রাজনৈতিক অস্থিরতা, সরকার পতন এবং শ্রমিক অসন্তোষের জেরে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের ক্রয়াদেশের একটা অংশ প্রতিবেশী বিভিন্ন দেশের বাজারে চলে যাবার ঘটনায় উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে।এ পরিস্থিতিকে দেশের সবচেয়ে বড় রপ্তানি খাতের জন্য গভীর সংকট হিসেবে দেখা হচ্ছে।
‘নো এক্সিট ‘ নামের প্রতিষ্ঠানের একজন পরিচালক সৈয়দ মোহাম্মদ জাকির বিদেশি বিভিন্ন ব্রান্ডের ক্রেতা এবং বাংলাদেশের পোশাক কারখানার মধ্যে মধ্যস্থতাকারী।তিনি জানিয়েছেন সময়মতো শিপমেন্ট করতে না পারায় তাদের একটি ক্রেতার নব্বই শতাংশ ক্রয়াদেশ ভারতে চলে গেছে। তিনি আরও জানিয়েছেন যে আমরা যদি পরিস্থিতি উন্নয়ন করতে পারি ক্রেতারা আবার ফিরে আসবে।
“আমার অনেক গুলো অর্ডার ইন্ডিয়াতে প্লেস হয়ে গেছে।যে কাস্টমার আমার এখানেই কাজ করতো তাঁর অর্ডার গুলো সে ইন্ডিয়াতে প্লেস করেছেন শিপমেন্ট ও ডেলিভারি ইস্যুর কারণে।
বাংলাদেশের বড় বড় পোশাক কারখানা গড়ে উঠেছে এমন অঞ্চলের মধ্যে আশুলিয়া, সাভার এবং গাজীপুর এলাকায় সমস্যা সবচেয়ে বেশি দেখা গেছে। শ্রমিক অসন্তোষ এবং উত্তেজনার এক পর্যায়ে যৌথবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে একজন শ্রমিক নিহত হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে।
ক্রমাগত পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে বলা হলেও সেটি যে পুরোপুরি স্বাভাবিক নয় সেটি স্পষ্ট। বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি বিজিএমইএ’র সাবেক সভাপতি রুবানা
হক বর্তমান পরিস্থিতিকে পোশাক খাতের জন্য একটা বড় ধাক্কা হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
তিনি বলেন,১২ থেকে ১৫ দিন প্রচুর ফ্যাক্টরি বন্ধ থেকেছে। একেবারে বন্ধ।কেউ কেউ আবার দুপুর পর্যন্ত ফ্যাক্টরি চালাতে পেরেছেন এরপর পারেননি। এগুলোতে পুরোটাই লস।আর এর চাইতে বড় লস যেটা,সেটা হলো আমাদের যাঁরা ক্রেতা তাঁরা তো সরে যাচ্ছেন। তাঁরা বলেছেন যে আমরা তোমাদের সাথে আছি, বাংলাদেশ কে লাগবে,সবই বলেছেন, কিন্তু আমরা তো এটার বাস্তবতা জানি। বাস্তবতাটা হলো অন্তত শতকরা ২৫-৩০ ভাগ অর্ডার ডিসেম্বরের মধ্যে সরে যাবে। এবং বিভিন্ন দেশে চলে যাচ্ছে,ক্যাম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম,ভারত, পাকিস্তান যাচ্ছে, এমনিক মিয়ানমারে চলে যাচ্ছে।
পোশাক খাতের সমস্যা তুলে ধরা নিয়ে একটি সংকট রয়েছে বলেও মনে করেন রুবানা হক
কারখানা বন্ধ হচ্ছে গত জুলাইয়ের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী ঘটনা প্রবাহ এবং গত তিন সপ্তাহের বেশি সময় ধরে গাজীপুর, সাভারের কিছু এলাকায় শ্রমিক অসন্তোষ শিল্পকে নতুন করে কঠিন পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিয়েছে।এ পরিস্থিতিতে আগামী মাসে বেতন পরিশোধে কিছু কারখানা সমস্যায় পড়তে পারে,যা নতুন করে অসন্তোষ উস্কে দেবে বলে আশঙ্কাও করা হচ্ছে।
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী,গত ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পোশাক কারখানাসহ ৭০টি শিল্প আগষ্ট মাসের বেতন দিতে পারেনি।
শুধুমাত্র গত দুই সপ্তাহে,ক্রনি গ্রুপ এবং বার্ডস গ্রুপের মতো প্রধান গ্রুপ গুলো তাদের কারখানা বন্ধ করে দিয়েছে,যা পরিস্থিতির তীব্রতাকেই তুলে ধরেছে।
হারাচ্ছে মুনাফা যোগ্যতা
কেবল ছোট পুঁজির কারখানা নয়, অপেক্ষাকৃত বড় কারখানাও হওয়ার ঝুঁকিতে পড়েছে এমনকি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। ইউটিলিটি সংকট ও অর্ডার কমতে থাকায় অনেকেই লোকসান দিতে শুরু করেছে।
রাজধানীর অদূরে নারায়ণগঞ্জে ফতুল্লাহ অ্যাপারেলস লিমিটেড ২০২৩-২৪ অর্থবছরে লোকসান গুনেছে ৩ কোটি ৬২ লাখ টাকা। কারণ উৎপাদনের খরচ বাড়লেও – বায়াররা যে দামের প্রস্তাব দিচ্ছে, তাতে মুনাফা দূরে থাক,খরচও পোষাচ্ছে না। এতে একের পর এক অর্ডার মিস করতে থাকে প্রতিষ্ঠানটি। যার কারণে লোকসান গুনতে হয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফজলে শামীম এহসান বলেন,’ এ সময়ে ডলারের বিপরীতে টাকা ডিভ্যালুয়েশন ( অবমূল্যায়ন) হওয়ার ফলে প্রাপ্ত গেইন এবং সরকারের ইনসেনটিভ ( প্রাণোদনা) ক্যালকুলেশন করার পরও লোকসানের এই অঙ্ক দাঁড়িয়েছে।
পড়তি দশা দেখছেন ব্যাংকারাও
পোশাক রপ্তানির ব্যাক টু ব্যাক এলসি বা কাঁচামাল আমদানির প্রক্রিয়ায় যুক্ত ব্যাংকাররাও সাম্প্রতিক সময়ে পোশাক প্রস্তুতকারকদের মুনাফায় পতনের কথা জানিয়েছেন।
কমেছে মুনাফা
দেশের শীর্ষ একজন পোশাক রপ্তানিকারক বলেন ‘ সাধারণত পোশাক কারখানায় বিনিয়োগের রিটার্ন হিসাব করা হয় তিন থেকে চার বছর ধরে নিয়ে,আর নিট প্রফিট মার্জিন ধরা হয় ৬ থেকে ৯ শতাংশ।এক সময় আমারও এই হারে প্রফিট করতেও পারতাম। কিন্তু,বর্তমানে কেউই এই হারে প্রফিট করতে পারছে বলে মনে হয় না।’
‘ আমার প্রফিট নেমে এসেছে ২.৫ শতাংশে’ – বলেন ১৫ হাজার শ্রমিকের ওই কারখানার মালিক।
ঋণ খেলাপি হওয়ার আশঙ্কা
উদ্যোক্তাদের বেশিরভাগই জানিয়েছেন, ব্যাংকে তাঁদের দায় বাড়ছে পরিস্থিতির দ্রুত উন্নতি নাহলে – আগামী মাসগুলোতে একদিকে শ্রমিকের বেতনের চাপ বাড়বে, অন্যদিকে ব্যাংকের ঋণ পরিশোধের চাপ বাড়তে পারে। ফলে দ্বিমুখী চাপ তৈরি হয়ে খেলাপির সংখা বাড়তে পারে।
মোহাম্মদ হাতেম বলেন, এতো দিন নিয়ম ছিল কেউ ৬ টি কিস্তি পরিশোধের ব্যর্থ হলে খেলাফি হতো। সেপ্টেম্বর থেকে ৩ কিস্তি শোধে ব্যর্থ হলে খেলাফি গণ্য হবেন।’
‘ সামনে কঠিন সময় অপেক্ষা করছে ‘- জানিয়ে তিনি বলেন,’ আমিও হয়তো খেলাপিতে পরিণত হতে পারি।’
মুদ্রার অবমূল্যায়নের সুবিধা বায়ারদের পকেটে ?
গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের সম্মানীয় ফেলো অধ্যাপক মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, পোশাক রপ্তানিকারকদের কিছু সমস্যা সম্প্রতি বেড়েছে।
তিনি বলেন,’ দুই বছরে মার্কিন ডলারের বিপরীতে টাকার মান অবনমন হয়েছে ৩৫ শতাংশ।এই সুবিধা পাওয়ার পরও কেন রপ্তানিকারকরা খারাপ অবস্থায় যাবে? তাহলে এই সুবিধা কি বিদেশি বায়ারের পকেটে যাচ্ছে?’
শ্রমিক অসন্তোষ কেন ?
সরকার পতনের পর বাংলাদেশে পোশাক খাতে এক ধরনের অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। প্রায় প্রতিদিনই আশুলিয়া, সাভার এলাকায় গার্মেন্টস শ্রমিকদের আন্দোলনের খবর পাওয়া যাচ্ছে। কারখানা বন্ধ থাকায় একটা বড় সময় ব্যহত হয়েছে উৎপাদন। সময়মতো পাঠানো যায়নি পণ্য যার বিরূপ প্রভাব নিয়ে উদ্বিগ্ন সবাই।
শ্রমিক অসন্তোষ নিরসনে মালিক-শ্রমিকদের মধ্যে ১৮ দফা চুক্তি হয়েছে। সব কারখানায় এই চুক্তি বাস্তবায়ন শুরু হয়নি। এটাও একটা কারণ। গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সহসভাপতি জলি তালুকদার বলেন, অবিলম্বে এই চুক্তি বাস্তবায়ন করতে সরকারকে পদক্ষেপ নিতে হবে।
“মালিক, ঝুট ব্যবসায়ী যারা এলাকায় ষড়যন্ত্র করছে তারা যেন সেটা বন্ধ করে। সেই কথাটাই আমরা জোর দিয়ে বলছি যে আঠারো দফার চুক্তি হয়েছে সেটার বাস্তবায়ন যেন দ্রুত করে। সবগুলো ফ্যাক্টরিতেই যেন দ্রুত বাস্তবায়ন হয়।”
মালিক পক্ষের দিক থেকেও এই অস্থিরতার পেছনে বাইরের ইন্ধন বা একটা ষড়যন্ত্রের অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে রুবানা হক বলেন, কোনো পোশাক খাতে অস্থিরতার মূল কারণ খতিয়ে দেখতে হবে সরকারকে।
“একেবারে নিঃসন্দেহে বাইরের ইন্ধন আছে এবং এর পেছনে কেউ না কেউ কাজ করছে। এখন এই শর্ষের ভূতটা কে, এটাতো বার করতে পারা আমাদের পক্ষে সম্ভব না। কারণ আমরা শুধু শ্রমিক-মালিক সম্পর্কটা দেখতে পারি, এর পেছনে কাজ করতে পারি, নিজের ফ্যাক্টরিতে যেতে পারি কথা বলতে পারি। কিন্তু বাইরে কে আছে এটাতো দেখতে পারবো না। এটি সরকারকে দেখতে হবে।”
সংকট দীর্ঘায়িত এবং জটিল হবার পেছনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঘাটতি ও সমন্বয়হীনতা একটা কারণ বলে অনেকে মনে করছেন। সরকার পতনের পর পুলিশ একটা বড় সংকটের মধ্যে দিয়ে গেছে। শিল্প পুলিশ, গোয়েন্দা মিলিয়ে যেভাবে সমন্বিতভাবে তৎপরতা চালাতো সেখানে একধরনের ঘাটতি দেখা দেয়। এখনও শিল্প পুলিশ বিভিন্ন জেলা থেকে এসে আশুলিয়া সাভার এলাকায় দায়িত্ব পালন করছে।
বিজিএমইএ কী বলছে ?
সরকার পতনের পর বাস্তবতা হলো বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি বিজিএমইএ’র নেতৃস্থানীয় অনেকেই নিরুদ্দেশ। ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে এখন দায়িত্ব পালন করছেন আব্দুল্লাহ হিল রাকিব।
পরিস্থিতি নিয়ে তিনি বলেন, এতদিন অনেকেই প্রকাশ করতে পারেনি। যার যত পুঞ্জিভূত ক্ষোভ এখন প্রকাশ করছে।
“আমি বলবো যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সমন্বয়ের স্কোপ রয়ে গেছে। স্বদিচ্ছা সবারই আছে। চেষ্টা করছে। আর্মি ইজ গিভিং দেয়ার বেস্ট। এখানে আসলে উচিৎ সরকারকে আরো একটু কঠোর ভূমিকা পালন করা। আমরা কথা বলছি, তারাও হয়তো চেষ্টা করছেন।”
পোশাক খাতে অস্থিরতার প্রভাব সম্পর্কে মি. রাকিব বলেন এটারতো একটা ইকনোমিক লস আছেই। প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ প্রভাব রয়েছে।
“ডিরেক্ট ইমপ্যাক্ট হচ্ছে এই অর্ডারগুলো যেগুলো বিলম্ব হচ্ছে সেগুলো এয়ার শিপমেন্ট করতে হবে, ডিসকাউন্ট দিতে হবে, কাস্টমারের ক্ষতি হবে। আর ইনডিরেক্ট ইমপ্যাক্ট হচ্ছে এই যে নিউজটা এটা কাস্টমারের মাইন্ডসেট বা ডিসিশনে চেঞ্জ আনতে পারে। ব্র্যান্ডেড কাস্টমারদের সঙ্গে আমরা কথা বলছি। তারা সবাই আমাদের কনফিডেন্স দিচ্ছেন, এখন পর্যন্ত কিন্তু এটা কতদিন থাকবে জানি না।”
বিজিএমইএ ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এও মনে করেন যে বর্তমানে যেসব কারখানা আক্রান্ত আছে সেটা সংখ্যা বিবেচনায় নগণ্য।
“এটাও সত্য যে এটা আসলে এক পার্সেন্টেরও কম, আমাদের টোট্যাল নাম্বারের তুলনায়।”
তবে পোশাক খাতের অনেক ব্যবসায়ী মনে করেন প্রকৃত সংকট আরো গভীর। এছাড়া সংগঠনের ভূমিকা নিয়েও কারো কারো প্রশ্ন রয়েছে।
এ ব্যাপারে আব্দুল্লাহ হিল রাকিব বলেন, “আমাদের সাধারণ সদস্যরাই মনে করেন যে বিজিএমইএ সমস্যা সমাধানে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে। আপনি যদি দু’সপ্তাহ আগের অবস্থা দেখেন আর এখনকার সিচুয়েশন, অনেক উন্নতি হয়েছে। যত দ্রুত আমরা এই সিচ্যুয়েশনটা ডিল করতে পারবো, তত দ্রুত কাস্টমারদের কনফিডেন্স লেভেল ব্যাক করবে।”
শ্রম মন্ত্রণালয় কী বলছে ?
বাস্তবতা প্রতিদিনই কোনো না কোনো কারখানায় মজুরি বকেয়া, ছাঁটাইসহ বিভিন্ন সমস্যার কারণে ঝামেলা লেগেই আছে। সরকার এখন কারখানাভিত্তিক সমস্যা ধরে সমাধানের উদ্যোগ নিচ্ছে। যৌথবাহিনীর আশুলিয়া সাভার এলাকায় বেশ তৎপর হয়েছে। কোথাও কোনো কারখানায় সমস্যা হলে গিয়ে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করছে।
পোশাক কারখানায় শ্রমিকদের শান্ত রাখতে শিল্প পুলিশ, র্যাব, বিজিবি এবং মালিক-শ্রমিক এবং ট্রেড ইউনিয়নের তৎপরতার মূল বার্তা হলো কোনোভাবেই শ্রমিক অসন্তোষ যেন বড় না হয়। ছড়িয়ে না পড়ে।
শ্রম উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া বিবিসি বাংলাকে বলেন, শ্রমিকদের দাবি মেনে নিয়ে সরকার কাজ শুরু করেছে। আঠারো দফা বাস্তবায়নে পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। যেসব কারখানায় বকেয়া বেতন রয়েছে সেখানে প্রয়োজনে সরকার ঋণ দিয়ে বেতন ভাতা পরিশোধের ব্যবস্থা নিচ্ছে।
“সর্বোচ্চ কনসালটেশনের মাধ্যমে এই সমস্যাগুলো সমাধান করতে চাই। এবং সমাধান করে আসছি। ঝুট ব্যবসা নিয়েও আমরা কাজ করছি, কীভাবে কেন্দ্রীয়ভাবে এটাকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এটাকে কেন্দ্র করে যে রাজনৈতিক সহিংসতা সেখানে হয়, প্রতিবারই ট্রানজিশনের সময়, সেটাকেও নিয়ন্ত্রণ করা যায়। তো সার্বিক বিষয়টাকে আমরা এড্রেস করছি। আর নিরাপত্তার বিষয়টা সময়ের সাথে সাথে আরো উন্নতি করবে। এখন বিজনেসম্যানরা মোটামুটি একটা কনফিডেন্সে এসেছে যে নিরাপত্তাটা আমরা দেয়ার চেষ্টা করছি।”
পোশাক খাতে অস্থিরতা নিরসন না হলে এর প্রভাব পড়বে দীর্ঘমেয়াদে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন পরিস্থিতি সামাল দিতে না পারলে বড় ক্ষতির মুখে পড়বে দেশ।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের গবেষণা পরিচালক ড. গোলাম মোয়াজ্জেম বিবিসি বাংলাকে বলেন, মজুরি কাঠামো বাস্তবায়ন, মালিক-শ্রমিক সম্পর্ক উন্নয়ন ঘটিয়ে দ্রুত এই অস্থিরতা নিরসন জরুরি।
“আমাদের আসলে ক্ষতি অনেক বড়ই বলতে হবে। ক্ষতি এই অর্থে যে আমাদেরতো শুধু কারখানার অর্ডার এবং শ্রমিকের মজুরি না এই মুহূর্তে আমাদের জন্য বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে যেখানে সবসময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে- রপ্তানি ও রেমিট্যান্স। সেদিক থেকে আমাদের জন্য কারখানা পর্যায়ে স্থিতিশীলতা ফিরে আসা, এটা কিন্তু খুবই গুরুত্বপূর্ণ।”
তৈরি পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বে দ্বিতীয়। এ অবস্থান ধরে রাখা এবং প্রবৃদ্ধি ও উন্নতির জন্য শ্রমিক অসন্তোষের স্থায়ী সমাধানে কাজ করা এবং দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে ব্যবস্থা নেয়ার কোনো বিকল্প নেই, একথা সবাই বলছেন।