কৃত্রিম টার্ফ প্রাকৃতিক ঘাসের মতো দেখতে কিন্তু সিন্থেটিক ফাইবার দিয়ে তৈরি একধরনের ন্যানো-টিউব।এটি ক্রীড়া (বিশেষত হকি এবং সকার) এবং বর্তমানে ফুটবল,ক্রিকেট খেলার স্টেডিয়ামের দুর্দান্ত পৃষ্ঠ তৈরি করার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে।এটি প্রায়শই বাণিজ্যিক অ্যাপ্লিকেশনগুলিতেও ব্যবহৃত হচ্ছে।আসলে কৃত্রিম টার্ফ খুবই যুগোপযোগী একটি উপকরণ যা সত্যিই ঝামেলা মুক্ত যেমন:রক্ষণাবেক্ষন, সেচ বা ছাঁটাইয়ের প্রয়োজন হয় না।
⚜কৃত্রিম টার্ফের বৈশিষ্ট্যঃ
কৃত্রিম টার্ফ কাঠামোতে বিভিন্ন স্তর রয়েছে:-
⚫পাইল ফাইবারঃ
টিউবের মতো ঘাসটি নরম এবং অনেকটা আরামদায়ক হয়। কৃত্রিম ঘাসটি পলিমাইড নাইলন / নাইলন 6ঃ6 বা পিপি / পিই দ্বারা প্রস্তুত করা হয়, যা অনেকটা মনোফিলামেন্ট ফিতার মতো। পাইল ফাইবারকে এমনভাবে তৈরি করা হয় যেন তা বলের রোলিং এবং বাউন্স সুষ্ঠুভাবে করে।
⚫ব্যাকিং ফ্যাব্রিকঃ
ব্যাকিং ফ্যাব্রিক এমন একটি ফ্যাব্রিক যার পৃষ্ঠের তন্তুগুলি কৃত্রিম টার্ফের ভিত্তি তৈরি করে থাকে।
⚫শক শোষণ স্তরঃ
শক-শোষণকারী ফোমটির উদ্দেশ্য হলো দৌড়তে বা পড়ার সময় অ্যাথলেটদের কুশন হিসেবে কাজ করা। ফোমটি পলিইউরেথেনের মতো একটি বদ্ধ সেল পলিমার মিশ্রণ দ্বারা প্রস্তুত যা আঘাত থেকে রক্ষা করে।
⚜টার্ফের ইতিহাসঃ
উত্তর ক্যারোলিনার রলেহের অধিবাসী এবং নর্থ ক্যারোলিনা স্টেট ইউনিভার্সিটি কলেজ অফ টেক্সটাইলের ডিনের দায়িত্ব পালন করা ডেভিড চ্যানি ১৯৬০ সালে প্রথম কৃত্রিম টার্ফ তৈরিকারী রিসার্চ ট্রায়াঙ্গেল পার্ক গবেষক দলের নেতৃত্বে ছিলেন। এই অর্জনটি স্পোর্টস ইলাস্ট্রেটেড চ্যানিকে “Responsible for indoor major league baseball and millions of welcome mats.”হিসেবে আখ্যায়িত করা হয় ।কৃত্রিম টার্ফ সর্বপ্রথম রোড আইল্যান্ডের প্রোভিডিসনের মোসা ব্রাউন স্কুল নামক একটি অঞ্চলে ১৯৬৪ সালে স্থাপন করা হয়েছিল যা মানুষের কাছে খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল ১৯৬৬ সালে।বর্তমানে এর ব্যবহার ব্যাপক।
⚜টার্ফ এর ব্যবহারঃ
ক্রমবর্ধমান নগরায়ণে কৃত্রিম টার্ফ এর ব্যাবহার বেড়েই চলেছে। বিশেষত উন্নয়নশীল দেশগুলোতে স্পষ্ট হয় যেখানে কৃত্রিম টার্ফগুলো ক্রমবর্ধমান ল্যান্ডস্কেপিংয়ের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে।নষ্ট হয়ে যাওয়া স্টেডিয়ামগুলো কৃত্রিম টার্ফের বাজার বৃদ্ধির প্রধান কারণ। উদাহরণস্বরূপ, ইউএস ব্যাংক স্টেডিয়ামে ২০১৯ সালে একটি নতুন কৃত্রিম টার্ফ ইনস্টল করা হয় যা ১.৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে কেনা হয়েছিল। একইভাবে, বোয়াইস স্টেট ইউনিভার্সিটির অ্যাথলেটিক স্টেডিয়ামটি ২০১৯ সালে একটি নতুন নীল কৃত্রিম টার্ফ স্থাপন করা হয় এটির জন্য ৬০০,০০০ ডলার থেকে ১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয় হয়।
১. বেসবল স্টেডিয়াম
২. ফুটবল স্টেডিয়াম
৩. ক্রিকেট স্টেডিয়াম
৪. টেনিস কোর্ট
৫. গল্ফ মাঠ
৬. এয়ারপোর্ট ইত্যাদি
⚜কৃত্রিম টার্ফে ব্যবহৃত উপকরণ:
কৃত্রিম টার্ফের উপকরণ হিসেবে সিলিকন বালি অথবা দানযুক্ত রাবারের মতো ইনফিল ব্যবহার হয় যা “ক্রাম্বার রাবার” হিসাবে পরিচিত। কিছু দানাদার রাবার পুনর্ব্যবহৃত গাড়ির টায়ার থেকে তৈরি করা হয়।
⚜কৃত্রিম টার্ফ তৈরিকারী বাংলাদেশী কিছু প্রতিষ্ঠানঃ
1. Shelter A.G.
2. Resha International
3. Tread. egl
4. AN Leather Ltd.
⚜ক্ষতিকর দিক ও সতর্কবাণী:
পরিত্যক্ত টার্ফের মধ্যে থাকে প্লাস্টিক ন্যানো টিউব যা মাটি দূষণ এবং উর্বরতা কমানোর কারণ হতে পারে।বিভিন্ন পলিমার থাকার কারনে তা পরিবেশের জন্য অনেক ঝুঁকিপূর্ণ।এজন্য এর সঠিক ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
বর্তমানে বাড়ির ভিতরে এবং বাইরে কৃত্রিম টার্ফ ব্যবহার হচ্ছে।বাচ্চাদের এবং পোষাপ্রাণীদের ক্ষেত্রে টার্ফের তেমন কোন ক্ষতিকর প্রভাব নেই।বেশ কয়েকটি গবেষণায় দেখা যায় যে কৃত্রিম টার্ফগুলি খেলার জন্য আরামদায়ক এবং আঘাতমুক্ত।
Source: technicaltextile, net & wikipedia
Writer:
Ibnasina Rabby
Department of Fabric Engineering (2nd batch)
Dr. M A Wazed Miah Textile Engineering College,Pirgonj,Rangpur.