কোঁচো চিনেন নিশ্চয়??? সাপ না হলেও সাপের মিনি ভার্সন বলা চলে। তবে মজার ব্যাপার হচ্ছে সাঁপ বিষধর হলেও কেচো তার ঠিক বিপরীত…. । ক্যাপশন দেখে অনেকেই ইয়ারকি মারবে। হাসি মশকার সাথে হরহামেশাই আমরা বিষয়টাকে তুচ্ছতাচ্ছল্য করবো….।
কিন্তু ভেবেছেন কি? আপনার পাশে মাটির নিচে বসবাসরত এই ক্ষুদ্র প্রানীটাই আপনার পরিবেশের ভারসাম্য কতটা বজায় রাখে? এই যেমন ধরুন আপনার পাশে নস্ট হতে থাকা মরা, আধাপচা বাসি লতা পাতা এবং মাটি মিশ্রিত জৈব দ্রব্য খেয়ে কোঁচো মাটিতে জৈব পদার্থ দান করে। কেঁচো দেড় মিটার পর্যন্ত গভীরতা থেকে গর্ত খনন করে মাটি আলোড়িত করে।
এতে নিচু স্তরের মাটির উর্বরতা বেড়ে যায়।উপযুক্ত পরিবেশে পর্যাপ্ত কেঁচো থাকলে প্রতি শতক জমিতে ৩০-৪০ কেজি মাটি পর্যায়ক্রমে ভক্ষন, মল ত্যাগ ও আলোড়িত করতে পারে।কেঁচোর মল মাটির উর্বরতা বাড়ায়। সাধারন মাটির চেয়ে কেঁচোর মলে উদ্ভিদ পুষ্টির পরিমান বেশি থাকে। কেঁচোর চলাচলে মাটিতে বায়ু চলাচল, পানির অনুপ্রবেশ ও শিকড়ের বৃদ্ধি ঘটে। ভেবে দেখুন এরা কতটা উপকারী পরিবেশের চোঁখে অথচ এদেরকে আমরা এতটাই ক্ষুদ্র যে সামন্য শখের বশবর্তী হয়ে আমরা মাছ ধরার কাজে এদের ব্যাবহার করি….. ।
এবার প্রসঙ্গ কথায় আসি, সমাজের চোঁখে ঠিক তেমনি এক অবহেলিত ইন্জিনিয়ার হলো টেক্সটাইল ইন্জিনিয়ার। দেখবেন আপনার চারপাশ থেকে অনেকেই বলে বসবে- টেক্সটাইল ইন্জিনিয়ার মানে তো গার্মেন্টস কর্মী। অথচ দেশের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি কিন্তু টেক্সটাইল ইন্জিনিয়াররাই। শুধুমাত্র দক্ষ ইন্জিনিয়ারের অভাবে প্রতিবছর টেক্সটাইল ইন্জিনিয়ার খাতে প্রায় ১০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিদেশী ইন্জিনিয়াররা নিয়ে যাচ্ছে। যেখানে দেশের অর্থনীতির চাকাকে সবল রাখতে টেক্সটাইল ইন্জিনিয়াররা মাথার ঘাম পায়ে ফেলছেন সেখানে আমরা সেটাকে গুরুত্বই দিচ্ছি না।
কবে কাউকে তেমন বলতে শোনাও যায়নি যে সে টেক্সটাইল ইন্জিনিয়ার হবে। তবে কি টেক্সটাইল ইন্জিনিয়াররাও সমাজের চোঁখে অবহেলিত প্রানীদের অন্তর্ভুক্ত নয়? আর তাইতো কোঁচোর মতো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন হওয়া স্বত্ত্বেও তাদেরকে সমাজ বলছে- “কেঁচোর মতো বেঁচো”
ডিপার্টমেন্ট আব টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং(১ম বর্ষ)
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড রিসার্চ(নিটার)।