“কাপড়” তিন অক্ষরের সহজ একটি শব্দ, কিন্তু তার ব্যাপ্তি অনেক। পোশাক এখন শুধু লজ্জা নিবারক নয়, এটি এখন ব্যক্তির ভাবমূর্তি, আভিজাত্য, ব্যক্তিত্বের পরিচায়ক। ব্যক্তি পোশাক পরিবর্তন করলে নতুন ব্যক্তিত্বের পরিচয় পাওয়া যায়। সুতরাং পোশাকের গুরুত্ব ভাষায় ব্যক্ত করা সম্ভব নয়। কেমন হয় যদি সুন্দরীর হাতে তলোয়ার দিয়ে দেয়া হয়। বুঝলেন না তো? বুঝিয়ে বলছি।
কাপড় যখন ভাইরাস বিরোধী হয় তখন সৌন্দর্যবর্ধক কাপড় পরিধান করেও আমরা লড়াই করতে পারবো মরণঘাতী ভাইরাসের বিরুদ্ধে! বর্তমানে করোনা ভাইরাসের তান্ডবের কথা তো সবাই জানি। এই ভাইরাসের মৃত্যুর মিছিল থামাতে প্রতিষেধক আবিষ্কারে হিমশিম খাচ্ছে পুরো বিশ্ব। এই অবস্থায় আমাদের জন্য অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল কাপড় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ফাইবার বর্তমানে বহুল আলোচিত বিষয়ের মধ্য একটি। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এর ব্যবহার রয়েছে। অনুজীবের বিরুদ্ধে ভিট্টোতে এর কার্যকারিতা প্রমাণিত হয়েছে। এই ফাইবারে মূলত এক্টিভ সিলভারের উপস্থিতি সংক্রমণে বাধা প্রদান করে। তবে এই সিলভার ফাইবার বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহার হয়ে থাকে। নন-ওভেন, ফেব্রিক, সুতা, চিকিৎসা ক্ষেত্রে ব্যান্ডেজ, ফিল্টার উৎপাদনে এর ব্যবহার তো উপেক্ষা করা মতো নয়। এ প্রেক্ষাপটে যেন পিছিয়ে নেই বাংলাদেশও। দেশের অন্যতম শীর্ষ স্থানীয় প্রতিষ্ঠান “জাবের এন্ড জুবায়ের ফ্রেবিক লিমিটেড” বর্তমানে এ কাপড় তৈরি করেছে। সংশ্লিষ্টরা বলেছেন যে, এ কাপড় শুধু করোনা ভাইরাস নয়, যে কোনো ভাইরাস প্রতিহত করতে পারে। যদি কোনো ভাইরাস এই কাপড়ের সংস্পর্শে আসে তাহলে ২-৩ মিনিটের মধ্যে ৯৯.৯% প্রতিহত হয়ে যায়। এ বিষয়ে “জাবের এন্ড জুবায়ের” ফেব্রিক এর ব্র্যান্ড এন্ড কমিউনিকেশন ম্যানেজার থেকে জানা যায়,ভাইরাস প্রতিরোধক ফেব্রিক হিসেবে এই কাপড় তৈরি করা হয়েছে এবং এই কাপড় তৈরির ফলে পরিবেশে কোনো ক্ষতিকর প্রতিক্রিয়া হবে না। পরবর্তীতে এই কাপড় আন্তর্জাতিক মান সনদ স্বীকৃতি পেয়েছে। আইএসও ১৮১৮৪ এর অধীনে পরীক্ষা করা হয়,কাপড় তৈরিতে যেসব উপাদান ব্যবহার করা হয়েছে তা যুক্তরাষ্টের বিষাক্ত পদার্থ নিয়ন্ত্রণ আইন পরিবেশগত সুরক্ষা সংস্থায় নিবন্ধিত। ভাইরাস রোধে এই কাপড় প্রায় শতভাগ নিরাপত্তা দিবে।
করোনা ব্লক নামের যে কাপড়টি রয়েছে সেটা দ্বারা মাস্ক, পিপিইর মতো ব্যক্তিগত সুরক্ষার পাশাপাশি জ্যাকেট, প্যান্ট, শার্ট সহ সকল প্রকার পোশাক তৈরি সম্ভব, এই বলে দাবি করেছেন প্রতিষ্ঠানটি। জাবের এন্ড জুবায়ের কাপড়টি তৈরী হয়েছে টঙ্গীর একটি কারখানায়। কাপড়টি সাধারণত অন্য কাপড় থেকে দাম বেশি হবে, কাপড়টি কার্যকর থাকবে ২০-৩০বার ধৌত করা পর্যন্ত। বিশ্ববাজারে এই কাপড় করোনার বিরুদ্ধে লড়াই এ বিশেষ ভূমিকা রাখবে। সেই সাথে আমাদের গার্মেন্টস শিল্প এগিয়ে যাবে এক আরও ধাপ।
তথ্যসূত্র: উইকিপিডিয়া, প্রথম আলো, অন্যান্য
লেখিকা পরিচিতিঃ
আনিকা ইবনাত
নাজমী আহমেদ ঐশী
সুমাইয়া সুলতানা জান্নাত
ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া টেক্সটাইল ইন্জিনিয়ারিং কলেজ, রংপুর