলতি বছরের জুলাই-মে মাসে বাংলাদেশের একটি পোশাক পণ্যের দাম ছিল ২.৫ ডলার, যখন বৈশ্বিক গড় মূল্য ছিল ২.৬ ডলার । বাংলাদেশ সবচেয়ে প্রতিযোগিতামূলক মূল্য প্রদান করে। তার পরে চীন, ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়া, ভারত এবং কম্বোডিয়া ইত্যাদি দেশগুলো প্রদান করে।
শুধুমাত্র চীন বাংলাদেশের চেয়ে কম দামের প্রস্তাব দেয়। যাইহোক, মার্কিন ক্রেতারা বিভিন্ন সোর্সিং ঝুঁকি কমাতে চীন থেকে তাদের সোর্সিংকে সরাতে চায়। মার্কিন-চীন বাণিজ্য যুদ্ধ মার্কিন ফ্যাশন কোম্পানিগুলির জন্য সোর্সিং খরচ উদ্বেগ এবং আর্থিক চ্যালেঞ্জকে তীব্র করেছে। চীন থেকে আমদানি করা পোশাকের গড় শুল্ক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ২০২০ সালে ২৩.৪ শতাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে যা ২০১৭ সালে ছিলো ১৬.৫ শতাংশ।২০২১ সালে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত পোশাক সোর্সিং গন্তব্যগুলির মধ্যে প্রায় সবই এশিয়া ভিত্তিক, যার নেতৃত্বে রয়েছে চীন (৯৩%), ভিয়েতনাম (৮৭%), ভারত (৭৭%) এবং বাংলাদেশ (৭৩%)।
লকডাউনের কারণে বাংলাদেশের RMG শিল্প দীর্ঘ সময়ের জন্য বন্ধ থাকলে ক্রেতারা বিকল্প সোর্সিং দেশে চলে যেতে পারে এমন ধারণা করা হচ্ছিলো।কিন্তু আমেরিকান ফ্যাশন ব্র্যান্ডের প্রায় অর্ধেক ক্রেতারা আগামী দুই বছরে বাংলাদেশ থেকে আরো বেশি সোর্সিং পেতে আগ্রহী, কারণ তারা বিশ্বব্যাপী স্বাভাবিক মূল্যের চেয়ে কম বাংলাদেশ থেকে পায়। শ্রম খরচের ফ্যাক্টর ছাড়াও,ভালো মানের তুলার সুতা ব্যবহার করা হয়। ফলে এর থেকে উৎপাদিত কাপড় এর মানও ভালো হয়(প্রধানত নিট পোশাকের জন্য)।তাদের মতে, যে পোশাকে ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ লিখা থাকে সেগুলো অন্যান্য অনেক এশিয়ান সরবরাহকারীর তুলনায় মূল্য অনুযায়ী মানে খুব ভালো। বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি করা পোশাক এ মৌলিক ফ্যাশন আইটেমগুলিতে হালকা পরিবর্তন এসেছে, বিশেষ করে মহামারীর কারণে ভোক্তাদের চাহিদা পরিবর্তিত হয়েছে।
বাংলাদেশের কোভিড-পরবর্তী বিশ্বে মার্কিন ফ্যাশন কোম্পানিগুলোর পোশাক সোর্সিং বেস হিসেবে আরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।মার্কিন ফ্যাশন কোম্পানিগুলো আগামী দুই বছরে বাংলাদেশ থেকে আরো বেশি পরিমাণে সোর্সিং নেওয়ার আগ্রহ বজায় রাখলেও কিন্তু কোম্পানিগুলো দেশে অল্প সংখ্যক বিক্রেতাদের সঙ্গে কাজ করবে। এই উদীয়মান প্রবণতা থেকে ধারণা করা যায় যে, হাজার হাজার বাংলাদেশি পোশাক সরবরাহকারীর মধ্যে প্রতিযোগিতা আরও বেড়ে যাবে। এই প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা কঠিন হবে।
তথ্যসূত্রঃ https://textilefocus.com
Habiba Akter Baly
Ahsanullah University of Science and Technology
Department of Textile Engineering
(Batch-37)
Semester : 3/211:54 PM 9/11/2021