টেক্সটাইল ও অ্যাপারেল বিশ্বের দ্রুত বর্ধনশীল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শিল্পের মধ্যে একটি, যা প্রতিবছর প্রায় ২০০টি দেশের লক্ষ লক্ষ মানুষের চাকরির জোগান দিয়ে এসেছে। টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রি বলতে বুঝায় যেখানে অ্যাপারেল তৈরির জন্য ফেব্রিক প্রস্তুত করা হয়। আর এই ফেব্রিক দিয়ে যেখানে গার্মেন্টস তৈরি করা হয় তাকে অ্যাপারেল ইন্ডাস্ট্রি বলে। চলুন জেনে নেওয়া যাক এই টেক্সটাইল ও অ্যাপারেল ইন্ডাস্ট্রি সম্পর্কে কিছু অজানা-মজার তথ্য :
• প্রাচীন গ্রীসে, উলের কাপড় বুনন গৃহস্থালীয় ফ্যাশনের মতো ছিল। পরবর্তী সময়ে উলের বয়ন একটি নির্দিষ্ট শ্রেণির নাগরিক পেশায় পরিণত হয়। যা “টেক্সটোর” নামে পরিচিত ছিল। আর এথেকেই আধুনিক শব্দ “টেক্সটাইল” এসেছে।
• শুধুমাত্র একটি কটন শার্ট তৈরিতে পানির প্রয়োজন হয় ৭০০ গ্যালন, যা একজন ব্যক্তিকে ৯০০ দিনের জন্য হাইড্রেটেড রাখতে যথেষ্ট। তেমনি একজোড়া জিন্স তৈরিতে যতটুকু পানির প্রয়োজন হয় তার পরিমাণ হল আপনি আপনার বাগানের মতো একটা জায়গায় একটানা পানি প্রবাহিত করলে ৯ ঘণ্টায় সেখানে যতটুকু পানি যেয়ে জমা হবে।
• আপনি জানলে অবাক হবেন যে, বিশ্বের ৭০% মানুষই জীবনের কোনো না কোনো সময় সেকেন্ডহ্যান্ড পোশাক কিনেছেন বা পরিধান করেছে। (তা সে জেনেই হোক কিংবা না জেনে ! )
• বিজ্ঞানীরা রেড ওয়াইনে “আ্যাসিটোব্যাক্টর” নামক এক ধরণের ব্যাকটেরিয়া চাষ করেন, যা গাঁজন প্রক্রিয়ায় অ্যালকোহলের সারফেসে ফাইবার উৎপন্ন করে।
• মানুষের ফেলে দেওয়া প্লাস্টিকের বোতলকে রিসাইকেল করে “পলিয়েস্টার ফাইবার” উৎপন্ন করা হয়। ইতালিতে এই ফাইবার ফ্যাশন শিল্পে, স্পোর্টসওয়্যার, আন্ডারওয়্যার, মেডিকেল গার্মেন্টস এবং অ্যাপারেল শিল্পে ব্যবহৃত হয় বেশি।
• আমেরিকানরা প্রতিবছর গড়ে প্রায় ৮২ মিলিয়ন টন টেক্সটাইল বর্জ্য ফেলে, যার মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একাই ১১ মিলিয়ন টন বর্জ্য উৎপন্ন করে। এগুলো নিঃশেষ হয়ে যাওয়ার সময় বায়ুমন্ডলে ক্ষতিকর গ্রিন হাউস গ্যাস উৎপন্ন করে দিয়ে যায়। যা গ্লোবাল ওয়ার্মিং এর মূল কারণগুলোর মধ্যে একটি।
• আমাদের ব্যবহৃত জামাকাপড়ের ডিকম্পোজ হতে সময় লাগে প্রায় ৪০ বছরের মতো। কারণ বেশিরভাগ ফেব্রিক Dyes and chemicals দিয়ে তৈরি। আর জুতায় Ethylene vinyl থাকায় এর ডিকম্পোজে সময় লাগে প্রায় ১,০০০ বছর। অর্থাৎ যা যত বেশি harmful material দিয়ে তৈরি তার ডিকম্পোজে সময় লাগে তত বেশি।
• আমাদের ব্যবহৃত ৯৫% টেক্সটাইলগুলোই রিসাইকেল করা যেতে পারে। ২০১৩ সালে “মার্কিন পরিবেশ সংরক্ষণ সংস্থা”র এক রিসার্চে দেখিয়েছিল, আমাদের টেক্সটাইল বর্জ্যগুলোর ২৩.৩ মিলিয়ন টন টেক্সটাইল বর্জ্যও যদি রিসাইকেল করা হয়, তাহলে তার পরিমাণ হবে রাস্তা থেকে ১.২ মিলিয়ন গাড়ি উঠিয়ে নিলে যতটুকু পরিবেশ দূষণ কমবে তার সমান। এভাবে আমরা যদি প্রতি বছর আমাদের পুরনো কাপড়গুলোকে রিসাইকেল করতে পারি তাহলে একবার ভেবে দেখুন, আমরা আমাদের পরিবেশ ও অর্থনীতির কতটা উন্নতি করতে পারি !
Source : Planetaid
Writer Information:
Tazim Sultana Nandita
Ahsanullah University of Science and Technology
Dep. of Textile Engineering ( Batch – 40 )
2nd year 1st semester