Friday, October 18, 2024
Friday, October 18, 2024
Magazine
More
    HomeDyeing"কাদা মাটি দিয়ে ডাইং-প্রিন্টিং"

    “কাদা মাটি দিয়ে ডাইং-প্রিন্টিং”

    🔰 সমগ্ৰ কাপড়কে রাসায়নিক পদার্থ দিয়ে রং করে কাপড়কে আকর্ষণীয় করা হয় ডাইং ও প্রিন্টিং এর মাধ্যমে।এই রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহারের পরিবর্তে কাদা মাটি ব্যবহার করলে কেমন হয় বিষয়টা সেটা আলোচ্য বিষয়।

    🔰 এটি “কাদা কাপড়” বা “বাকলানফিনি” নামে পরিচিত। কাদা কাপড় মালিয়ান গোষ্ঠীর জাতিগত পরিচয় বহন করে।’বাকলানফিনি’শব্দটি এসেছে মালি ভাষা থেকে ।যা তিনটি অংশে বিভক্ত ‘বাক’ অর্থ-কাদা ,লান অথ-সহ বা মাধ্যমে ও ফিনি অথ-কাপড় ।যা সাধারণভাবে “কাদা কাপড়” হিসেবে পরিচিত।

    🔰 আন্তর্জাতিক ইতিহাসে বোগোলানফিনি আনার জন্য বেশিরভাগ ইতিহাসবিদ ফ্যাশন ডিজাইনার চেষ্ঠা করেছেন।ক্রিস সেদৌ (1949-1994) নানের একজন এই পদ্ধতি আবিষ্কার করেন। ক্রিসের মা একজন সূচিকর্মী ছিলেন তাই ছোটবেলা থেকেই তিনি টেক্সটাইল, পোশাকের বাণিজ্য এবং ফ্যাশন ম্যাগাজিনগুলি ঘিরে ছিলেন। তিনি ষোল বছর বয়সে মালির টেইলার্স শপগুলিতে অভিনেত্রী হয়ে ফ্যাশনে তাঁর শুরু করেছিলেন, এবং বয়স যখন তার বয়স ছাব্বিশ বছর নাগাদ তিনি ইতিমধ্যে বোগোলানফিনি কাপড় ব্যবহার করে প্রথম সংগ্রহটি ডিজাইন করেছিলেন। তিনি পুরানো নিদর্শনগুলি সহজ করেছিলেন (অনুভূতিটি যে ঐতিহ্যবাহী নিদর্শনগুলি পাশ্চাত্য পোশাকগুলির জন্য খুব জটিল ছিল) এবং কাপড়টি তার বাউটের কাউচার মিনি স্কার্ট, মোটরসাইকেলের জ্যাকেট এবং বেল বট প্যান্টে ব্যবহার করেছিলেন। এটি রানওয়েতে দারুণ হিট হয়েছিল।

    🔰 জেবি ডোনের মতে ডাইং একটি অদ্ভুত ও জঘন্য কৌশল ।কিন্তু শিল্পীরা নিপুণ দক্ষতায় সাথে কাজটি সহজ করে তুলেছে। চলুন তাহলে জেনে আসা যাক এই প্রাচীন ঐতিহাসিক ডাইং-প্রন্টিং পদ্ধতিটি:

    ⚫ প্রথমে কাপড়কে এনগ্লালাম গাছের পাতা ও কষ সলিউশনে মাঝে ডুবিয়ে রাখা হয়। এতে কাপড়টি হলুদ বর্ণ ধারণ করে। কাপড়টি সূর্যের আলোতে শুকানো হয়।

    ⚫ কাপড়টিতে ধাতব বা কাঠের টুকরা দিয়ে “কাঁচা কাদা” বা “ফারমেন্টেড কাদা “দিয়ে প্রিন্ট করা হয় ।এই কাদা নদী তীর , পূর্ববর্তী মৌসুমে পুকুর থেকে বা এক বছর ধরে মাটিকে কোন পচন যোগ্য স্থানে রেখে তৈরি বা সংগ্ৰহ করা হয়।।এতে রঙিন কাপড় ও কাদা মাটির সাথে একটি রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটে কাপড় ফলে রোদে শুকানোর পর গাঢ় কালো বা ধূসর রঙ ধারণ করে ।কাপড়টি ধৌত করা হয় ।

    ⚫ এই প্রক্রিয়াটি অনেক বার পুনরাবৃত্তি করে ধৌত করার মাধ্যমে কাপড়ে কাদা আঁকানো স্থানটি গাঢ় হয়ে যায়। হলুদ এলাকা গুলো ব্লিচিং জাতীয় পদার্থ দিয়ে ডিজাইন করে হলুদ থেকে বাদামি রঙ ধারণ করে। এভাবে কিছুদিন শুকানোর পর আবার ব্লিচিং করা হয় ।এই প্রক্রিয়াটি অনেক পুনরাবৃত্তি করার পর শিল্পীর মনে মতো রং হয়ে উঠে।

    🔰 মালিতে আধুনিক ব্যবহার, কাপড়টি এখন জাতীয় বা জাতিগত পরিচয়ের বহিঃপ্রকাশ বা ফ্যাশন শৈলীরূপে মালিয়ান সিনেমাতে এবং মালিয়ান সংগীতশিল্পীদের দ্বারা বিশিষ্টভাবে সমস্ত নৃগোষ্ঠীর লোকেরা পরে থাকে। বিশেষত তরুণদের মধ্যে জনপ্রিয়, বাগ্লানফিনিকে বিস্তৃত পোশাক, ওয়েস্টার্ন মিনিস্কার্ট এবং জ্যাকেট, পাশাপাশি প্রথাগত প্রবাহিত পোশাক (বুবস) তৈরি করা হয়। মালয়েশিয়ান ফ্যাশন ডিজাইনার ক্রিস সিডৌকে আন্তর্জাতিক ফ্যাশনে ব্যাগলানফিনি জনপ্রিয় করার কৃতিত্ব দেওয়া হয়েছিল। বিশেষত যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাগলানফিনি জনপ্রিয় মালিয়ান রফতানিতে পরিণত হয়েছে। সেখানে এটি কাদামাটির কাপড় হিসাবে মালিয়ান সংস্কৃতির প্রতীক হিসাবে বা সাধারণভাবে জাতিগত আলংকারিক কাপড় হিসাবে বাজারজাত করা হয়।

    🔰 বাংলাদেশ কাদা কাপড় টেক্সটাইল শিল্পে একটি উজ্জ্বল সম্ভাবনা দিক দেখা দিতে পারে।কাদা কাপড় এখন শুধু মালিয়ানদের ঐতিহ্য নয়। এটি তরুনদের ফ্যাশন এর মধ্যে জনপ্রিয় এবং আন্তর্জাতিক বাজারে এর অনেক চাহিদা রয়েছে।

    🔰 বাকলানফিনি এখন শুধু কাপড় এ সীমাবদ্ধ নয় এসব ডিজাইন দেখা যায় কফি মগ, পদা, তোয়ালে, শীট, বইয়ের কাভার ও কাগজ মোড়ক গুলোতে।

    তথ্যসূত্র: Wikipedia,Bogolanfini,Lumenlearning,Designsponge

    ✍ লেখক:

    মোবারক হোসেন জনি
    ওয়েট প্রসেস ইঞ্জিনিয়ারিং (২য় ব্যাচ)
    ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, পীরগঞ্জ, রংপুর।

    RELATED ARTICLES

    LEAVE A REPLY

    Please enter your comment!
    Please enter your name here

    Related News

    - Advertisment -

    Most Viewed