সময়ের সঙ্গে আমরা প্রতিনিয়ত নিজেকে যেমন পরিবর্তন করছি সাথে সাথে পরিবর্তন করছি নিজের চারপাশের অবস্থা এবং নিজেদের প্রতিষ্ঠান।সবকিছু আধুনিক করতে গিয়ে আমরা পরিবেশকে হুমকির মুখে ফেলে দিচ্ছি প্রতিনিয়ত।জেনে না জেনে অনেক প্রতিষ্ঠান ইচ্ছা বা অনিচ্ছায় অনেক ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ পরিবেশে ছেড়ে দিচ্ছে। যার ফলে প্রতিনিয়ত পরিবেশ আশঙ্কাজনক ভাবে পরিবর্তন হচ্ছে।বতর্মানে অনেক পোশাক শিল্প প্রতিষ্ঠান তারা তাদের বর্জ্য পরিশোধিত না করে সরাসরি পরিবেশে ছেড়ে দিচ্ছে।বর্জ্য ফ্যাশনের একেবারে হৃদয়ে ।প্রতিবছর পোশাক শিল্প কারখানায় পোশাক ও তুলা ধৌতকরণ এবং রঙ-এর কাজে ১৫০০ বিলিয়ন লিটার পানি ব্যবহার করা হয়।পরে তা বিভিন্ন নদী বা খালের মাধ্যমে নিষ্কাশন করা হয়।এভাবে যদি চলতে থাকে তাহলে ২০৩০ সালের মধ্যে ফ্যাশন শিল্পের জন্য গ্রিনহাউজ গ্যাস এবং বর্জ্য নিঃসরণ বৃদ্ধি পাবে ৬০ শতাংশ।যেটা আমাদের জন্যে হুমকি সরূপ।ফ্যাশন খাত বিশ্বের ২০ শতাংশ বর্জ্য পানি এবং ১০ শতাংশ কার্বন ডাই অক্সাইড নিঃসরণের জন্য দায়ী। একই সঙ্গে তুলা চাষ ২০ শতাংশ কীটনাশক বস্তু এবং ১০ শতাংশ কীটনাশক উৎপাদনের জন্য দায়ী। এ খাতে মাত্র ১৫ শতাংশ বর্জ্য পুনরায় ব্যবহার করা যায়। ফলে ৮৫ শতাংশ বর্জ্যই প্রকৃতিতে সরাসরি ছেড়ে দেওয়া হয়।পোশাক সরবরাহের চেইনের 35% উপকরণ নষ্ট হয়।
দূষণের কারণে প্রকৃতির কেমন প্রভাব ফেলে তা কিছু বিষয়ের উপর লক্ষ্য রাখলে বোঝা যায়।
সুমদ্র:দূষণের ফলে অক্সিজেনের পরিমান ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে এবং অনেক প্রাণী বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে।পানির নিচে যেসব উদ্ভিদ জম্মায় তার পরিমাণ ও কমে যাচ্ছে।তার অন্যতম কারণ হলো অ্যাক্রিলিক, নাইলন এবং পলিয়েস্টার দিয়ে তৈরি আপনার সমস্ত পোশাক।যখন এই ফাইবার ধোয়া হয় তখন কয়াক মিলিয়ন ফাইবার ছিড়ে যায়।যার গন্তব্য হয় সুমদ্রে ।এর ফলে সামুদ্রিক প্রাণীর এর হুমকির মুখে।পলিয়েস্টারের উপর সবচেয়ে নির্ভর করে আমাদের ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রি।30% সমুদ্রের প্লাস্টিকের দূষণ মাইক্রোপ্লাস্টিক থেকে আসে।এগুলো হাজার হাজার বছর ধরে সুমদ্রে থাকতে পারে।15% থেকে 31% এর মধ্যে সামুদ্রিক প্লাস্টিকের দূষণ হলো গৃহস্থালী এবং শিল্পজাত পণ্যগুলির দ্বারা।
কি ভয়ঙ্কর অবস্থা!এখন যদি এইসব দূষণের পরিমান কমানোর না যায় তাহলে, ভবিষ্যতে আরো কঠিন পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে।
বায়ু:পোশাক শিল্প বিশ্বব্যাপী কার্বন নিঃসরণের 10% অবদান রাখে এবং এটি দ্বিতীয় বৃহত্তম শিল্প দূষণকারী।নাইট্রাস অক্সাইড এবং সালফার ডাই অক্সাইড বেশি নিঃসরণ হয়।যা খুব ক্ষতিকর।এছাড়া অ্যানিলিন বাষ্প, ক্যারিয়ার হাইড্রোজেন সালফাইড, ক্লোরিন এবং ক্লোরিন ডাই অক্সাইড ডাইং এবং ব্লিচিং পর্যায়ে উৎপাদিত হয়।যা কঠিন বর্জ্য হিসেবে ধরা হয়।
এছাড়া মাটি ও শব্দ দূষণ হচ্ছে এমকম প্রতিদিন।
আমাদের করণীয় : পরিবেশ বান্ধব পোশাক শিল্প করতে হলে আমাদের প্রথমে গবেষণায় মনোযোগ দিতে হবে।প্রকৌশলীদের আরো বেশী দায়িত্ববান হতে হবে। বিকল্প কাচা মাল বের করতে হবে, যেটা পরিবেশ বান্ধব।যেকোনো মূল্যে দূষণের পরিমাণ কমিয়ে আনার চেষ্টা করতে হবে সবাইকে।
পরিবেশ বান্ধব পোশাক শিল্প প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে হলে প্রথমে আমাদের অবকাঠামো গুলো পরিবেশ বান্ধব ভাবে গড়েতে হব। পুনরাবৃত্তি বর্জ্য পরিশোধন ব্যাবস্থা করতে হবেআধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে দূষণের মাত্রা কমিয়ে ফেলতে হবে।যাতে যখন এটি পরিবেশ ছাড়া হবে তখন পরিবেশের তেমন কোন ক্ষতি না হয়।একটা বিষয় খেয়াল করতে হবে আগামী দিনে যাতে এই দূষণ গুলো না হয়।এদিকে আমাদের একটু কঠোরভাবে লক্ষ্য রাখতে হবে।
সুত্র:Britannica , history, wikipedia,textile today,prothom alo.
Md.Barkat ullah
Ahsanullah University of Science & Technology
Textile (40)