তামাক এবং তুলা বহু আগে থেকেই চাষ হয়ে আসছে এদেশে। আজকে আমরা জানবো বস্ত্রশিল্পে তামাক এবং তুলা চাষের গুরত্বের কথা :
✅ তামাক ও তামাকজাত পণ্য উৎপাদনকারী কোম্পানীগুলো থেকে প্রতিবছর সরকারের যে রাজস্ব আদায় হচ্ছে পরোক্ষভাবে তার চেয়ে বেশী খরচ হচ্ছে তামাকজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীদের দীর্ঘমেয়াদী চিকিৎসা ও অন্যান্য আনুষাঙ্গিক ব্যয়ের জন্য। তামাক সেবনের কারণে ক্ষতিকর প্রভাব পড়ছে জিডিপিতেও।
বিবিসির প্রতিবেদন থেকে নেয়া “রাজস্ব বনাম আর্থিক ক্ষতি” পরিসংখ্যান টি তুলে ধরা হলো।
“NBR এর তথ্যমতে ২০১৮ সালে তামাক ও তামাকজাতীয় পণ্য থেকে সরকারের আয় প্রায় ২৭ হাজার কোটি টাকা। যার সিংহভাগই আসে এক ব্রিটিশ আমেরিকান টোবাকো থেকে। অন্যদিকে তামাক ব্যবহারজনিত মৃত্যু ও অসুস্থতায় বছরে ৩০ হাজর ৫৬০ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়। যা তামাক খাত থেকে অর্জিত রাজস্ব আয়ের থেকেও অনেক বেশী অর্থাৎ প্রতি বছর নিট ক্ষতির পরিমান প্রায় ৩.৫ হাজর কোটি টাকা।”
বস্তুত এই ক্ষতির পরিমান আরোও বেশী । কৃষি বিভাগ থেকে কৃষকদের তামাকচাষে নিরুৎসাহিত করার জন্য মাঝে মধ্যেই সভা-সেমিনারের আয়োজন করা হলেও বাস্তবে কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না।
✅ প্রশ্ন থেকে যায় এরপরও কেন কৃষকেরা তামাক চাষে ঝুঁকে পড়ছেন ?
প্রচলিত ফসল উৎপাদন করে কৃষক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। নায্যমূল্য পাচ্ছে না উৎপাদিত শস্যের। তাই এক প্রকার বাধ্য হয়েই তামাক চাষে জড়িয়ে পড়ছে কৃষকেরা। তামাক চাষ করলে কারো কাছে ধরনা দিতে হচ্ছে না। বরং তামাক কোম্পানীগুলোই কৃষকের বাড়ি এসে ধরনা দিচ্ছে, দিচ্ছে নানা রকম সুযোগ সুবিধা। আর ক্ষতিটা এখানেই।
অন্যদিকে রপ্তানি আয়ের ৮৫ শতাংশ আসে যে পোশাক শিল্প থেকে, তার প্রধান কাঁচামাল তুলা। বাংলাদেশে প্রতিবছর যে পরিমান তুলা উৎপাদিত হয়, তা জাতীয় চাহিদার মাত্র ৩ শতাংশ। বাকীটা বাহিরে থেকে আমদানী করা হয়, যার বাজার মূল্য প্রায় ১২০০০ কোটি টাকা। দেশের অর্থ দেশেই রাখা এবং কৃষকদের তামাক চাষ থেকে বিরত রাখতে
সরকার ২০১৪ সালে দেশের ৪৬ টি জেলার মোট ১৪৯ টি উপজেলায় তুলা চাষ প্রকল্প হাতে নেন। যার প্রকল্প ব্যয় ধরা হয় ১২০ কোটি টাকা এবং বাস্তবায়ন কাল ছিলো জুলাই ২০১৪ থেকে ২০১৮ সাল নাগাদ।
✍ প্রকল্পের লক্ষ্য সমূহ :-
১. কৃষকদের তামাক চাষ থেকে ফিরিয়ে আনা
২. কৃষকদের তুলা চাষে উৎসাহিত করে পোশাক শিল্পের কাঁচামাল (তুলা) দেশেই উৎপাদন করা।
৩. তুলা উন্নয়ন বোর্ডের সক্ষমতা বাড়িয়ে তুলা উৎপাদন বাড়ানো।
৪. তুলা আমদানি নির্ভরতা কমানো।
বস্ত্রশিল্পে প্রায় ৫০ লাখ জনবল রয়েছে। কিন্তু প্রয়োজনীয় কাঁচামালের অভাবে এই শিল্প আজ নানা সমস্যায় জর্জরিত। এর প্রধান কারণ দেশের চাষিদের একটা অংশ তামাক চাষে অত্যধিক ঝুঁকে পড়েছে।সুতরাং প্রকল্পটি দ্রুত বাস্তবায়ন করা হলে একদিকে বস্ত্রশিল্প যেমন প্রাণ ফিরে পাবে, অপরদিকে দেশে তুলা চাষেও বিপ্লব সৃষ্টি হবে। এক্ষেত্রে সরকারের পাশাপাশি টেক্সটাইল গ্রুপ / ইন্ডাস্ট্রি গুলো কৃষকদের পাশে দাড়ালে খুলে যেতে পারে সম্ভাবনার দ্বার।
🏷তথ্যসূত্র: বিবিসি,কৃষি বাতায়ন, বাংলানিউজ২৪. কম, কৃষি তথ্য সার্ভিস
Writer Information :
Ahmed Ronju
TEAM TES-DWMTEC
Apearel Engineering
1st Batch
Dr. M A Wazed Miah Textile Engineering College