🚸 কেমিক্যাল ব্যবহারে নিরাপত্তা বিধি-
জীবিকার চাহিদায় মানুষ বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত থাকে। কর্মক্ষেত্রে কেউ কেউ ঝুঁকিপূর্ন পরিবেশে কাজ করে থাকে। ইনড্রাস্টিতে কেমিক্যালের ব্যবহার ঝুঁকিপূর্ন পেশার অন্তর্গত।সেক্ষেত্রে নিরাপত্তার দিকটি সবার আগে বিবেচ্য।কেমিক্যালের নিরাপদ ব্যবহারের লক্ষ্যে নিম্নলিখিতনীতিমালা অনুসরণ করা হয়ঃ
১) ফ্যাক্টরিতে কেমিক্যাল প্রবেশঃ (Entrance procedure of chemical)
ফ্যাক্টরিতে কেমিক্যাল প্রবেশের পূর্বে কয়েকটি ধাপ অনুসরণ করা হয়। প্রথমে কেমিক্যালের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যেমন-এম.এস.ডি.এস, টি.ডি.এস ও গ্যারান্টি লেটার নিশ্চিত করা হয়। পরবর্তীতে কেমিক্যালটি বায়ার কর্তৃক প্রদত্ত নিষিদ্ধ কেমিক্যাল তালিকার অন্তর্গত কিনা তা নিশ্চিত করা হয়। এই সকল ডকুমেন্ট কোম্পানির ই.সি.আর, ওয়াশিং প্লান্টের প্রধান ও কমপ্লায়েন্স বিভাগের দ্বারা নিরীক্ষনের পরে কেমিক্যালটি স্টোরে প্রেরন করা হয় |
২) কেমিক্যাল স্টোরেজ পদ্ধতিঃ (Storage procedure of chemical)
কেমিক্যালের নিরাপদ ব্যবহারের ক্ষেত্রে সঠিকভাবে কেমিক্যাল স্টোরেজ খুবই গুরুত্বপূর্ন। কেমিক্যাল স্টোরে সকল কেমিক্যাল তাদের নিজ নিজ সংরক্ষন পদ্ধতি অনুসারে স্টোরেজ করা হয়। বায়ার কর্তৃক প্রদত্ত নীতিমালা অনুযায়ী সকল কেমিক্যালের লেবেলিং ও এম.এস.ডি.এস নিশ্চিত করা হয়। স্টোরের সকল কর্মীদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা সরঞ্জাম পরিধান করতে হয়।
৩) কার্যক্ষেত্রে নিরাপত্তাঃ (Work place Safety & PPE use)
যথাযথ কর্তৃপক্ষের দ্বারা অনুমোদিত রিকুইজিশনের মাধ্যমে কেমিক্যাল স্টোর থেকে উত্তোলন করা হয়। কর্মক্ষেত্রের নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য নানাবিধ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। সকল কর্মীদের তাদের নিরাপত্তা্র জন্য প্রয়োজনীয় সুরক্ষা সরঞ্জাম কোম্পানীর থেকে দেয়া হয়। কর্মক্ষেত্রে সকল কেমিক্যালের এম.এস.ডি.এস দেয়া হয়। জরুরী আই ওয়াশ বেসিন ও অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র যথাযথ স্থানে সংরক্ষন করা হয়।
৪)কর্মীদের প্রশিক্ষনঃ (Training for Employees)
মেটেরিয়াল সেফটি ডাটা শিট অনুযায়ী কেমিক্যালের ব্যবহারের সাথে সম্পৃক্ত সকল কর্মীদের প্রশিক্ষন দেয়া হয়। প্রশিক্ষনে কেমিক্যালের নাম, সরবরাহকারী কোম্পানী নাম, ভৌত বৈশিষ্ট, সম্ভাব্য ক্ষতিকারক নির্দেশনা, প্রাথমিক চিকিৎসা, দূর্ঘটনা প্রতিরোধে করনীয়, অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থা, ব্যবহার ও সংরক্ষন পদ্ধতি, আত্নরক্ষামূলক সরঞ্জাম প্রভৃতি বিষয়ে বিশদভাবে আলোচনা করা হয়।
৫) নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষাঃ (Regular Health Check)
কেমিক্যালের নড়াচড়ার সাথে সংশ্লিষ্ট শ্রমিক, কর্মচারী ও কর্মকর্তা সকলেরই কোম্পানির মেডিক্যাল অফিসার দ্বারা ২ মাস অন্তর অন্তর নাক, কান, গলা ও ফুসফুস ইত্যাদির পরীক্ষা করা হয় এবং রেকর্ড সংরক্ষণ করা হয়।
৬) ই.টি.পিঃ (ETP Plant)
ওয়াশিং প্লান্টের কেমিক্যাল মিশ্রিত পানি ই.টি.পি প্লান্টে পরিশোধনের মাধ্যমে পরিবেশে ছাড়া হয়। পরিশোধিত পানির “BSR STANDARD”বজায় রাখা হয়।
৭) বর্জ্য ব্যবস্থাপনাঃ (Wastage disposal procedure of chemical)
কেমিক্যাল কন্টেইনারের অবশিষ্ট কেমিক্যাল পানি দিয়ে ধুয়ে ই.টি.পি প্লান্টে ফেলতে হবে। ই.টি.পি প্লান্টের থেকে উৎপন্ন বর্জ্য নির্দিষ্ট স্থানে মাটি চাপা দিয়ে সংরক্ষন করতে হবে।
কারখানার সকলে এই নীতিমালা অনুযায়ী কেমিক্যাল ব্যবহার করছে কিনা, নড়াচড়া ঠিকমত হচ্ছে কিনা, স্টোরেজ পদ্ধতি ঠিকমত হচ্ছে কিনা, আত্নরক্ষামূলক সরঞ্জামাদি ব্যবহার হচ্ছে কিনা, কেমিক্যাল ড্রামে যথাযথ লেবেলিং আছে কিনা এবং শূন্য ড্রাম ইটিপির মাধ্যম হয়ে সংরক্ষিত হচ্ছে কিনা তা পর্যবেক্ষণ করেন কলকারখানা পরিচালনা করা হয়।
লেখক:
তানভীর শিকদার সিয়াম
ডিপার্টমেন্ট অফ টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং,
জাতীয় বস্ত্র প্রকৌশল ও গবেষণা ইনস্টিটিউট
১০ম ব্যাচ