বিগত বছরগুলোতে বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থায় বিপুল পরিমান উন্নতি হয়েছে। আর তাতে আমাদের টেক্সটাইল পণ্যের অবদান কোনো অংশে কম ছিল না। যে পণ্যটি এত বড় সাপোর্ট দিয়ে এসেছে তা হলো “জিও টেক্সটাইল”।
জিও টেক্সটাইল এমন একটি পন্য যা সড়ক নির্মান, রেলপথ নির্মান, বাধ নির্মান, নদীপথের ক্ষয় রোধ ছাড়াও আরও বহুল জায়গায় ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এটি বেশিরভাগই সিন্থেটিক অর্থাৎ পলিস্টার, পলিপ্রপিলিন, পলি এমাইড দ্বারা নির্মিত হয়ে থাকে। সিন্থেটিক হওয়ায় এটিকে পরিবেশ বান্ধব বলা যায়না। কয়েকবছর পর্যন্ত এটি মাটির সাথে মিশে না। তবে যদি পাট অথবা কয়ার ফাইবার দিয়ে তৈরী করা হয় জিও টেক্সটাইল, তবে নিমিষেই এই সমস্যা সমাধানের পাশাপাশি আরও অনেক সাফল্য পাওয়া যাবে।
জিও টেক্সটাইল নিট, ওভেন এবং নন- ওভেন তিন ধরনের পদ্ধতিতেই তৈরি করা হয়। নিটিং এ শুধু ওয়ার্প নিটিং জিও এর অন্তর্ভুক্ত। বিভিন্ন লুমের মাধ্যমে ওভেন জিও টেক্সটাইল তৈরী করা হয় ।আর নন- ওভেন বেশিরভাগই হিট বন্ডিং পদ্ধতিতে তৈরী করা হয়।
জিও টেক্সটাইল মূলত নিম্নলিখিত বৈশিষ্ট্যগুলো মেনে চলেঃ
১। পরিস্রাবক হিসেবে কাজ করে।
২। বিভিন্ন পদার্থকে পৃথক করে রাখে।
৩। নিষ্কাশক হিসেবে কাজ করে।
৪। মাটির শক্তিবৃদ্ধি করে।
৫। জলরোধক হিসেবে কাজ করে।
৬। ভারগ্রহন ক্ষমতার অধিকারী।
জিও টেক্সটাইল মূলত সড়ক নির্মান, রেলপথ নির্মান, নদীর পাড় ভাঙন, বন্যায় ক্ষয় রোধ করার কাজে ব্যবহার করা হয়। উপকূলীয় অঞ্চলগুলোতে এটির ব্যবহার বেশি। কৃষিকাজেও এই পণ্যের প্রয়োগ অনেক। সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সকল কাজেই জিও টেক্সটাইলের ছোয়া থাকে।
বাংলাদেশ এই জিও টেক্সটাইলকে কেন্দ্র করে কাজ করা শুরু করলে অনেককাংশেই অর্থনৈতিক মুক্তি পাওয়া সম্ভব। আমাদের রয়েছে নিজস্ব পাট, কয়ার ফাইবার। এগুলোকে প্রসেসিং করে সহজেই জিও টেক্সটাইল উৎপাদন করা সম্ভব। এতে দেশের জিও এর চাহিদা মেটানো যাবে, পাশাপাশি পরিবেশবান্ধব জিও প্রোডাক্ট তৈরী হবে। যা অতি সহজেই মাটির সাথে মিশে যায় এবং মাটির শক্তি বৃদ্ধি করে। এছাড়াও এতে করে নতুন কর্মস্থল হবে যা অনেকাংশেই বেকারত্ব নিরসন করবে। বাংলাদেশে বর্তমানে দু’টি জিও টেক্সটাইল উৎপাদনকারী ফ্যাক্টরী রয়েছে। 1.Udara Lanka Coir Exp.(pvt) Ltd 2.Janata Jute Mills Ltd.
লেখকঃ
নাজিফা তাবাসসুম
টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ (৩৭তম ব্যাচ)
সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটি