বাংলাদেশের পোশাকশিল্পে এককভাবে চীন সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার।বর্তমানে চীন থেকে পণ্য আমদানি ব্যাহত হওয়ায় সমূহ ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে এটি।ফলে দেশের পোশাকশিল্পে তীব্র ক্ষয়ক্ষতির আশংকা রয়েছে।
বাংলাদেশে পর্যাপ্ত ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ ইন্ডাস্ট্রি গড়ে না ওঠার ফলে বিভিন্ন কাঁচামালের জন্য অন্যান্য দেশের উপর নির্ভরশীল হতে হয়।বিশেষ করে গার্মেন্টস শিল্পের কাঁচামাল সরবরাহের ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রেখে আসছে চীন। ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের মোট বানিজ্যের পরিমান ছিলো প্রায় ১ হাজার ৪৭৯ কোটি মার্কিন ডলার। তার মধ্যে সুতা,কাপড় ও বিভিন্ন অ্যাক্সেসরিজ রয়েছে ৫০২ কোটি ডলারের।সব মিলিয়ে পোশাক খাতের ৪৬ ভাগ কাঁচামাল আসে চীন থেকে। বর্তমানে রাজধানী ঢাকা এবং বন্দরনগরী চট্টগ্রামে পুরোদমে চালু রয়েছে প্রায় ৫ হাজার গার্মেন্টস কারখানা।
চীন থেকে আনা কাঁচামাল দিয়ে আন্ডারগার্মেন্টস, টি শার্ট, প্যান্ট, জার্সি, ভারি জ্যাকেটসহ প্রায় একশো রকমের পণ্য তৈরি করে বিদেশে রফতানি করে বাংলাদেশ। চীনে করোনা ভাইরাস আক্রান্ত হওয়ার পর তৈরি পোশাক শিল্পের সাথে সম্পৃক্ত বাংলাদেশের মতো প্রতিটি দেশকেই সঙ্কটে পড়তে হয়েছে। আবার বিকল্প দেশেরও সন্ধান মিলছে না।করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারনে চীন এসব কাঁচামাল সরবরাহ করতে পারছে না। সরবরাহ কমে যাওয়ায় কাঁচামালের দাম বাড়ছে। ফলে সেগুলো উচ্চ মূল্যে ক্রয় করতে হচ্ছে আমাদের। যার কারণে উৎপাদন খরচ ও বেড়ে যাচ্ছে। এছাড়া কাঁচামাল সংকটে লিড টাইমের মধ্যে প্রোডাক্ট ডেলিভারি দিতে পারছে না কারখানাগুলো।
এখন আমরা চাইলেও রাতারাতি ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ ইন্ডাস্ট্রি গড়ে তুলতে পারবো না। এটি বাংলাদেশের পোশাক কারখানাগুলোতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। বাংলাদেশের মোট রপ্তানি বানিজ্যের ৮০ ভাগই আসে পোশাকশিল্প থেকে।এমন অবস্থা চলতে থাকলে গোটা রপ্তানি বানিজ্যই মুখ থুবড়ে পড়বে। তাই এর জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার। অন্য দেশের উপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে আনা উচিত আমাদের। কাঁচামালগুলো নিজেরা তৈরি তৈরি করতে পারলে এ সমস্যা অনেকটাই কমে আসবে।
Writer:
Tanvir Ahamed Fahad
Bangladesh University of Textiles (BUTEX)