বাঁশ নামক ঘাস জাতীয় উদ্ভিদটিকে আমরা সবাই চিনি। গ্রাম অঞ্চলে বাঁশের ব্যবহার সর্বত্র। পোশাক শিল্পেও বাঁশের ব্যবহার উল্লেখ যোগ্য। যাকে টেক্সটাইল এর ভাষায় বলে বাম্বো ফাইবার।
কাষ্ঠল চিরহরিৎ উদ্ভিদ বাঁশ আসলে ঘাস পরিবারের সদস্য। ঘাস পরিবারের এরা বৃহত্তম সদস্য। বাঁশ গাছ সাধারণত একত্রে গুচ্ছ হিসেবে জন্মায়। এক একটি গুচ্ছে ১০-৭০/৮০ টি বাঁশ গাছ একত্রে দেখা যায়। এসব গুচ্ছকে বাঁশ ঝাড় বলে।
পরিবেশবান্ধব বস্ত্রশিল্পের বিপ্লব শুরুর পেছনে মুখ্য ভূমিকায় ছিল বাঁশ। এর উৎপাদন প্রক্রিয়া দ্রুত ও খরচ কম। সবচে বড় কথা হলো বাঁশের চাষে কোনো কীটনাশকের প্রয়োজন নেই। তাই এর ফেব্রিকস নিরাপদ। এর ফেব্রিকস অনেকটা সিল্কের মতোই। এছাড়াও বাঁশ থেকে একটি কেমিক্যাল compound সনাক্ত করা হয়েছে যেটা সূর্যের ক্ষতিকারক রশ্মি থেকে রক্ষা করবে মানুষকে। বিশেষভাবে এটা অস্ট্রেলিয়ার জন্য ভীষণ প্রয়োজন – যেখানে স্কিন ক্যান্সারের মাত্রা অপেক্ষাকৃত অনেক বেশি।
এছাড়াও বাঁশের ফাইবার ন্যাচারাল, যা তুলার বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা যাবে; কিন্তু তুলার চাইতে অনেক বেশি কিছু দিতে পারবে – যেমন UV থেকে প্রতিরক্ষা, ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধ গুণাগুণ (antimicrobial property), তাৎক্ষনিক আদ্রতা শোষণ (instant moisture absorption) বা পরিশোষণ গুণাগুণ (wicking property)। বাঁশ একটা দারুন গাছ।তাছাড়াও বাঁশ গাছের দ্রুত বৃদ্ধি তো আছেই। বাঁশ প্রতি দিন গড়ে ৪ ফুট বৃদ্ধি পায়!ইহা অনাবৃষ্টি অবস্থা এবং বন্যা অবস্থায় বেচে থাকতে পারে।
প্রকিয়াজাত করনঃ
ব্যাম্ব ফেব্রিক প্রক্রিয়াজাতকরণে কিছু বিশেষ ব্যাবস্থার প্রয়োজন হয় যাতে এটি একটি পরিবেশবান্ধব ফেব্রিক হিসেবে তৈরি হয় । বাঁশ ফাইবারকে ৩০% তুলার সাথে মিশিয়ে ব্লেন্ড করা বাধ্যতামূলক। পরিবেশের উপর এর প্রভাবের কথা মাথায় রেখে বাঁশ গাছকে কাপড়ে পরিনত করতে মেকানিক্যাল মেথডে বাঁশ কে চাপে মুচড়ে ফেলে নরম মুণ্ডে(pulp)এ পরিনত করা হয় ।বাঁশের মুন্ড তৈরি করে এই মেকানিক্যাল মেথডটি কম ক্ষতিকর কিন্তু ব্যায়বহুল ।তাই অনেক ক্ষেত্রে কেমিক্যাল মেথডটি প্রয়োগ করা হয় ।কেমিক্যাল মেথড কম বযায়বহুল কিন্তু পরিবেশ ও ওয়ার্কারদের জন্য ক্ষতিকারক ।সাধারণত ব্যাম্ব ফাইবার প্রস্তুতিতে একটি নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ঠাণ্ডা পানিতে লঘু সোপ দ্বারা ফেব্রিককে ধুয়ে করে নেয়া হয় । কিন্তু ফেব্রিক সফেনার বা ব্লিছিং এজেন্ট সাধারণত ব্যাবহার করা হয় না ।
ভিন্ন ভিন্ন ধরনের ফেব্রিক তৈরির লক্ষ্যে ল্যাক্রা,পলি এস্টার,স্পান্ডেক্স ইত্যাদি অন্যান্য ফাইবারের সাথে প্রায়শই একে ব্লেন্ড করা হয়ে থাকে।
বাঁশের ফাইবার সম্পর্কে কিছু তথ্য
- বাঁশের ফাইবার খুব নরম, চমৎকার বিস্ময়করতা সঙ্গে সিল্ক মত মনে হয়।
- বাঁশের ফাইবার আর্দ্রতা absorbing হয়।
- বাঁশের ফাইবার প্রাকৃতিকভাবে এন্টি ইউভি, বাঁশের কাপড় সূর্যালোকের ঘন্টা থেকে আপনাকে রক্ষা করতে পারে।
- বাঁশের ফাইবার মাইক্রোবিয়াল প্রতিরোধক, এটি আপনাকে odors ঘটতে এড়াতে সাহায্য করবে।
- এটি খুব breathable, ঘাম মুক্তি এবং দ্রুত শুকনো হয়। এটা গ্রীষ্মে পরতে মহান। এটা আপনাকে শান্ত রাখা হবে।
টেক্সটাইল শিল্পে – বুলেট-প্রুফ পোশাক, মোজা, কম্বল, ম্যাট্রেস, শিশুদের ডায়াপার, পোশাক, তোয়ালে, বালিশ, ইত্যাদি প্রস্তুত করতে বাঁশের ব্যবহার হচ্ছে।
তথ্য ও ছবি: উইকিপিডিয়া
Fouzia Jahan Mita
NITER 10th Batch