ছোটবেলা থেকেই আমরা হরেক রকমের স্বপ্ন দেখে অভ্যস্থ, কেউ বা ডাক্তার, কেউবা ইন্জিনিয়ার, কেউ পাইলট। জন্মের পর সহজাতগত আচরন থেকেই আমাদের জোক ঝুকে থাকে হয় ডাক্তার না হয় ইন্জিনিয়ার। কিন্তু পড়াশোনা জীবনে সতেরো -আঠারো বছর পার করে দেয়ার পর হাজারো ছেলের স্বপ্ন নিয়ে বেড়ে উঠা সতেজ অনুভূতিগুলো ক্রমশ কমতে থাকে। যারা ভেবেছিলো স্বপ্নের তাগিয়ে নিজেকে নিয়ে যাবে অন্যজগতে তারা অনেকেই সেক্ষেত্রে সফল হলেও ব্যার্থতার পাল্লা একেবারে নেহাত কম নয়। স্বপ্নচ্যুত হয়ে অনেকেই বেছে নেয় সুসাইডের মতো ভয়ঙ্কর ব্যাধি। তাহলে বহু যত্নে গড়া এ ক্যারিয়ারের কি হলো? এতবছর পড়াশোনা কি নিছক চোরাবালি?
ভেবেছেন একটা ক্যারিয়ার কিভাবে জলান্জলি হচ্ছে? কিভাবে আমাদের দেশের অদূর ভবিষ্যতের দ্বার বন্ধ হচ্ছে? কিন্তু এর শেষ কোথায়? অনেক প্রশ্ন হয়েছে, এবার উত্তরে আশা যাক। দেশীয় প্রেক্ষাপট অনুসারে দেশে মোট প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ৪ টি। যেখানে অধ্যয়নরত রয়েছে প্রায় ১৬ হাজারেরও শিক্ষার্থী, এর বাহিরেও দেশের নামকরা বিশ্বাবিদ্যালয়গুলোতেও বিভিন্ন সেক্টরে ইন্জিনিয়ারিং পড়াশোনা করছে আরো অনেক শিক্ষার্থী।
ভাবুন তো, তাদেরকে পর্যাপ্ত ফ্যাসিলিটি দেয়ার মতো যথেস্ট জায়গা আছে তো আমাদের দেশে? অথচ এখান থেকে পড়াশোনা করে চলে যাচ্ছে বিদেশে, নিজের তাগিদে, নিজের স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করার জন্য। এখানে দুটো পয়েন্ট – ১.যারা দেশের বাহিরে চলে যাচ্ছে ২. যারা দেশেই থাকছে। যারা দেশের বাহিরে চলে যাচ্ছে তারা হয়ত নিজেদের লাইফটাকে তাদের মতো করে লাইটিং করতে পারছে, কিন্তু যারা মাতৃভূমির মায়া কাটাতে না পেরে দেশেই থেকে যাচ্ছে? তাদের কি হবে? ক’জনইবা নিজের মনের মতো করে জীবনযাত্রার মান চালাতে পেরেছে?
তাহলে কি লাভ হলো এত স্বপ্ন দেখে, এত স্বপ্ন পূরন করে যদি নিজের পরিবারের ভরন পোষনের খরচ জোগার করতেই হিমশিম খেতে হয়? সেক্ষেত্রে দেশীয় প্রেক্ষাপট বিবেচনায় সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালনের একটা সুবিশাল সুযোগ রয়েছে টেক্সটাইল সেক্টরে।কারন দেশীয় বাজার হিসাবে বর্তমান সময়ের দেশীয় অর্থনীতির মেরুদন্ড ধরা হয় টেক্সটাইল সেক্টরকে। অথচ এখানে এখনো পর্যাপ্ত পরিমান প্রকৌশলী তৈরি করতে পারছে না।
প্রকৌশলীদের ঘাটতি পূরনের জন্য বিদেশী প্রকৌশলী ব্যাবহার করতে হচ্ছে, এতে করে দেশীয় বাজারের টাকা চলে যাচ্ছে বিদেশে।অথচ যেখানে আমরা জীবনযাত্রার তাগিদে চলে যাই বিদেশে অথচ আমাদের দেশীয় মুদ্রাই নিজেরা ধরে রাখতে পারছিনা। সুতরাং কোনোরকম ঝামেলা ছাড়াই আমরা বলতে পারি এইমূহূর্তে আমাদের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন স্বপ্ন এবং ক্যারিয়ার ডেভেলপের জন্য দেশীয় প্রকৌশলের অন্যতম সেক্টর টেক্সটাইল শাখাকে বেছে নেয়া। হয়ত হতে পারে আমাদের উন্নত ধারার ক্যারিয়ারকে ক্যারি করার জন্য এই একটি সেক্টরই সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ন।
ডিপার্টমেন্ট আব টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং(১ম বর্ষ)
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড রিসার্চ(নিটার)।