Tuesday, December 3, 2024
Magazine
More
    HomeFiberকচুরিপানা; অবহেলা যখন সম্পদ!

    কচুরিপানা; অবহেলা যখন সম্পদ!

    কচুরিপানা এক বিস্ময়কর জলজ উদ্ভিদ।এর ইংরেজি নাম-water hyacinth এবং বৈজ্ঞানিক নাম-Eichhornia crassipes.ভাসমান বিশ্বয় সৃষ্টিকারী ও ফুলের সৌন্দর্যের দ্বারা মানুষকে যেমন আকৃষ্ট করে আবার মানুষ ও প্রকৃতির অনেক ক্ষতি করতেও পিছপা হয় না।চলুন জেনে নেয়া যাক কচুরিপানার কিছু তথ্য ও টেক্সটাইল শিল্পে এর ব্যবহার।

     সেই আদিভূমি ব্রাজিল থেকে যাত্রা শুরু করে আজ বাংলাদেশসহ বিশ্বের অনেক অনেক দেশে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে এই কচুরিপানা।একসাথে একতাবদ্ধ হলে যেন চোখ জুড়িয়ে যায়।ফুলগুলো সুন্দর হওয়ায় বিভিন্ন দেশে কিছুটা সম্মানিত হওয়ার আশায় একে পাঠানো হলেও সম্মান পাওয়া হয়নি।বরং পাওয়া হয়েছিল বঞ্চনা।লোকমুখে প্রচার হয় দ্রুত বর্ধনশীল আগ্রাসী প্রজাতির উদ্ভিদ হিসেবে।সেই সাথে মিলেছে নদী-খাল-বিল ইত্যাদি ভরাট করে যাতায়াতে বাঁধা দেওয়া, পানির নিচে পঁচে যাওয়া বিষাক্ত গ্যাসের আবির্ভাব ও পানিতে অক্সিজেনের অভাব সৃষ্টি করা ইত্যাদি বদনাম।তাছাড়াও সাপ ও মশা-মাছির উপদ্রব তো আছেই।তো এত সমালোচনা মূলক কথা যেখানে থাকে সেখানে ভালো কিছু আলোচনার বিষয়ও থাকে।এগুলো পোশাক ও হোম টেক্সটাইল গুলোতে প্রতিনিয়ত ব্যবহৃত হচ্ছে প্রতিনিয়ত।সেগুলো নিয়ে একটু আলোচনা করা যাক।

    কারুশিল্পে সুতা তৈরিতেঃ

    শিল্পের জন্য মোচড় যুক্ত বা বিভিন্ন বেধের সুতার প্রয়োজন পড়ে।এক্ষেত্রে কচুরিপানার তৈরি সুতা একটি ব্যবহারযোগ্য জিনিস।  এটি দিয়ে বিভিন্ন পুরুত্বের সুতা তৈরি হচ্ছে।তবে বেশি মোটা দড়ি তৈরি করতে চাইলে তার তৈরীর প্রক্রিয়াটি পাটের দড়ি তৈরীর প্রক্রিয়ার মতই করতে হয়।প্রক্রিয়াটি শেষ হওয়ার পর দড়িটিকে পচে যাওয়ার হাত থেকে বাঁচাতে সোডিয়াম মেটাবাইসালফাইট ব্যবহার করা হয়।

    আমাদের দেশে দড়িটি অনেকসময় স্থানীয় আসবাবপত্র প্রস্তুতকারীদের দ্বারা ব্যবহৃত হয় যেখানে তারা এটাকে বেতের ফ্রেমের চারপাশে পেঁচিয়ে বাতাসে রেখে দিয়ে বিভিন্ন পণ্য তৈরি করে।

    কচুরিপানা ফাইবার প্রক্রিয়াকরণ এবং পরবর্তীতে হস্তশিল্প উৎপাদন ও বিপননের ধাপ সমূহ উল্লেখিত হলো।

    হোম টেক্সটাইলে কিছু ব্যবহারঃ

    বাড়ির কাপড় তৈরি ও পোশাক এর কাঁচামাল হিসেবে প্রচুর ব্যবহৃত হয় এ কচুরিপানা।কচুরিপানা ফাইবারগুলো পর্দা,গৃহস্থালি সামগ্রী,ন্যাপকিন,টেবিল রানার্স,বিছানা চাঁদর ও বাড়িতে থাকা অন্যান্য অনেক জিনিসে ব্যবহৃত হয়।

    ফ্যাশনে কিছু ব্যবহারঃ

    ফ্যাশনে কিছু কিছু ক্ষেত্রে এই কচুরিপানা ফাইবার ব্যবহার হয়ে থাকে।সাধারণত ককটেল,নিত্য-নৈমিত্তিক পরিধান ও গাউনগুলোর কচুরিপানা থেকে তৈরি করা যেতে পারে।২০০৯ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর এটিকে আত্মপ্রকাশ করানো হয়েছিল যেখানে ফিলিপাইনে দুইজন ফ্যাশন ডিজাইনার অ্যালেক্স বুয়েনা ও রোমেল ডেল ভ্যালি এটি প্রদর্শন করতে সহায়তা করেছিলেন।সেখানে শো এর ডিজাইনারা বহি লেক থেকে কেটে আনা ১৪২ গজ তাঁত শুকনো কচুরিপানা ব্যবহার করেছিলেন।এভাবে এটি আরোও বিভিন্ন ভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

    পরিশেষে বলা যায় যে,কচুরিপানা প্রকৃতি ও মানুষের জীবনে কিছু নেতিবাচক প্রভাব ফেললেও এটিকে অনেক অসাধারণ কিছু কাজেও ব্যবহার করা যায়।তাই এর ব্যবহার যত বাড়বে দেশ ও অর্থনীতি তত উন্নত হবে।

    Information source: 
    www.shomoytv.com 
    ampproject.com 
    textiletoday.com.bd

    Writer Information:
    Md.Shahriar Sakib
    Department of Textile Engineering 
    National Institute of Textile Engineering and Research(NITER)

    RELATED ARTICLES

    LEAVE A REPLY

    Please enter your comment!
    Please enter your name here

    Related News

    - Advertisment -

    Most Viewed