কাপড়বোনার গল্প শুনো, আসছে চাঁদের বুড়ি,
মেশিনম্যান কারখানাতে সঙ্গে এলো তারি…!!
গল্প হবে,জানাও হবে, হবে মেশিন কথা,
সবাই যদি পড়তে চাও, চলে এসো এই বেলা..!!
চাঁদের বুড়ি আর মেশিনম্যান।
র্যাঞ্চর দাস শ্যামল দাস চ্যাচঁড়! হ্যাঁ, থ্রি ইডিয়টস (3 idiots) মুভির র্যাঞ্চর কথা-ই বলছি। ফার্স্ট ক্লাশে মেশিনের সংজ্ঞা কিভাবে দিয়েছিলো, মনে আছে..?
হ্যাঁ, ঠিকই ধরেছেন…!! ব্যবহারিক ভাবে।
আর আমরা এই থ্রি ইডিয়টস মানে টিম চাঁদের বুড়ি আর মেশিনম্যান শুধু রূপকথার গল্পের মতো চরকা কাটার গল্পই করবো না, দেশীয় আদি টেক্সটাইল থেকে আধুনিক টেক্সটাইলে ব্যবহৃত মেশিন গুলোকে নিয়েও গল্প করবো।
কাপড় আগে না সুতা আগে..?
অবশ্যই, সুতা..!!
আর এদিকে মেশিনের আগে প্রসেস সম্পর্কে একটু ধারণা থাকা ভালো। তাই আমরা এখন গল্প করবো, স্পিনিং বা সুতা তৈরির কিছু প্রসেস নিয়ে।
তাহলে আর দেরি কেন? চলুন, শুরু করা যাক!!
উৎপাদন থেকে শুরু করে মার্কেটিং পর্যন্ত কাজের সুবিধার্থে কাপড়বোনার প্রসেসগুলোকে আমরা ৬ ভাগে ভাগ করতে পারি। যেমনঃ
1. Cultivation.
2. Preparatory process.
3. Spinning.
4. Weaving or knitting.
5. Finishing.
6. Marketing.
চলুন, এইবার এই Preparatory Process সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক..!
ক্ষেত থেকে আমরা যে উৎপাদিত তুলার বীজ পাই, সেটাকে জিনিং প্রক্রিয়াতে অপসারণ করার পর, স্পিনিং প্রসেস এর জন্য তৈরি করতে তুলার অপদ্রব্য যেমন পাতা,ময়লা,অতিরিক্ত বীজ,মেটাল সরিয়ে তুলোকে পেঁজিয়ে বা আলগা আঁশে পরিণত করাই এই Preparatory Process-এর কাজ।
আধুনিক যুগের আগের সময়টাতে হাতেই তৈরি করা হতো কাপড়। তাহলে, Preparatory Process তখন কিভাবে হ্যান্ডেল করা হতো ..?! নিশ্চয়ই মনে কৌতুহল জাগছে, তাইনা ?
তখনকার দিনে Preparatory Process-এর কাজ একটা যন্ত্র দিয়েই সারা হতো। যন্ত্রটি হলো ধুনট বা ধুনখারা। এই যন্ত্রটা দিয়ে তুলাকে ধুনা বা পেঁজানো হতো। এই প্রক্রিয়ায় তুলার বীজ ও অপদ্রব্যগুলো ঝরে পড়ত এবং সাথে সাথে তুলাগুলো ফেঁপে আশঁগুলো হালকা হয়ে যেতো।
এখন, এই ধুনট বা ধুনখাড়া কি জানতে ইচ্ছে করছে নিশ্চয়ই…?!
অনেকটা ধনুকের মতো এই যন্ত্রটি। যার শেষ প্রান্ত গরু জাতীয় পশুর শুষ্ক পেশিতন্ত্র দিয়ে শক্তভাবে আটকানো থাকে।
এতক্ষণ আমরা জানলাম পোশাক খাতের শিকড় সম্পর্কে। এইবার আমরা পদার্পণ করবো এর শিখরে.!!
টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিগুলোতে আমরা যে ফ্যাব্রিক বা কাপড় উৎপাদন করি, সেক্ষেত্রে ঐ ফ্যাব্রিকের জন্য কাঁচামাল উৎপাদন থেকে শুরু করে সুতা প্রস্তুত এবং প্রাপ্ত সুতা থেকে ফিনিশড ফ্যাব্রিক তৈরিতে আমাদের প্রচুর জটিল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হয়। আর এরকম কিছু জটিল প্রক্রিয়া শেষে আমরা পেয়ে যাই আমাদের কাঙ্ক্ষিত ফ্যাব্রিক এবং এই টেক্সটাইল ম্যানুফ্যাকচারিং বা ফ্যাব্রিক উৎপাদনের ক্ষেত্রে ব্লো-রুম অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি অপারেশন।
কি এই ব্লো-রুম …?
Cultivation-এর পর আমরা যে তুলা পাই,সেটাকে বেল বা গাদা করে ফ্যাক্টরিতে পাঠানো হয়। আর এই বেল ম্যানেজমেন্ট বা তুলার গাদা তৈরির পর সুতা তৈরির আমরা যে প্রথম ধাপটি পাচ্ছি, সেটি হচ্ছে এই ব্লো-রুম। এটি এমন একটি ঘর যেখানে আমরা ফাইবার বেলকে সুতা তৈরির উপযোগী করার জন্য প্রাথমিক কাজগুলো তথা ওপেনিং (খোলা), ক্লিনিং (পরিষ্কার করা) এবং ব্লেন্ডিং (পেঁজানো) করে থাকি। আর এই সবগুলো কাজ কম্প্রেসড এয়ার বা বায়ু প্রবাহের মাধ্যমে ফাইবারকে এক মেশিন থেকে পরবর্তী মেশিনে স্থানান্তরিত করা হয়ে থাকে বলে, স্পিনিং-এর এই ধাপটিকে আমরা বলবো ব্লো-রুম।
“এক কন্যা রাধে বাড়ে, আরেক কন্যা খায় আরেক কন্যা রাগ করে বাপের বাড়ি যায়.”
আমাদেরও হয়েছে সেই এক অবস্থা!
দুই কন্যা বুড়ি রাগ করে চলে গেলো। কেমন লাগে, বলুনতো? আচ্ছা, ওরা আসুক তারপর এক সাথে আবার গল্প করবো!
আজকে তাহলে এপর্যন্তই রাখি, কেমন!
পরের পর্বে আমরা জানবো, কি এই ব্লো-রুমের উদ্দেশ্য ..?
এর কাজটাই বা কি.? আর এর সাথে মেশিনেরই কি বা সম্পর্ক.!
ততোদিন, টিম চাঁদের বুড়ি আর মেশিনম্যান এর সাথেই থাকুন…!
তথ্যসূত্রঃ Textile Lab, Wikipidia, Foreign magazines, Youtube.
Writer Information :
Mollika Rani
Apparel Engineering Dept.
[email protected]
Sharmin Maktum
Fabric Engineering Dept.
[email protected]
Rawshan Tabassum Darish
Apparel Engineering Dept.
[email protected]
1st batch
Dr. M A Wazed Miah Textile Engineering College,pirganj, Rangpur.