“ওয়াইন” শব্দ টা শুনে অবশ্যই আপনার মনে হলো এটি একপ্রকার অ্যালকোহল। যা সাধারণত গাঁজনকৃত আঙুর, আপেলের রস ইত্যাদি থেকে তৈরি হয়। কি ভুল বললাম? শুধু আপনি কেনও প্রত্যেক টা মানুষ এরই মনে ঠিক এমন ধারনাই আসবে। আচ্ছা আপনি কি কখনো ভেবেছেন যে ওয়াইন এর মতো একটি অ্যালকোহল থেকেও ফেব্রিক তৈরি হতে পারে? এতোকাল তুলা, বাঁশ, দুধ, মাছ,সাপ সব থেকে ফাইবার বানানো শুনেছেন তাই বলে ওয়াইন । হে ওয়াইন থেকপও তৈরি হচ্ছে পোশাক৷
অস্ট্রেলিয়ার বিজ্ঞানী গ্যারি কাস এবং বিশিষ্ট চিত্রশিল্পী ডোনা ফ্রাঙ্কলিন দীর্ঘ ৮ বছর একত্রে যৌথ প্রচেষ্টার মাধ্যমে ফার্মেন্টেশন করা ওয়াইন থেকে পোশাক তৈরিতে সফল হন।
বিজ্ঞান এর কারনে আজ পৃথিবীতে অনেক কিছু সম্ভব হয়েছে৷ ব্যবহার করা হয় আধুনিক সব প্রযুক্তি । ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জিনিস থেকেও তৈরি করা হচ্ছে বিশাল সব জিনিস৷ সবই সম্ভব আধুনিক প্রযুক্তির কারনে৷ যা আমরা পূর্বে কল্পনা করতাম আজ তা আমাদের সামনে ঘটে । টেক্সটাইল শিল্পেও ঠিক তেমনি টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারদের অনেক পরিশ্রম এর ফলে আজ আমরা পেয়েছে অকল্পনীয় সব জিনিস থেকে ফাইবার । উদাহরণ হিসেবে দেওয়া যায়ঃ মাশরুম থেকে ফাইবার, মাছের আশঁ থেকে ফাইবার, বাঁশ ফাইবার, দুধ থেকে ফাইবার , সাপ থেকে ফাইবার ইত্যাদি। এসব কিছুর তালিকায় নতুন করে যুক্ত হলো ওয়াইন বা বিয়ার । পানীয় হিসেবে জনপ্রিয় অনেক আগে থেকেয় বর্তমানে ফেব্রিক হিসেবেও জনপ্রিয়৷
ওয়াইন থেকে ফেব্রিক তৈরি প্রক্রিয়াঃ
ওয়াইন এর মাঝে অ্যাসিটো ব্যাক্টেরিয়া যোগ করে ভ্যাট ডাই এর মাঝে রাখা হয়। ব্যাকটেরিয়া যোগকরা হলে ভ্যাট ডাইয়ের দ্রবণটি ( ওয়াইন) ভিনেগারের মত কিছু একটাতে রূপান্তরিত হয়। যার মধ্যে ওয়াইন বা বিয়ার বিক্রিয়া করে ফেব্রিক তৈরির ঘন দ্রবণে পরিনত হয়। যা থেকে রাসায়নিকভাবে তুলার মত ফেব্রিক তৈরি করা সম্ভব।
ওয়াইন এর ফেব্রিক থেকে পোশাক তৈরিঃ
ওয়াইন থেকে তৈরি ফেব্রিক কোনওভাবে সেলাই করা যায় না। সেলাই করা ছাড়াই সম্পূর্ণ পোশাকটি তৈরি করতে হয়। তাহলে পোশাক নির্দিষ্ট মাপে বানানো হবে কিভাবে৷ সেই কথা চিন্তা করেই মানুষের দেহের আদর্শ মাপ বিশিষ্ট নকল ডামি ব্যাবহার করার চিন্তা করেন বিজ্ঞানীরা। ওয়াইন এর তৈরি ঘন দ্রবণটিকে মেল্ট স্পিনিং করার পরিবর্তন এ ডামির গায়ে বিছিয়ে দেয়া হয়। পরবর্তীতে তাকে শুকানোর ব্যাবস্থা করা হয়। শুকানোর পর সেটি অনেকটা টিস্যু পেপারের মতো পাতলা হয়ে উঠে।
ওয়াইন এর পোশাক ব্যবহারে সতর্কতাঃ
ফেব্রিক থেকে পোশাক তৈরি করা হলে তা সাধারণ টিস্যু পেপারের মতো হালকা হয়। তাই ব্যাবহারের সময় ফেব্রিকটিকে ভিজিয়ে নিতে হয় । হলে ছিড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
Reference:
Wikipedia,
textileengineers.org.
Written By:
Fouzia Jahan Mita
NITER 10th batch.
Department of Textile Engineering
Campus Ambassador, TES.