আমরা বাঙ্গালিরা একটু ভোজন রসিক, এর পাশাপাশি শপিং করতেও কম যাই না । সেটা ঈদ,পূজা কিংবা পহেলা বৈশাখ যাই হোক না কেন। শপিং এর কথা মনে হলেই বসুন্ধরা কিংবা যমুনা ফিউচার পার্ক এসবের নাম উঠে আসে ।তবে আমার ক্ষেত্রে ODS [Oposite of Dhaka college] প্রযোজ্য। এবার আসি আসল কথায়, শপিং করতে গেলে আমরা সব সময় চাই আমাদের প্রোডাক্ট টা যেন বিদেশি কোন ব্র্যান্ডের হয় । তা না হলে তো বন্ধুদের সামনে পোশাক দেখানো যাবে না।
বাংলাদেশের মার্কেটে জনপ্রিয় ১০ টি পোশাক ব্র্যান্ডের তালিকায় রয়েছে ১. আড়ং,২. ক্যাটস আই, ৩. রিচম্যান , ৪. ইয়েলো , ৫. এক্সটেসি , ৬. রঙ , ৭. কে ক্রাফট , ৮. দর্জি বাড়ি , ৯. অঞ্জন’স এবং ১০. বিবিয়ানা । কিন্তু বাংলাদেশের মানুষের কাছে জনপ্রিয় পোশাক ব্র্যান্ডের তালিকায় রয়েছে NIKE, GUCCI , PRADA ,ADIDAS এর মতো বিশ্ব বিখ্যাত সব ব্র্যান্ড।
গত অর্থবছরে দেশের পোশাক কারখানাগুলো থেকে প্রায় ৩৪ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি করা হয়েছে। কিন্তু দুঃখের এক বিষয় হলো বাংলাদেশের নিজস্ব কোন পোশাক ব্র্যান্ড বিশ্বব্যাপী কোন দেশে জনপ্রিয়তা লাভ করতে পারে নি। এর কারণ আমার জানা নেই। তবে এটা বলতে পারি যে কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করলে সম্ভবত বাংলাদেশের পোশাক ব্র্যান্ড একদিন বাপব্যাপী জনপ্রিয়তা লাভ করবে।
প্রথমত দেশের ব্র্যান্ড গুলোকে নিজ উদ্যোগে বিভিন্ন দেশে শাখা বিস্তৃত করতে হবে। ক্রেতারদের আকৃষ্ট করার জন্য বিভিন্ন সময় বিভিন্ন অফার যেমন ঃ BUY 1 GET 1 , UPTO 1-100% দিতে হবে।এ রকম বিভিন্ন অফারে প্রতিষ্টানে লাভ বেশি না হলেও প্রচারটা অনেক হয়ে যাবে। তাছাড়া পোশাকের গুনাগুন যেনো বিশ্বমানের হয় সেদিকে বেশি নজর দিতে হবে। ব্র্যান্ডের পোশাক পরিধানের একটা বড় অংশই তরুণ তরুণী। এদের রুচি আর পছন্দ তাই একেবারেই আলাদা। ফ্যাশনসচেতনও যথেষ্ট পরিমাণে। তাই শুধু অনুষ্ঠান বা বিশেষ উৎসবই নয়, প্রতিদিনের পরিধেয় নিয়েও তারা যথেষ্ট সতর্ক। এরাই বলতে গেলে সব ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রির মূল ক্রেতা। এ কারণে এই তরুণদের কথা মাথায় রেখেই ফ্যাশন ব্র্যান্ড সাজাতে হবে বাংলাদেশের ব্র্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি গুলোকে।
তাছাড়া অনেক সময় দেখা যায় আমাদের দেশের বিভিন্ন ব্র্যান্ডের শোরুমের কর্মচারী, ম্যানেজার এমনকি মালিক পক্ষ ক্রেতার সাথে খারাপ আচরণ করে থাকে।ভুলেও এসব আচরণ বিদেশের মাটিতে ক্রেতাদের সাথে করা যাবে না, সেটা একবার দেশের কথা চিন্তা করে হলেও। বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের পণ্য কিংবা মেইড ইন বাংলাদেশ লেখা টা দেখলেই বুকটা গর্বে ভরে উঠে। যেমনটা হয়েছিল ২০১৮ সালের ফুটবল বিশ্বকাপের সময় , কারণ ইংল্যান্ড টিমের জার্সিটা বানানো হয়েছিলো বাংলাদেশের সাভারের কোন এক কারখানায়।তবে একটা কথা বলতেই হয় ইংল্যান্ড ফুটবল ফেডারেশনের সাথে ২০১৬ সালে ৪০০ মিলিয়ন ইউরো চুক্তি করে NIKE ।
তারা বাংলাদেশ থেকে জার্সি বানিয়ে নিজেদের স্বার্থ হাসিল করেছিলো ঠিকই , কিন্তু লোক চক্ষুর আড়ালে থেকে গিয়েছলো বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় এই খাত। তাই এখনই সময় বিশ্ববাজারে নিজেদের অস্তিত্ব এবং অবস্থান তুলে ধরা।
Pranto Kumar Dev
Department Of Textile Engineering ,Batch-39
Ahsanullah University of Science and Technology