টেক্সটাইলে বস্ত্র তৈরির উপকরণ হলো সুতা। কিন্তু এই সূতাকে টেক্সটাইল শিল্পের মাধ্যমে আকর্ষণীয় করে তোলা হয়। ভাবছেন কীভাবে??? চলুন বিস্তারিত জেনে নেই। টেক্সটাইল বুননে বৈচিত্র্যময় সুতার প্রতিফলন ঘটিয়ে পোশাক কে আকর্ষণীয় করে তোলা হয়। তবে সুতার আবিষ্কার সম্পর্কে এখনো কোনো ধারণা পাওয়া সম্ভব হয়নি। স্পিনিং প্রসেস এবং ইয়ার্ন ম্যানুফ্যাকচারিং প্রক্রিয়ায় সুতা তৈরি করা হয়। একটি পোশাকের সৌন্দর্য ও মান নির্ভর করে পোশাকটি তৈরিতে কি ধরনের সুতা ব্যবহার করা হচ্ছে।সুতার শ্রেণীবিন্যাস করা হয় উৎস ও প্রকৃতির ওপর নির্ভর করে। যেমন কটন, পলিস্টার এক্রাইলিক, ভিস্কস, লিলেন পলিভিনাইল। রেয়ন, সিল্ক, সুতা, উল।
বহু আগে থেকে পোশাক তৈরিতে “লিলেন সুতা”ব্যবহার হয়ে আসছে। তবে বর্তমানে পলিয়েস্টার সুতার সর্বাধিক ব্যবহারে নিলেন সুতার ব্যবহার বিলীন। টেকসই ও ফ্যাশনেবল হওয়ায় বিশ্ববাজারে পলিয়েস্টার সুতার তৈরি পোশাকের চাহিদা বাড়ছে।পলিয়েস্টার একটি সিন্থেটিক ফাইবার। এটি তৈরিতে কাচামাল হিসেবে ব্যাবহার করা হয় টেরেফ-থালিক এসিড বা টেরেফথালিক গ্লাইকল। পলিয়েস্টার সুতা লম্বা ফিলামেন্ট দিয়ে তৈরি হওয়ায় দৃঢ় হয়,আরামদায়ক এবং দীপ্তিজ্জল হয় এবং প্রয়োজনমতো প্রসারিত করা হয়।
প্রকৃতি থেকে পোশাক তৈরির বিভিন্ন উপাদান পাওয়া যায়। তার মধ্যে অন্যতম সিল্কের সুতা।রেশম মথ নামে এক ধরনের মথের লার্ভার লালা গ্রন্থি থেকে সিল্ক সুতা তৈরি করা হয়। সিল্ক সাধারণত কন্টিনিউয়াস ফিলামেন্ট বা ব্রোকেন ফিলামেন্ট দুই ধরনের হতে পারে। সিল্ক সুতা শক্তিশালী ও সম্প্রসারণশীল হওয়া সত্তেও অধিক চাহিদাসম্পন্ন হলেও ব্যয়বহুল।
নাইলন সুতা এক ধরনের সিন্থেটিক সুতা যার প্রচলন শুরু হয়েছিল ১৯৪০ সালের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। এটি অত্যন্ত হাল্কা ও মসৃণ এবং পানি শোষণ করতে অক্ষম। নাইলন সুতার ব্যবহার গৃহে এবং বাণিজ্যিকভাবে বহুল প্রচলিত।
সিল্ক অধিক দামী হওয়ায় এম্ব্রয়ডারি কাজে রেয়ন সুতা অধিকতর ব্যবহৃত হয়। উচ্চগতির এম্ব্রয়ডারি মেশিনে অন্যান্য সুতার তুলনায় রেয়ন সুতা ছিড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে।
উলেন সুতা প্রাণির লোম থেকে উৎপাদন করা হয়।এম্ব্রয়ডারি শিল্পে ও উলেন সুতার ব্যবহার অপরিসীম। এটি সাধারণত শীতের পোশাক ও কম্বল তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।উলেন সুতার মধ্যে রয়েছে কাস্মির সুতা। যেটি ছাগলের লোম থেকে আসে। তাছাড়া রয়েছে মেরিনো উলেন সুতা
ক্যাম্বো সুতা প্রাকৃতিক আশ থেকে তৈরি। এর তৈরি পোশাক আরামদায়ক এবং নরম এন্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য হিসেবে বেশি ব্যাবহার হয়।
এক্রাইলিক সুতা মনুষ্যনির্মিত ফাইবার এবং প্রাকৃতিক তন্তু গুলোর তুলনায় অনেক সস্তা। এটি সহজেই ধুয়ে ফেলা যায় এবং দ্রুত রঙ শোষণ করে।নভেল্টি সুতা সিন্থেটিক ফাইবার দিয়ে তৈরি বিভিন্ন রঙ ও টেক্সচারের হয়। এটি মসৃণ, নরম পুরু-পাতলা। কাপড়ে নতুনত্ব তৈরি করে। কটন সুতা সস্তা এবং শক্তিশালী হওয়ায় সুতি পোশাক রপ্তানি করেই বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের অবস্থান ২য়।
যে শিল্পের নতুনত্ব যত সেই শিল্পের চাহিদা ও তত বেশি।টেক্সটাইল শিল্পে বৈচিত্রময় সুতার প্রতিফলন হওয়ায় দিন দিন চাহিদা বেড়েই চলেছে যা বাংলাদেশকে অন্যান্য দেশের সামনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান তৈরি করে। অর্থাৎ টেক্সটাইল সংক্রান্ত বৈচিত্র্যতা কাপড় বুননে কাজে লাগিয়ে সৌন্দয বাড়ানো হয়।
তথ্যসূত্র: গুগল, উইকিপিডিয়া, টেক্সটিলেটডে
লেখক:
রিফা সানজিদা
42 তম ব্যাচ
টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং
সাউথইষ্ট ইউনিভার্সিটি