Tuesday, December 3, 2024
Magazine
More
    HomeCareerটেক্সটাইলে Msc/PhD করবেন কোন বিষয়ে তা সম্পর্কে সঠিক গাইডলাইন

    টেক্সটাইলে Msc/PhD করবেন কোন বিষয়ে তা সম্পর্কে সঠিক গাইডলাইন

    টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বা টেক্সটাইল সম্পর্কিত কোনো বিষয়ে পড়াশুনা করছেন,কিন্তু এই বিষয়ে উচ্চ শিক্ষার স্বপ্ন দেখেননি এমন মানুষের সংখ্যা খুবই কম।

    বর্তমানে দেশের টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রির প্রেক্ষাপটে সবাই চায় গ্রাজুয়েশন শেষেই জার্মানি, আমেরিকা কিংবা কানাডার মতো দেশে উচ্চশিক্ষার জন্য পাড়ি দিতে, যাতে করে আরো বিস্তৃত জ্ঞান অর্জন করে চাকরিতে সফলতা আনতে পারে।

    বাহিরের দেশে গিয়ে Msc বা PhD করার ইচ্ছা আছে কিন্তু যথেষ্ট পরিমাণে ধারণা নেই কোন বিষয়ের উপর পোস্ট গ্রাজুয়েশন করবেন। একটা ভুল ডিসিশন এর কারণেই অথবা সঠিক সাবজেক্ট সম্পর্কে অজানা থাকার কারণে আপনার ক্যারিয়ার ব্যর্থ হয়ে যেতে পারে, যেমন একটা উদাহরন দিয়ে বলি আপনার ইন্টারেস্ট আছে মার্চেন্ডাইজিং সেক্টরে কিন্তু আপনি Msc করে আসলেন টেকনিক্যাল টেক্সটাইল সম্পর্কিত কোনো বিষয়ে, সেক্ষেত্রে আপনি টেকনিক্যাল রিলেটেড চাকরিতে জয়েন করলে সম্পূর্ণ ইচ্ছাশক্তির বিরুদ্ধে কাজ করতে হবে।আজকে আপনাদের জানাবো এমন দশটি Msc সাবজেক্ট নিয়ে যেগুলো আপনার ক্যারিয়ার তৈরী করতে প্রধান ভূমিকা পালন করবে।

    একজন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার পরে আপনি এর মাঝে যেকোন সাবজেক্টে নির্দ্বিধায় পড়তে পারেন আপনার পোস্ট গ্রাজুয়েশনের জন্য।

    সাবজেক্ট গুলোর বিস্তারিত ধারণা এবং চাকরি ক্ষেত্র নিয়ে নিচে বর্ননা করা হলো।

    ১) Msc in Apparel Merchandising: স্বপ্ন দেখেন গ্রাজুয়েশনের পর ক্যারিয়ার হিসেবে মার্চেন্ডাইজিং পদ বেছে নিবেন, এই সেক্টরটি অনেক চ্যালেঞ্জিং এবং বর্তমানে টেক্সটাইলের পাশাপাশি অন্যান্য সাবজেক্ট এর স্টুডেন্টরাও মার্চেনডাইজিং এ চাকরি খুঁজছে।এর একমাত্র কারণ মার্চেন্ডাইজিং সেক্টর একটি বিশেষ অংশ টেক্সটাইলের, মূলত পোশাক রপ্তানির সাথে যুক্ত এই সেক্টর, এর মাধ্যমেই বাইরের দেশ থেকে আমরা পোশাকের অর্ডার পেয়ে থাকি। ক্যারিয়ার গ্রোথ, স্যালারি অন্য সেক্টরের থেকে অনেক বেশি তাই এগিয়ে আছে এই সেক্টরটি। আপনারা যারা স্বপ্ন দেখেন যে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ে মার্চেনডাইজিং এ জব করবেন তাদের জন্য অন্যতম অপশন হতে পারে ”Msc in Apparel Merchandising’ নামক সাব্জেক্টটি।এর মাধ্যমে আপনি apparel-merchandising সম্পর্কে অনেক বিস্তারিত কিছু জানতে ও শিখতে পারবেন। যা এই জবের উচ্চ পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারবে আপনাকে।

    ২) Technical Textile: যদি ইঞ্জিনিয়ারিং এর বাইরে না যাওয়ার ইচ্ছা থাকে আর টেকনিক্যাল টেক্সটাইল নিয়ে আগ্রহ থাকে তাহলে আপনি Msc করতে পারেন টেকনিক্যাল টেক্সটাইলে।

    টেকনিক্যাল টেক্সটাইলের বিস্তৃতি বিশাল বড়, বায়ো মেডিকেল, অ্যারোস্পেস, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং এর অনেক কাজের সাথে যুক্ত টেকনিক্যাল টেক্সটাইল তাই এই বিষয়ে পড়ার আগে অবশ্যই অবশ্যই খেয়াল রাখবেন আপনি মূল টেক্সটাইল ছেড়ে এমন কোথাও চাকরি করতে চাচ্ছেন কিনা যার শুধু মাত্র একটা বিশেষ অংশে টেক্সটাইল এর ব্যবহার।

    টেকনিক্যাল টেক্সটাইলে পড়াশুনা করে অনেকেই আজকে নাসায় জব করছেন, তাই একজন Tech Savvy মানুষ হলে টেকনিক্যাল টেক্সটাইল হবে আপনার ক্যারিয়ার গড়ার জন্য অন্যতম একটা সাবজেক্ট।

    ৩)Fashion Technology: টেক্সটাইল ও ফ্যাশন একজন যেন আরেকজনের পরিপূরক। এটি এমন একটা সাবজেক্ট যেখানে রয়েছে আইডিয়া ইনোভেশন, চিন্তাশক্তির মাধ্যমে আধুনিক ডিজাইন তুলে ধরার সুবর্ণ সুযোগ। আপনি যদি ফ্যাশন সচেতন হন সেইসাথে ফ্যাশনের প্রতি আপনার অনেক প্যাশন থাকে আর যদি ডিজাইন করতে আপনার ভালো লাগে তাহলে এই অপশনটা হতে পারে আপনার জন্য একটি বেস্ট অপশন কারণ টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার পরে অ্যাপারেল ইন্ডাস্ট্রি পুরোটা জুড়ে ফ্যাশন এর বৈচিত্র দেখা যায়।

    ফ্যাশন টেকনোলজিতে পড়ে চাকরি করার সুযোগ পাবেন দেশ বিদেশের নামীদামি সব কোম্পানিতে। কারণ প্রতিটি ব্রান্ড প্রতিনিয়ত খুঁজছে নতুন নতুন আইডিয়া।

    ৪)Sustainable Fashion Designing: ডিজাইন হলো মেধা ও মননশক্তির বহিঃপ্রকাশ।আর Sustainable হলো পৃথিবীকে টিকিয়ে রাখার সর্বউত্তম মাধ্যম।এটি হতে পারে সময় উপযোগী ভালো মানের একটা সাবজেক্ট যেটায় আপনি Msc করতে পারেন। কিভাবে কোনো ফ্যাশনকে সাস্টেইন্যাবল করা যায় যাতে মানবসভ্যতা আরো বেশি দিন টিকে থাকে সে সম্পর্কে আপনার ধারণা হবে এবং ভবিষ্যতে এই মার্কেট দিয়ে অনেক বেশি জনপ্রিয়তা লাভ করা সম্ভব তাই ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে যদি আপনি পড়ালেখা করতে চান তাহলে এই সাবজেক্ট হবে সময়ের উপযোগী একটি সাবজেক্ট।অতিরিক্ত টেক্সটাইল বর্জ্য এবং পানি দূষণের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য এই বিষয়ে দক্ষ জনবল প্রয়োজন। চাকরির পাশাপাশি এই সাবজেক্টে রয়েছে রিসার্চ এবং ইনোভেশনের অনেক সুযোগ।

    ৫) Digital Fashion Communication:এই সাবজেক্টটি তুলনামূলকভাবে আমাদের দেশের শিক্ষার্থীদের কাছে একটু অচেনা।টেকনোলজির প্রভাব বাড়ছে তাই বহিঃবিশ্বের সব কিছুতেই ডিজিটাল এর ছোঁয়া।সেই থেকে বাদ নেই ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রিও। সামাজিক, ঐতিহাসিক বিষয়ের সাথে ফ্যাশনকে যুক্ত করতে প্রয়োজন কমিউনিকেশন। ব্র্যান্ডের মার্কেটিং এবং ব্যান্ড ভ্যালুর জন্য এই সাবজেক্টের গুরুত্ব অপরীসিম।

    পৃথিবী এখন ডিজিটাল হচ্ছে তাই এই সাবজেক্টে পড়লে অবশ্যই আপনাকে পিছনে ফিরে তাকাতে হবে না, ধীরে ধীরে আমাদের দেশেও এই বিষয়ের চাদিহা বাড়তে শুরু করবে কিছু বছরের মধ্যেই।এ ক্ষেত্রে চাকরির সুযোগ রয়েছে দেশি- বিদেশি যেকোনো ফ্যাশন ব্র্যান্ডের সাথে।

    ৬)Polymer and Fiber Science:

    টেক্সটাইল এর মূল প্রাণ হলো পলিমার আর ফাইবার যা সকলেই অবগত আছেন।ফাইবার ছাড়া টেক্সটাইল কখনোই পরিপূর্ণতা পাবে না,টেক্সটাইল এ ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার আগে সবাইকেই ফাইবার সম্পর্কে জানতে হয় এবং এই ফাইবার নিয়ে বিস্তৃত একটা অংশ রয়েছে স্পিনিং মিলের সব কাজে। মূলত পলিমার থেকেই শুরু হয় পোশাক তৈরীর কাজ। আপনার মেজর যদি ইয়ার্ন ম্যানুফাকচারিং হয়ে থাকে তাহলে এই সাবজেক্টে Msc করা আপনার জন্য হবে সবচেয়ে উপযোগী ডিসিশন কারণ যখন আপনি ফাইবার এবং পলিমার সম্পর্কে এ টু জেড বিস্তৃতভাবে জানতে পারবেন তখনই একটা পরিপূর্ণ টেক্সটাইল ফ্রেবিক তৈরী করা সম্ভব।ব্যাসিক টেক্সটাইল সম্পর্কে জানার আগ্রহ যদি থাকে তাহলে এই সাবজেক্টটি আপনি Msc এর জন্য পছন্দ করতে পারেন।এটি এমন একটা সাবজেক্ট যার মাধ্যমে আপনি আপনার ক্যারিয়ার এগিয়ে নিতে পারবেন অনেক দূর।

    এই সাবজেক্ট থেকে পড়ালেখার পর আপনি যেকোন ইউনিভার্সিটিতে ফ্যাকাল্টি হিসেবে কিংবা রিসার্চের কাজ করতে পারেন, এছাড়াও ল্যাবরেটরিতেও চাকরির সুযোগ আছে।

    ৭) Textile Design and Innovation: ফ্যাশন ডিজাইনিং এর মতই কিন্তু তার থেকে আরেকটু ভিন্ন একটা সাবজেক্ট হলো ‘টেক্সটাইল ডিজাইন এন্ড ইনোভেশন’। এখানে শুধু পোশাক ডিজাইনিং নয় এর বাইরেও টেক্সটাইল এর অন্যান্য প্রোডাক্ট ডিজাইনের কাজ করা হয়ে থাকে। সম্পূর্ণ নিজের ধারণায় টেক্সটাইল প্রোডাক্ট এর ডিজাইনিং এর মূল উদ্দেশ্য। যাদের ডিজাইনিং নিয়ে আগ্রহ তাদের জন্য এটিও হতে পারে একটা অপশন

    ৮)Master’s in Science in Textile and Clothing: টেক্সটাইলে Msc এর সবচেয়ে জনপ্রিয় সাবজেক্ট হিসেবে এটিকে রাখা যায়।

    টেক্সটাইল কেন্দ্রিক লেখাপড়াই যারা করতে চান তাদের জন্য এটি সবচেয়ে সহজ এবং বেস্ট উপায়।

    টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং এর পরবর্তী ধাপ জানার জন্য উপযোগী সাবজেক্ট। এক্ষেত্রে চাকরীর সেক্টরও ব্যাপক। টেক্সটাইল এর যেকোনো ডিপার্টমেন্টেই আপনি সুযোগ পাবেন,পাশাপাশি ল্যাবরেটরি,বাইং হাইজ,রিসার্চ এবং শিক্ষকতার পথেও এগোতে পারবেন সহজেই।

    ৯)Material Science:ম্যাটেরিয়াল সায়েন্সও টেক্সটাইল এর অন্যান্য একটি অংশ।

    টেক্সটাইল ফাইবারের স্ট্রাকচার এবং টেক্সটাইল ফাইবার এর অভ্যন্তরীণ সকল বিষয় যারা জানতে চান এবং নতুন কিছু আবিষ্কারের আশায় কাজ করতে চান তাদের জন্য এটি সবচেয়ে ফলপ্রসূ হতে পারে।আপনি যদি একজন টেক্সটাইল বিষয়ক সাইন্টিস্ট হওয়ার চিন্তা করে থাকেন তাহলে চোখ বন্ধ করে এই সাবজেক্টে নিয়ে পড়তে পারেন।

    আপনি রিসার্চ আর আবিষ্কারের মাধ্যমে দেশ ও দশের উপকার করতে চাইলে এই সাবজেক্টটি বয়ে আনতে পারে সাফল্য। এর অন্যতম আরেকটি দিক হলো এই সাবজেক্ট এর ডিমান্ড প্রতিমুহূর্তে বাড়তে থাকে,কারণ বিজ্ঞান সব সময় এগিয়ে যাচ্ছে। করোনাকালীন সময়ে ভাইসার প্রতিরোধী ফ্রেবিক এর অন্যতম একটা উদাহরণ।

    ০) Textile with business studies:

    টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রি সম্পূর্ণ ব্যবসার সাথে যুক্ত। এই ইন্ডাস্ট্রির ফাইবার থেকে শুরু করে সেটাকে সর্বশেষ অ্যাপারেলে তৈরী করার প্রতিটি ধাপ এক একটা বিজনেস এর অংশ।

    যদিও টেক্সটাইল সাইন্স এন্ড টেকনোলজির জন্যই আজ এতো দূর এগিয়েছে কিন্তু আপাতদৃষ্টিতে এর বাহিরেও সর্বশেষ মেটেরিয়াল পরিধেয় পোষাক সারাবিশ্বে ব্যবসার অন্যতম একটি অংশ।তাই টেক্সটাইল এর সাথে ব্যবসা বিশেষভাবে জড়িত, এটি বলার আর কোন অবকাশই নেই।নিজে থেকে কোন বিজনেস শুরু করতে চান তাহলে এটা হতে পারে আপনার বেস্ট অপশন এ ছাড়াও এই সাবজেক্টে মাধ্যমে আপনি টেক্সটাইল মার্চেনডাইজিং এন্ড মার্কেটিং এর চাকরি খুব সহজেই পেয়ে যাবেন এবং এই সেক্টরে ক্যারিয়ার শুরু করলে এক সময় বাংলাদেশের টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রির প্রথম সারির কাজ করতে পারবেন। কিছু যুগ আগেও ব্যবসায় শিক্ষার্থীরা অনেক বেশি পরিমানে এই সেক্টরে আসতো এবং এখনো উচ্চপদে চাকরি করছে। কিন্তু আপনার আর আমার মত একজন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার যদি এই সাবজেক্টে আসতে পারে তাহলে এই উচ্চ পর্যায়ে শুধুমাত্র টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার থাকবে তাই এই সাবজেক্ট হতে পারে একটি গেম চেঞ্জার। আপনি যদি আপনার ক্যারিয়ারকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিয়ে যেতে চান তবে এই সাবজেক্ট এ Msc করতে পারেন।

    শুধুই দশটি নয় এর বাইরেও আরো হাজার হাজার সাবজেক্ট আছে যেগুলোর মাধ্যমে আপনি একটা ইঞ্জিনিয়ারিং এর পরবর্তী ধাপে পড়াশোনা করতে পারেন কিন্তু টেকনোলজি,ফ্যাশন এবং ব্যবসা এই তিনটি জিনিসই সব সময় টেক্সটাইলকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।

    তাই বাইরে পড়তে যাওয়ার আগে প্রতিটি সাবজেক্ট এর কোর্স সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা এবং পড়াশুনা শেষে চাকরির কি কি সুযোগ রয়েছে যা অবশ্যই সঠিক ভাবে জেনে নিবেন।

    Source: Youtube, DAAD & others scholarship website

    Writer’s Information

    Nure Arfi

    Executive member of Branding and Communication, Textile Engineers Society.

    Batch 39, Ahsanullah University of Science and Technology

    RELATED ARTICLES

    1 COMMENT

    LEAVE A REPLY

    Please enter your comment!
    Please enter your name here

    Related News

    - Advertisment -

    Most Viewed