চাকচিক্যের সমাজে নতুন মাত্রা এনে দেয়া বস্তুটি হলো পোশাক। সময়ের সাথে মানব সভ্যতা বিকাশের অন্যতম প্রধান নিয়ামক হচ্ছে পরিধেয় বস্ত্র। একটা সময় মানুষ পরিধেয় বস্ত্রকে শুধুমাত্র পরিধানের কাজে ব্যবহার করলেও এখন পরিধানের পাশাপাশি তা ফ্যাশনে রূপ নিয়েছে। পোশাকের ফ্যাশনের প্রতিনিধিত্ব করা বিষয়গুলোর মধ্যে পোশাকে ব্যবহৃত রঙ অন্যতম। যা কিনা পোশাকে যুক্ত করে সভ্যতাকে প্রকাশ করার নতুন মাত্রা। এরই ধারাবাহিকতায় আজকে ক্ষুদ্র পরিসরে তুলে ধরবো পোশাকে রঙ ব্যাবস্থাপনার কিছু অংশ।
ডাইং এর মূলভাবনাঃ
প্রথমত ডাইং বলতে আমরা বুঝি রঙ, রসায়ন এবং অন্যান্য সাহায্যকারী সারপদার্থের মাধ্যমে টেক্সটাইল দ্রব্যকে রঙিন বা উজ্জ্বল করার প্রক্রিয়া। কোনো টেক্সটাইল সামগ্রিকে ডাইং করার মুল উদ্দেশ্য হলো কাপড় কে আরো উজ্জ্বল ও আকর্ষনীয় করে তোলা।
আসুন এখন আমরা জেনে নেই প্রাথমিক ইতিহাস-ঐতিহাসিকভাবে রঙের প্রাথমিক উৎস ছিলো প্রানী, গাছপালা। এসব উৎস থেকে রঙীন বর্নগুলি বের করা হতো এবং জানলে অবাক হবেন যে উনিশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে মানুষ বিস্তৃত রঙের পরিসীমা অর্জনের জন্য এবং এর ব্যবহার আরও স্থিতিশীল করতে কৃএিম রঞ্জক তৈরী করা হয়। সৃষ্টির শুরুতে তা ছিলো প্রাকৃতিক ডাইং কিন্তু সময়ের সাথে সাথে প্রাকৃতিক ডাইং এর সাথে যোগ হয় কৃএিম ডাইং।
প্রাকৃতিক ডাইং এর উৎসসমূহ – গাছ, গাছের পাতা, ফুল, ফল, শিকড়, বাকল, বৃক্ষের কান্ড, বীজ, ভেজিটেবল কালার ইত্যাদি।
কৃএিম ডাইং এর উৎসসমূহ – বিভিন্ন ধরনের রঞ্জক পদার্থ, পিগমেন্ট, এনিলিন, অগ্নিচূর্ণক এবং বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থ।
এছাড়াও ডাইং এর ক্ষেত্রে আরও অনেক বিস্তৃতা রয়েছে যেমন-বেসিক ডাইং, সালফার ডাইং, আ্যজোইক ডাইং, মিনারেল ডাইং, এসিড ডাইং, এনিলিন ডাইং, ডাইরেক্ট ডাইং, পিগমেন্ট ডাইং, মারডান্ট ডাইং ইত্যাদি। এসমস্ত ডাইং মূলত উল, পাট, আ্যকরিলিক, কটন,ভিসকোস, নাইলন, ডাইঃকটন ইত্যাদি কাপড়ে ব্যবহার করা হয়।
বিভিন্ন ধরনের রঞ্জক বিভিন্ন ধরনের ফাইবারের জন্য এবং টেক্সটাইল উৎপাদন প্রক্রিয়াটির বিভিন্ন পর্যায়ে সুতা এবং কাপড়ের মাধ্যমে আলগা তন্তু থেকে সম্পুর্ণ পোশাক পর্যন্ত ব্যবহার করা হয়। আ্যকরিলিক ফাইবার গুলি মৌলিক বর্নের সাথে মিশে রঙীন হয়। অন্যদিকে নাইলন এবং প্রোটিন ফাইবার,যেমন-উল এবং সিল্কের সাথে এসিড রঞ্জকযুক্ত রঙ হয় এবং পলিয়েস্টার সুতা ছড়িয়ে ছিটিয়ে রঙীনজাত করা হয়। তুলার বিভিন্ন রঙের ধরনের সাথে ভ্যাট রঞ্জক এবং আধুনিক সিন্থেটিক প্রক্রিয়াশীল এবং প্রত্যক্ষভাবে ডায়াগুলিসহ রঙিন হয়।
স্বাভাবিক ভাবে প্রত্যেকটি টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিগুলোতে টেক্সটাইল সামগ্রীকে ডাইং বা রঙিনজাত করা হয় এই উদ্দেশ্য যে,
(১) সাদা কাপড় কে রঙিনজাত করার জন্য ডাইং করা হয়।
(২)ক্রেতার নিকট কাপড় কে অধিক আকর্ষনীয় করে তোলার জন্য।
(৩)কাপড় কে আরও উজ্জ্বল করার জন্য।
(৪)কাপড়কে বাজারজাত এর পর তা উর্ধ্বমূল্যে বিক্রয় করার জন্য।
পরিশেষে, সমাপ্তি টেক্সটাইল পর্যবেক্ষন বা পোশাকের পারফরমেন্স দেখে তা আরো উন্নত করতে সুতা বা কাপড় রঙিন জাত করার পর পরবর্তী প্রক্রিয়া সম্পাদন করা হয়।
Writer information:
Riyad Haque Akash
Textile Engineering , Batch:201
BGMEA University of Fashion And Technology