শিল্প বিপ্লব গুলো সত্তিকার অর্থেই বদলে দিয়েছে সারা বিশ্বের গতিপথ..গত দশক অব্দিও আমরা প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় শিল্পবিপ্লব এর সাথে পরিচিত ছিলাম কিন্তু আমরা এখন চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে এর মধ্যে অলরেডি ঢুকে পরেছি.
প্রথম শিল্পবিপ্লব- যা হয়েছিল ১৭৮৪ সালে পানি ও বাষ্পীয় ইঞ্জিনের নানা মুখী কৌশল আবিষ্কারের মাধ্যমে। ১৮৭০ সালে বিদ্যুৎ আবিষ্কারের ফলে এক বারেই বদলে যায় মানুষের জীবনের চিত্র,কায়িক পরিশ্রমের জায়গা দখল করতে থাকে বিদ্যুৎ চালিত যন্ত্রপাতি। এর ঠিক ১০০ বছর পর ১৯৬৯ সালে সংগঠিত হয় তৃতীয় শিল্পবিপ্লব যা ছিলো ইন্টারনেট ভিত্তিক শিল্পবিপ্লব.. ম্যানুয়াল জগৎ ছেড়ে যাত্রা শুরু হয় ইন্টারনেট ভিত্তিক যাত্রা..
এবার আশি চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের কথায়
যদিও এই টার্ম টা আসছে ২০০০ সাল থেকে তবে এই টার্ম টাকে আনুষ্ঠানিক ভাবে পরিচয় করেছে ২০১৩ সালে জার্মানিতে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম (ডব্লিউইএফ) এর বার্ষিক সম্মেলনের আলোচনায়.. সেখানে আলোচনার অন্যতম বিষয় ছিলো চতুর্থ শিল্পবিপ্লব।
বাংলাদেশো এর দ্বারপ্রান্তে, পুরো বিশ্ব একে কাজে লাগিয়ে কিভাবে অর্থনীতিক চাকা আরো গতিশীল করা যায় তার দিকে মনো্যোগ দিচ্ছে.. এই শিল্পবিপ্লব টি মুলতো তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর ডিজিটাল বিপ্লব.. এ বিপ্লবে সবচেয়ে বড় ভুমিকা রাখবে ক্লাউড কম্পিউটিং, ইন্টারনেট অব থিংস (IOT), এবং আর্টিফিশিয়াল ইন্টালিজেন্স (AI)
এখন আশা যাক এর কিছু সুবিধাঃ চতুর্থ শিল্পবিপ্লব পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে যোগাযোগ থেকে শুরু করে কারখানার উৎপাদন ব্যবস্থায়.
তবে হুমকিতে পরবে পোশাক শিল্প থেকে শুরু করে অনেক গুলো শিল্পে. কারন চতুর্থ শিল্পবিপ্লব টি হবে সম্পুর্ন যন্ত্রনির্ভর এবং যন্ত্রই তার চাহিদা মেটাতে সক্ষম হবে ফলে চাকরি হারাবে প্রায় অধিকাংশ মানুষ। বিজনেস বা ইন্ডাস্ট্রির ক্ষেত্রে যেহেতিও শিল্প বিপ্লব টার্মটি বেশি ব্যবহৃত হয়, এ বিপ্লবে এসে দেখা যাচ্ছে সবাই একে অপরের সাথে সম্পৃক্ত।
আর এই সম্পৃক্ততার সম্পর্ক দেখা যায়, মানুষের সাথে মানুষের, মেশিনের সাথে মেশিনের এমনকি মেশিনের সাথে মানুষেরও…
কিছু উদাহরণের দিকে চোখ রাখা যাকঃ
১৯৯৮ সালে প্রায় ১ লক্ষ ৭০ হাজার কর্মচারী নিয়ে কাজ করা কোডাক কম্পানিকে নিশ্চই মনে আছে? তখনকার পরিসংখ্যান হিসেবে পুরো বিশ্বের মোট ছবি তোলার ৮৫ শতাংশই তোলা হতো তাদের কম্পানীর ক্যমেরা দিয়ে কিন্তু বিংশ শতাব্দীতে মোবাইল ক্যামেরার চাহিদা বাড়ায় বাজার হারায় এ কম্পানী এবং তাদের এতোটাই শোচনীয় অবস্থা হয় যে সব কর্মচারীদের বাধ্যতামুলক চাকরি ছাড়তে হয়..
এখন বর্তমান যুগে লিড দেওয়া কিছু কম্পানীর দিকে তাকানো যাকঃ
উবারঃ এটি এক্টি সফটওয়্যারের নাম এদের নিজস্ব কোন গাড়ি নেই তবুও এটি বর্তমানে বিশ্বের বৃহত্তম ট্যাক্রি ভাড়ার কম্পানী.
AIRBNB: এটি হলো আজকের দুনিয়ার সবচাইতে বড় হোটেল কম্পানী কিন্তু মজার ব্যাপার হলো পৃথিবীর ১টি হোটেলো তাদের মালিকানায় নেই। একিই ভাবে PAY TM.
চতুর্থ শিল্পবিপ্লব যেমন একটি দেশের অর্থনীতির চাকা গতিশীল রাখতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করবে ঠিক বাংলাদেশের মতো দেশের জন্য এটি কিছুটা অভিশাপের মতো কারনঃ
ধারনা করা হয় আগামী দুই দশকে বাংলাদেশের প্রধান শিল্প পোশাক শিল্পের প্রায় ৬০ ভাগ মানুষ তাদের চাকরি হারানোর শঙ্কায় থাকবে। এটা গ্লোবাল ইনকাম লেবেল, জীবন যাপন ব্যবস্থা বাড়িয়ে এবং উন্নত করলেও শঙ্কা থাকবে কর্মসংস্থান নিয়ে। ধারনা করা হচ্ছে কল -কারখানায় স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রের ব্যবহার ২০৪১ সাল নাগাদ হুমকিতে ফেলবে অনেক কাজকে। এ পরিস্থিতিতে যুগের সাথে নিজেদের দক্ষ্য এবং প্রযুক্তির সাথে নিজেদের খাপ খাইয়ে নেওয়াটাই হতে পারে এই প্রেক্ষাপটে সবচাইতে কার্যকরী এবং নিজেদেরকে যুগের সাথে যোজ্ঞ হিসেবে গড়ে তুলাই হতে পারে একমাত্র সমাধান..
এই লিখাটি লিখতে গুগল, উইকিপিডিয়া এবং বিভিন্ন পত্রিকা থেকে সাহায্য নেওয়া হয়েছে।
Writer information:
আরাফাত খান প্রীতম,
ডিপার্টমেন্ট অফ অ্যাপারেল ইঞ্জিনিয়ারিং,
ডক্টর এম এ ওয়াজেদ মিয়া টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ,পীরগঞ্জ,রংপুর
ব্যাচঃ ২য়