সবুজ শাক-সবজি যে শুধুমাত্র পুষ্টিকর খাদ্য হিসেবে বিবেচিত হবে, এমনটা কিন্তু মোটেই সঠিক নয়। মূলত এগুলো ছিলো তথাকথিত কিছু ধারণা মাত্র। কেননা, সময়ের সাথে সাথে মানুষ নিজেদের চিন্তাভাবনায় যেমন পরিবর্তন এনেছে, তেমনি নিজেদের জীবনযাত্রায় এনেছে আমূল পরিবর্তন। আর টেক্সটাইল সেক্টরে এমনি এক পরিবর্তনের নাম হলো Vegan Textile. তো চলুন জেনে নেয়া যাক এর বিস্তারিত সম্পর্কে-
Vegan শব্দটি মূলত এসেছে Vegetable বা শাক-সবজি থেকে। কিন্তু ভেজিটেবল যদি টেক্সটাইল সেক্টরের পোশাক উৎপাদনে ব্যবহৃত হয়, তবে তো মানুষের খাদ্য চাহিদায় দেখা দিতে পারে সংকট। নাহ্, ব্যাপারটা মূলত অন্যরকম। শাক-সবজির অবশিষ্ট অংশ যেমন- আঁশ, খোসা এগুলো থেকেই মূলত তৈরি হয় Vegan Cloth. এই ধরণের পোশাক একই সাথে পরিবেশবান্ধব ও পুনব্যবহারযোগ্য।
বর্তমান সময়ে টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিগুলো পোশাক তৈরির পাশাপাশি সাস্টেনেবল ইন্ডাস্ট্রি গঠনের দিকেও নজর দিয়েছে। কেননা, এতকাল ধরে ইন্ডাস্ট্রিগুলো শুধুমাত্র লাভের আশায় প্রযুক্তির অপব্যবহারের ফলে তা আজ পরিবেশ ও মানবজাতির জন্য হয়ে দাঁড়িয়েছে হুমকিস্বরূপ। তাছাড়া, উল ফাইবার, ক্যামেল ফাইবার এগুলো সংগ্রহের সময় অনেক ক্ষেত্রেই প্রাণীর ক্ষতিসাধন হয় যা এই প্রক্রিয়ায় পুরোপুরি লাঘব করা সম্ভব। আমরা সকলেই সিল্ক সম্পর্কে জানি, এই সিল্ক পাওয়া যায় রেশম পোকার গুটি থেকে। এক্ষেত্রে রেশম আহরণের জন্য গুটিগুলো সিদ্ধ করার সময় রেশম পোকা মারা যায়। সেই সাথে রেশম চাষেও খরচ হয় প্রচুর। এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য সমাধান হতে পারে Ahimsa Silk. এই সিল্কের উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হলো এধরণের রেশমগুলো পরিপক্ক হওয়ার পর গুটির মধ্যে সূতা রেখে উড়ে চলে যায়।
উন্নত বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে এবং পরিবেশ সংরক্ষণের কথা মাথায় রেখে অনেক নামি-দামি টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রি আজ পরিবেশবান্ধব এই পোশাক তৈরিতে উদ্বুদ্ধ হয়েছে। একই সাথে মানুষের কাছেও জনপ্রিয় হয়ে উঠছে এ ধরণের পোশাক। এক্ষেত্রে যেসব ইন্ডাস্ট্রি প্রধান ভূমিকা পালন করছে, তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- MooWho, Zappos, Toms, Klow, Gung Ho এবং Jambu & Co. এসব কোম্পানি একই সাথে পরিধেয় পোশাক, ব্যাগ, জুতা ইত্যাদি তৈরি করে।
সুবিধাসমূহ: এই ধরণের পণ্য অতি সহজেই রিসাইকেল করা যায়। ফলে পরিবেশের কোনো ক্ষতি হয় না। সহজেই পরিষ্কার করা যায়। লেদার পোশাকের বিকল্প হিসেবে এগুলো ব্যবহার করা যায় এবং লেদারের চেয়ে হালকা হওয়ায় পরিধান করে যথেষ্ট আরাম পাওয়া যায়। এই ধরণের পোশাক অধিক টেকসই হয়। Vegan Sneakers যেকোনো পরিবেশে পায়ের সুরক্ষা দানে সক্ষম।
মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব। মানুষের বিবেক, বুদ্ধি ও চিন্তাশক্তিই মানুষকে অন্য যেকোনো প্রাণী থেকে আলাদা করে তুলেছে। বর্তমান সময়ে ৪র্থ শিল্প-বিপ্লব প্রযুক্তি খাতে মানুষকে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে গেছে। এই পরিস্থিতিতে আমাদের উচিত পরিবান্ধব প্রক্রিয়ায় টেক্সটাইল শিল্পকে সমুন্নত রাখা। এক্ষেত্রে সবচেয়ে সহজ ও কার্যকরী পদক্ষেপ হতে পারে Vegan Textile-এর প্রয়োগ।
তথ্যসূত্র: Wikipedia, Fiber2fashion, Compareethics, Vegansouls, Researchgate.
Written By:
Md. Istiaque Hossain Ullash
Dept. of Fabric Engineering(2nd Batch)
Dr. M A Wazed Miah Textile Engineering College.
Email: [email protected]
Phone no: 01705750070