আনার বা বেদানার সাথে আমরা সবাই পরিচিত। এটি এমন একটি পুষ্টিকর ফল যে, আমাদের আত্মীয় স্বজন বা পরিচিত কেউ অসুস্থ হলে তাদের দেখতে যাওয়ার সময় আমাদের সঙ্গী হিসেবে আনার তো থাকবেই। আনারের গুনাগুণ বলে শেষ করা যাবে না। আনার রক্তশূন্যতা সহ আরো অনেক শারীরিক অভাব দূর করতে অনেক ভূমিকা রাখে।
যাইহোক এখন আনার এসেছে আমাদের কাপড় রাঙাতে। আনার গাছের শিকড় থেকে শুরু করে পাতা, কান্ড,ফল, ফলের খোসা সবকিছুই কাজে লাগানো যায় কাপড়কে রং করার প্রক্রিয়ায়। আনার গাছের প্রতিটি অংশেই প্রচুর পরিমাণে টেনিন নামক একটি উপাদান থাকে যা রং করার প্রক্রিয়ায় অনেক সাহায্য করে। এই টেনিন চামড়ার রং স্থায়ী করে, রঙের উজ্জ্বলতা বজায় রাখে, এছাড়াও ওষুধী কাজে ব্যবহৃত হয়। আনারের পাতা ভিনেগারের সাথে মিশিয়ে কালি তৈরি করা যায়। আনার ফলের ভিতরের অংশ দিয়ে কাপড় রং করলে হালকা লাল রং থেকে কমলা রঙের কাপড় পাওয়া যায়। আর যদি আনার ফলের খোসা দিয়ে কাপড় রং করা হয় তবে সোনালী, সোনালী হলুদ এবং হলুদ রঙের কাপড় পাওয়া যায়। এছাড়াও আনার গাছের কান্ড আর শিকড় দিয়েও আরো অন্য রঙে রাঙানো যায় কাপড়কে।
আনার দিয়ে কাপড় রং করতে হলে আগে কাপড়টি desizing, scouring এসব প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পরিষ্কার করে নিতে হবে। আনারের ভিতরের অংশ এবং খোসা আলাদা করে ভিন্ন ভিন্ন পাত্রে রেখে তাতে পানি দিয়ে তাপে দিতে হবে ১৫ মিনিট। তারপর প্রস্তুতকৃত কাপড় দুইটি পাত্রে নিয়ে তাপে ফুটাতে হবে ৪০ মিনিট ধরে। ৪০ মিনিট পরে তাপ বন্ধ করে ঐ অবস্থায় সারারাত কাপড়গুলো ঐ পাত্রে ভিজিয়ে রাখতে হবে। সকালে পাত্রের পানি ফেলে দিয়ে কাপড় ধুয়ে আবার শুকাতে হবে। কাপড় শুকানোর পর দেখা যাবে যে আনারের খোসা দিয়ে রং করা কাপড়টির রং সোনালী হলুদ রঙের হয়েছে এবং আনারের ভিতরের অংশ দিয়ে রং করা কাপড়টির রং হালকা লাল রঙের হয়েছে।
এই প্রক্রিয়ায় কাপড় রং করলে বাসায় বসেই করা যায় বাড়তি কিছু ছাড়াই। এভাবে আমরা কাপড় অনেক ধরনের নতুনত্ব আনতে পারি।
Afsana Ferdous
AUST 34th batch