আমাদের মৌলিক ৫ টি চাহিদার অন্যতম একটি হলো বস্ত্র। আদিম যুগের মানুষ প্রথম যখন পোশাক ব্যবহার করতে শিখল তখন তাদের উদ্দেশ্য ছিলো কেবল সভ্য দেখানো। পরবর্তীতে তারা পোশাকের শোভাবর্ধন ও রূচিবোধ ইত্যাদি বিষয়কে গুরুত্ব দিতে শুরু করে। যার ফলশ্রুতিতে আজকে আমরা বিভিন্ন ধরনের ব্র্যান্ডের পোশাক শপিংমল গুলোতে দেখতে পাই। শুধু শোভাবর্ধন কিংবা রূচিবোধ নয় তার চেয়েও বেশি প্রাধান্য পেতে থাকে পোশাকের কৌশলগত এবং ক্রিয়াকরণ বিষয়ক সুবিধাবলি।
তাই টেক্সটাইল পোশাকের ব্যবহারগত দিক দিয়ে টেক্সটাইল খাতকে দুইটি ভাগে বিভক্ত করা হয়। সেগুলো নিম্নরুপ:
১. প্রথাগত টেক্সটাইল এবং ২. টেকনিক্যাল টেক্সটাইল
প্রথাগত টেক্সটাইল কী?
– যে খাত মানুষের সাধারণ প্রয়োজনের পোশাক যেমন; সাধারণ শার্ট, প্যান্ট, কম্বল, পর্দার কাপড়, শাড়ি ইত্যাদি তৈরি করে সেই খাতকে প্রথাগত টেক্সটাইল বলা হয়।
টেকনিক্যাল টেক্সটাইল কী?
– যে খাত সুনির্দিষ্ট কিছু প্রয়োজনে ব্যবহারের জন্য যেমন; অতিরিক্ত শীতের কিংবা অতিরিক্ত গরমের পোশাক, প্রতিকূল জলবায়ুর অঞ্চলে ব্যবহারের জন্য পোশাক, অাগুন প্রতিরোধী পোশাক ইত্যাদি তৈরি করে সেই খাতকে টেকনিক্যাল টেক্সটাইল বলে।
টেকনিক্যাল টেক্সটাইলের পরিসর ব্যাপক। তাই টেকনিক্যাল টেক্সটাইলকে ব্যবহারের ভিত্তিতে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়েছে। যেভাবে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়েছে তা হলো:
১. মেডিটেক: চিকিৎসা বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যগত কাজে ব্যবহারের টেক্সটাইল। যেমন: স্যানিটারি ন্যাপকিন, কন্টাক্ট লেন্স,কৃত্রিম চামড়া ও লিগামেন্ট ইত্যাদি।
২. এগ্রোটেক: কৃষিকাজ,মৎস চাষ ও বনায়নের কাজে ব্যবহৃত টেক্সটাইল কাপড়। যেমন: জাল,বরসি,ফসল রক্ষার আবরণী কাপড় ইত্যাদি।
৩. বিল্ডটেক: নির্মাণ কাজের জন্য ব্যবহৃত কাপড়।যেমন :ছামিয়ানা, ত্রিপল ইত্যাদি।
৪. মোবাইলটেক: অটোমোবাইল, জাহাজ নির্মাণ, রেলওয়ে ও উড়োজাহাজ নির্মাণ ইত্যাদি কাজের জন্য ব্যবহৃত টেক্সটাইল সামগ্রী।যেমন:হেলমেট,স্বয়ংক্রিয় এয়ার ব্যাগ,সিট বেল্ট ইত্যাদি।
৫. প্রোটেক: ব্যক্তিস্বাস্থ্য সুরক্ষার্থে ব্যবহৃত টেক্সটাইল।যেমন: গ্লাভস,বুলেট প্রতিরোধী জ্যাকেট ইত্যাদি।
৬. ইন্ডিওটেক: দড়ি,ব্রাশ, ছাঁকনি ইত্যাদি বিভিন্ন শিল্প দ্রব্যকে বিশুদ্ধ করতে পারে ও বিভিন্ন শ্রেণির শিল্পে ব্যবহার হওয়া টেক্সটাইলকে এই শ্রেণীভূক্ত করা হয়।
৭. হোমটেক: বাসাবাড়ির বিভিন্ন কাজে ব্যবহার হয় যেমন মশারি,বালিশ,কার্পেট, ফার্নিচার ফেব্রিক ইত্যাদিকে এই শ্রেণীভূক্ত করা হয়েছে।
৮. ক্লথটেক: ছাতার কাপড়,জুতা সেলাইয়ের সুতা ইত্যাদিকে ক্লথটেক বলা হয়।
৯. স্পোর্টটেক: অবসরে ও খেলার সময় ব্যবহার করা পোশাককে স্পোর্টটেক বলে।
১০. প্যাকটেক: প্যাকেজিং এর জন্য ব্যবহার হওয়া বস্ত্রকে প্যাকটেক বলা হয়।
১১. জিওটেক: সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং ও ভূগোলই কাজের জন্য জিওটেক ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
লেখক:
অনু আক্তার
ব্যাচ: ২০১৯
ডিপার্টমেন্ট: টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।