সপ্তাহের প্রতি শুক্রবার ঢাকা জেলার ডেমরার স্টাফ কোয়ার্টারে খুব ভোর বেলায়ই শুরু হয়ে যায় ডেমরা বাজার জামদানী হাটের কার্যক্রম।এটি একটি ঐতিহ্যবাহী হাট।এমন একটি হাট যেখানে বিপুল সংখ্যক শাড়ি এবং জামদানী কাপড় পাইকারি মূল্যে পাওয়া যায়।এখানেই মহাজন হিসেবে খ্যাত ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশের হস্ত তাঁত-জামদানীর ব্যবসা করেন।হস্ততাঁত এর কারিগর এবং কারখানার মালিকদের ভূমিকাটি বোঝা সহজ হলেও এখানে মহাজনের ভূমিকাটি কিছুটা বিভ্রান্তিকর,বিশেষ করে বহিরাগতদের কাছে।বলা যায় তাদের পরিচয় ব্যবহার করে দোকানগুলোতে তাঁতের পণ্যগুলো বিক্রয় করা হয় এক কথায় তারা “এজেন্ট” হিসেবে কাজ করে থাকে।
সাপ্তাহিক এই বাজারটি ভোর ৩ টা থেকে ভোর ৬ টা এই সংক্্ষিপ্ত সময়ের জন্য। এই সময়েই জামদানীর উৎপাদন ও বিক্রয় বানিজ্যের সাথে জড়িত সমস্ত ব্যবসায়ীরা উপস্থিত হয়। একজন মহাজন এর মতে, এখানে একক ভূমিকার মধ্যে থাকা কঠিন,তাই তারা পৃথক বা ছোট তাঁতিদের কাছ থেকে কেনার জন্য বসেন এবং তা খুচরা বিক্রেতাদের কাছে বিক্রয় করে থাকেন।মূলত তারা মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করে থাকেন।যেনো পণ্যগুলো সঠিক ভাবে বিক্রয় হয় এবং লাভের অংশের সঠিক বন্টন হয়ে থাকে সেই বিষয়গুলো তারা পরিলক্ষন করে থাকেন,যেখানে রয়েছে তাঁতীদের বেতন,কারখানার ব্যয়,যানবাহনের খরচ এবং অন্যান্য ব্যবসায়ীক খরচ।
আজ নারায়ণগঞ্জ, বিশেষত রূপগঞ্জ এর একটি গ্রাম জামদানী তাঁত সরবরাহের একটি কেন্দ্রস্থল। শীতলক্ষ্যা নদীর তীরবর্তী হওয়াতে জামদানী তৈরিতে ব্যবহৃত পানির চাহিদা এই নদী থেকে মেটানো যায় যা তুলা প্রক্রিয়াজাতকরণ এর জন্য পূর্বশর্ত।
খুব কম লোকই জানেন যে জামদানী বুনন কতটা জটিল একটি কাজ এবং তৈরিতে মাসের পর মাস সময় লেগে যায়। প্রতিটি বুননের জন্য প্রতিক্ষনে মনযোগ দেয়া প্রয়োজন। জামদানী বুননকারীদের এই দক্ষতা চলে আসছে যুগের পর যুগ ধরে বংশগত ভাবে এক প্রজন্ম থেকে অন্য প্রজন্মে।তারা নিজেরাই গড়ে নিচ্ছে নিজস্ব শিল্পী।
মূলত এই হাট থেকেই পাইকারি মূল্যে জামদানী কিনে নিয়ে যেয়ে খুচরা বিক্রেতারা সাজিয়ে রাখেন বড় বড় শপিংমলে এবং শোরুমে।
Mohammad Arshil Azim
Department Of Textile Engineering,
BGMEA University Of Fashion & Technology (BUFT)