Sunday, December 22, 2024
Magazine
More
    HomeTechnical Textileটেক্সটাইল শিল্পে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার

    টেক্সটাইল শিল্পে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার

    -❄কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা :
    কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এমন একটি সিস্টেম যেখানে কম্পিউটারকে এমনভাবে প্রগ্রাম করা হয় যেন সেটা
    মানুষের চিন্তাধারা বা ক্রিয়াকলাপ এর সিস্টেম কে অনুকরণ করে সুনির্দিষ্ট কিছু সমস্যার সমাধান করতে পারে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বলতে শুধু একটি কম্পিউটারকেই বুঝায়না এটি একটি পূর্ণাঙ্গ সিস্টেমকে বুঝায় যেটি মানুষের প্রত্যক্ষ সহায়তা বা আদেশ ছাড়া নির্দিষ্ট কিছু সমস্যার সমাধান করতে পারে। এক্ষেত্রে মেশিনগুলো সমস্যার ধরন অনুযায়ী এবং সমস্যার পরিমাণের উপর নির্ভর করে সমস্যার সমাধান করতে সক্ষম। এই মেশিনগুলো কোনো সমস্যা খুঁজে পেলে সেটাকে মানুষের মত করে চিন্তা করে এবং নির্দিষ্ট সমাধান দান করে।
    কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন মেশিনগুলো দুই ধরনের কম্পোনেন্ট এর সমন্বয়ে গঠিত।


    এদের একটি হলো সেন্সর এবং অন্যটি হচ্ছে প্রগ্রাম।
    যেকোনো সমস্যা খুঁজে বের করার জন্য বা যেকোনো পরিস্থিতি অনুধাবনের জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন মেশিনে বিশেষ কিছু সেন্সর ব্যবহার করা হয়।
    এই সেন্সরগুলোর ধরন নির্ভর করে মেশিনের কাজের ওপর।
    এক্ষেত্রে প্রথমে নির্দিষ্ট কাজ নির্ধারণ করতে হয়।
    তারপর খুজে বের করতে হয় যে এই নির্দিষ্ট কাজগুলো সম্পন্ন করতে হলে মেশিনকে কোন সিস্টেমের মধ্যে দিয়ে যেতে হবে এবং সেক্ষেত্রে কোন কোন সমস্যা সমাধান করা লাগতে পারে।
    মোটকথা কোনধরনের সমস্যা অনুধাবন করতে হবে তার উপর ভিত্তি করে সেন্সর নির্ধারণ করা হয়।
    এরপর সেই মেশিনের জন্য নির্ধারণ করা হয় বিশেষ প্রগ্রাম।


    এই প্রগ্রামে মুলত কিছু সমস্যার ভিত্তিতে নির্দিষ্ট কিছু সমাধান দেয়া থাকে।
    সেন্সর থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী নির্ধারিত এই প্রগ্রামের মাধ্যমে মেশিনটি যেকোনো সমস্যার সমাধান করে থাকে এবং তার অন্যান্য কম্পনেন্টের মাধ্যমে তা বাস্তবায়ন করে থাকে।

    ❄টেক্সটাইল শিল্পে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার :
    আমাদের টেক্সটাইল শিল্পের কাজগুলো সুনির্দিষ্ট কিছু ভাগে ভাগ করা। এবং আমাদের টেক্সটাইল শিল্পের প্রতিটি পর্যায়ে কাজগুলো সুনির্দিষ্ট।
    প্রতিটি ধাপে কাজের জন্য আমরা আমাদের প্রয়োজন কিছু দক্ষ জনশক্তি, যাদের সেই নির্ধারিত কাজের ওপর দক্ষতা থাকা জরুরি।
    তাছাড়া প্রতিনিয়ত চাহিদার ভিত্তিতে ডিসাইনে নির্ধারিত কিছু পরিবর্তন আসে এবং সেই নতুন ডিসাইনের সাথে মানিয়ে নিতে জনশক্তিদের আবার নতুন করে সেসকল ডিসাইন সম্মন্ধে সম্যক অবগত হতে হয়।


    এক্ষেত্রে নতুন ডিসাইন বুঝতে কোনো একজনের অপারগতা নিয়ে আসতে পারে বড় ধরনের সমস্যা।
    তাছাড়া আমাদের টেক্সটাইল শিল্পের কাজগুলোর অধিকাংশই খুবই সুক্ষ্ম, এবং এসব সূক্ষ্ম কাজে মানুষের কিছু কিছু ভুল হয়ে থাকে।
    অথচ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন মেশিনগুলো পূর্বনির্ধারিত কিছু নিয়ম অনুযায়ী কোনো মানুষের প্রত্যক্ষ সহায়তা ছাড়া স্বয়ংক্রিয়ভাবে পরিচালিত হওয়ায় সেগুলোতে ভুল এর পরিমাণ তুলনামূলকভাবে অনেক কম।
    তাই সকল ভুল ত্রুটি এড়িয়ে সঠিক গুনগত মানসম্পন্ন অধিক উৎপাদন পেতে টেক্সটাইল শিল্পে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার এর কোনো বিকল্প নেই।
    তাছাড়া আমাদের প্রতিনিয়ত বাড়তি জনসংখ্যার চাহিদা মেটাতে আমাদের উৎপাদন এর পরিমাণ বাড়ানো খুবই জরুরী। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার এর মাধ্যমে আমরা আমাদের পন্য উৎপাদন এর পরিমাণ প্রয়োজন অনুপাতে বাড়াতে বা কমাতে পারি।
    কিন্তু মানুষ দ্বারা পরিচালিত হলে সেসব ক্ষেত্রে উৎপাদন বাড়ানো বা কমানো দুটোতেই সমস্যা দেখা দেয়।
    প্রথমত মানুষ একটা নির্ধারিত গতির বেশি গতিতে কাজ করতে পারেনা তাই ইচ্ছামত উৎপাদন বাড়াতে চাইলেই বড়ানো সম্ভব হয়না।
    আবার যখন উৎপাদন কম প্রয়োজন তখন জনশক্তি কম প্রয়োজন হলেও সব জনশক্তিদের ব্যতন ভাতা বহন করতে হয়।
    কিন্তু কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন মেশিন ব্যবহার এর ক্ষেত্রে এই সমস্যাগুলো এসকল সমস্যাগুলোর সম্মুখীন হতে হয় না।
    এছাড়া একজন মানুষ কর্মী দিনের একটা নির্ধারিত সময় কাজ করবে,
    কিন্তু কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন মেশিন পুরো দিনরাত্রি কাজ করতে সক্ষম।

    ❄টেক্সটাইল শিল্পে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার এর ক্ষেত্রে সমস্যাকর দিকগুলো :
    যদিও আমাদের টেক্সটাইল শিল্পের জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এর ব্যবহার খুবই লাভজনক কিন্তু তারপরও এর কিছু ক্ষতিকর দিক ও রয়েছে।
    সবথেকে বড় সমস্যা হলো যে আমাদের টেক্সটাইল শিল্পের সাথে জড়িত অনেক মানুষ তাদের চাকরি হারাবে। অথচ আমাদের দেশের জনসংখ্যার অনেক বড় একটা অংশ তাদের জীবন-জীবিকার জন্য টেক্সটাইল শিল্পের ওপর নির্ভরশীল।
    এছাড়া কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন মেশিন ব্যবহার এর জন্য আমাদের দক্ষ জনশক্তির যথেষ্ট ঘাটতি রয়েছে।

    ❄টেক্সটাইল শিল্পে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার এর ক্ষেত্রে সমস্যাকর দিকগুলোর সমাধান :
    প্রথমত আমাদের টেক্সটাইল শিল্পের সাথে জড়িত যেসকল জনশক্তিদের কর্মক্ষেত্র কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহারের কারনে কমে যাবে, তাদেরকে অন্য কোনো শিল্পে বা অন্য কোথাও তাদের জন্য কর্মক্ষেত্রের ব্যবস্থা করতে হবে।
    দ্বিতীয়ত আমাদের টেক্সটাইল শিল্পের সাথে জড়িত যেসকল জনশক্তিদের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার এ দক্ষতার ঘাটতি রয়েছে তাদেরকে বিভিন্ন কর্মশালার মাধ্যমে দক্ষ অভিজ্ঞ করে তুলতে হবে।

    ❄সামগ্রিকভাবে, টেক্সটাইল শিল্পে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার আমাদের দেশের টেক্সটাইল শিল্পকে আন্তর্জাতিকভাবে অনেকদূর এগিয়ে নিয়ে যেতে সক্ষম হবে।

    -Ammar bin mohsen
    -Department of electrical and electronics engineering
    -NITER(10 batch)

    RELATED ARTICLES

    LEAVE A REPLY

    Please enter your comment!
    Please enter your name here

    Related News

    - Advertisment -

    Most Viewed