আজকে আমরা জানবো এমন একটি পোশাক সম্পর্কে যা সম্পূর্ণ তৈরি হতে সময় লেগেছে এগারো বছর। আপনারা ভাবছেন ভুল লিখলাম নাতো? না, একদম ঠিক লিখেছি। দ্যা রেড ড্রেস শুধু একটি পোশাক না এটি একটি প্রকল্প যা নিয়ে কাজ করতে সময় লেগেছে এগারো বছর। এই প্রকল্পটির জন্য সহায়তা প্রদানে বিভিন্ন দাতব্য সংস্থা কাজ করেছে। এই প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত ছিল স্ব-সহায়ক উন্নয়ন প্রকল্প, সামাজিক উদ্যোগ এবং দারিদ্র নারীদের সহায়তা প্রদানের বিভিন্ন উদ্যোগ সহ আরো অনেক নারী উন্নয়ন মূলক উদ্যোগ সমূহ।
এই রেড ড্রেস হচ্ছে বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন সংস্কৃতির নারী সূচিকর্মীদের হাতে বোনা একটি লাল পোশাক যাতে বোনা হয়েছে তাদের নিজস্ব গল্প, নিজস্ব সংস্কৃতি, নিজস্ব পরিচয়।চলুন জেনে নেয়া যাক এই পোশাক এর বিস্তারিত।
ব্রিটিশ শিল্পী কিরস্টি ম্যাকলিয়ড (Kirstie Macleod) চেয়েছিলেন রেড ড্রেস প্রজেক্ট বিশ্বজুড়ে মহিলাদের জন্য একটি শৈল্পিক প্ল্যাটফর্ম হবে যার মাধ্যমে বেশিরভাগ প্রান্তিক এবং দারিদ্র্যে জীবনযাপন করে এমন নারীরা সূচিকর্মের মাধ্যমে তাদের ব্যক্তিগত গল্পগুলি তুলে ধরবে এই ভাবনা নিয়েই তার পথ চলা।
১১ বছর ধরে, ২০০৯ থেকে ২০২০ পর্যন্ত রেড ড্রেস বিশ্বজুড়ে ভ্রমণ করেছিল, ক্রমাগত সূচিকর্মযুক্ত ২৮ টি দেশ থেকে ২০০ জন মহিলা এবং ২ জন পুরুষ দ্বারা এই সূচিকর্ম করা হয়েছে।সমস্ত কারিগরদের তাদের কাজের জন্য অর্থ প্রদান করা হয়েছিল। সূচিকর্মীদের মধ্যে ফিলিস্তিনের মহিলা শরণার্থী অন্তর্ভুক্ত; কসোভো, রুয়ান্ডা এবং ডিআর কঙ্গোয় গৃহযুদ্ধের শিকার; দক্ষিণ আফ্রিকা, মেক্সিকো এবং মিশরের দরিদ্র মহিলাদের; কেনিয়া, জাপান, প্যারিস, সুইডেন, পেরু, চেক রিপাবলিক, দুবাই, আফগানিস্তান সহ আরও অনেক দেশের মহিলা সূচিকর্মীরা এই কাজে অংশ নিয়েছিলেন।
বেশিরভাগ মহিলাই দক্ষ সূচিকর্মী।তারা এমব্রয়ডারি মাধ্যমে নিজের গল্প, নিজস্ব পরিচয় প্রকাশ করে এবং নিজস্ব সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও অভিজ্ঞতা ফুটিয়ে তোলে সূচের প্রতিটি ফোড়ের মধ্য দিয়ে। কেউ কেউ তাদের পরিবার, গ্রামে বা শহরে কয়েকশ বছর ধরে প্রচলিত একটি নির্দিষ্ট ধরণের সূচিকর্ম ব্যবহার করে তৈরি করেছেন শিল্পকর্ম।
প্রারম্ভিকভাবে প্রকল্পটি বিভিন্ন দেশ ও সীমানা অতিক্রম করে বিভিন্ন সংস্কৃতিকে সংযুক্ত করে সূচিকর্মের মাধ্যমে পরিচয়ের একটি সংলাপ তৈরি করার চেষ্টা করেছে।মহিলাদের জন্য তাদের ব্যক্তিগত ও সংগ্রামের গল্প আত্ম-প্রকাশের একটি সুযোগ ছিল এই লাল পোশাক।কিছু মহিলারা জীবনধারণের জন্য তাদের দক্ষতা ব্যবহার করে বা সূচিকর্ম প্রশিক্ষণ নিয়ে প্রশিক্ষিত হয়ে সূচিকর্মের সাহায্যে তাদের জীবন জীবিকা নির্বাহ করছেন।
লাল রেশমের পোশাকটিতে যতো সূচের ফোড় দেয়া হয়েছে ততই ভিন্ন ভিন্ন জীবনের গল্প দ্বারা এটি শোভিত হয়েছে।লক্ষ লক্ষ সেলাইয়ের এই লাল পোশাকটি ছিল ৬.২ কেজি ওজনের।
প্যারিসের গ্যালারী মেঘট, আর্ট দুবাই, মেক্সিকো সিটির মিউজিও ডেস আর্ট পপুলার, লন্ডনের রয়্যাল একাডেমির একটি অনুষ্ঠান এবং ইতালির ম্যানিয়াগোতে প্রিমিও ভেলসেলিনা টেক্সটাইল অ্যাওয়ার্ড সহ বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন গ্যালারী এবং যাদুঘরে লাল পোশাকটি প্রদর্শন করা হয়েছিলো।
Information collected from : https://reddressembroidery.com/
Writer information :
Mariam Bibi Goon Nahar
Department of Cothing & Textile, 1st year
Bangladesh Home Economics College