কথিত আছে শাড়ি মানেই নারী।
শাড়ীতে নারীকে সবচেয়ে সুন্দর লাগে।পৃথিবীর আর কোনো পোশাকে হয়ত এত বেশি সুন্দর আর মায়াবী লাগে না।
হাট গ্রামবাংলার প্রাচীন জনপদের এক অংশ।যা প্রাচীন কাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত চলছে। বাংলাদেশর ঐতিহ্য বলা হয় হাটকে। মানুষের প্রয়োজনে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন স্থানে স্থান কাল পাত্র ভেদে গেড়ে উঠে হাট। যা ঐ সময়ের ঐতিহ্য স্বংকৃতি কে লালন করে। আর সব হাটের মধ্যে শাড়ির হাট অন্যতম।
প্রাচীনকাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত শাড়ি মানুষের সব চেয়ে সুন্দর আর আকর্ণীষয় পোশাক। যা রুচিশীল আর মানসম্মত।
বাংলাদেশ হাট গুলোর মধ্যে কুমারখালী অন্যতম। তাঁতশিল্প কে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছিল এই হাট।। বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম কাপড়ের হাট কুমারখালী শহর দেশের অর্থনীতিতে একটি বিশিষ্ট নাম।
কুমারখালীর অর্থনীতির প্রধান চালিকা শক্তিই হচ্ছে বয়নশিল্প। যা একটি ছোট জনপদকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে। এটি মূলত তাঁত শিল্পকে কেন্দ্র করে গগে ওঠে। কিন্তু সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে তাঁত শিল্প শুধু না তার সাথে যোগ হয় সব রকমের শাড়ি কাপড়। বেনারসি, জামদানী, বালুচুরি,টাঙ্গাইল,তসর,স্লিক, সুতি,মুগা, মটকা ইত্যাদি শাড়ির বাহার। মানুষের চাহিদা অনুযায়ী সব রকমের শাড়ি এখানে পাওয়া যায়।
দেড় শ বছর আগে কুমারখালী পৌর এলাকায় গড়ে ওঠে এই কাপড়ের হাট।হাটের ৭৫ শতাংশ মানুষই কুমারখালী ও খোকসা এলাকার। স্থায়ানীয় মানুষই এখানে বেশি। তবে অনেক দূর দূরান্ত থেকে ও লোক আসে এখানে ব্যবসা করতে। তাছাড়া ক্রেতে ও আসে দূর দূরান্ত থেকে। তাদের ভিড়ও যথেষ্ট পরিমান বেশি। নিজেদের পছন্দ মতো এবং চাহিদা অনুযায়ী তারা কেনা কাটা করতে পারে। আবার পাবনা ও সিরাজগঞ্জ থেকেও আসেন বিক্রেতারা।
প্রতি বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে শনিবার মধ্যরাত পর্যন্ত চলে। প্রতি হাটে কমপক্ষে চার কোটি টাকার ব্যবসা হয়। আর ইজারা থেকে প্রতিবছর পৌরসভা পায় প্রায় পৌনে আট লাখ টাকা। পণ্য পরিবহনের ব্যবস্থা আশানুরূপ নয়, পাশাপাশি নেই আবাসিক হোটেল। যার কারনে দিন দিন বিক্রি দিন দিন কমে যাচ্ছে। পূর্বে যাতায়াত ব্যবস্থা ততটা উন্নত ছিল না। মানুষ বজরা,বড় নৌকা,ছোট নৌকা করে আসত ব্যবসা করার জন্য। হাজার ছিপের পাল তোলা নৌকা।আর সেই নৌকায় তোলা হতো হাড়গিলে পাখির পালক যার নামCOMMORCOLLY FEATHER. সুতী কাপড়, তুলা রেশম, নীল, পাট, শাড়ি, তসরের চাদর। তাছাড়া নানা রঙের লুঙ্গী, ফতুয়া,বাচ্চাদের জামা।ছেলে থেকে বুড়ো সবার জন্যই হাটে থেকে বিশেষ আয়োজন। পৌর শহর কুমারখালী বস্ত্র ব্যবসার জন্য বিশিষ্ট স্থানের অধিকারী। কুমারখালীর বিছানার চাদর ও শীতল চাদর ক্রেতাদের মন হরণ করে অতি সহজে।
নবাবী আমল শেষে শুরু হয় কোম্পানীর আমল। ব্যবসা বাণিজ্যের সুবিধার জন্য কুমারখালী নগরীতে কোম্পানী পাঠালেন কোম্পানির লোক COMMERCIAL RESIDENT, সেই রেসিডেন্ট কুমারখালী শহরে বাস করতেন। আজকের কুমারখালী থানার পাশে ছিল তার দ্বিতল ভবন। নাম শীতলকোঠা। ইষ্টইন্ডিয়া কোম্পানী ঢাকা থেকে পদ্মা নদীর পথে মালামাল চালান দিত। সেই মালা মাল পদ্মা হয়ে কালী গঙ্গা, কুমার, মাথা ভাঙ্গা নদী দিয়ে কলকাতায় পাঠাতো। আসাম থেকে মূল্যবান কাঠ ও যেত ঐ পথে। কোম্পানী আমল শুরুর প্রথম থেকে এখানে ছিল তাঁতের মিল। সেই মিল চলতো এখানকার সুতায়। স্থানীয় তাঁতীরা সেই তাঁতের মিল চালাতো। বাটিকামারা গ্রামে সেই তাঁতীদের আবাস।স্থানীয় এখানকার কাপড় ও মসলিন কাপড়ের মত সূক্ষ্ম ছিল। মারোয়ারী ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে সাহেব ব্যবসায়ীর দল। শুরু হলো আড়তের ব্যবসা। কোম্পানীর রেসিডেন্ট সাহেব উইলিয়াম কুমারখালী শহরে দৈনিক বাজার বসালেন।এভাবেই এই হাটের প্রতিষ্ঠা হয়।
স্থানীয় লোক জনের আগ্রহের জন্য মূলত হাট প্রতিষ্ঠা করা হয়।
Nafiza Nizami
Department of Textile Engineering
BGMEA University of Fashion & Technology( BUFT)