Tuesday, December 3, 2024
Magazine
More
    HomeJuteপাটের তৈরি 'হরেক মাল'

    পাটের তৈরি ‘হরেক মাল’

    হঠাৎ ই শৈশবের একটি স্মৃতি মনে পড়ল। ফেরিওয়ালা নানা ধরনের জিনিস বাড়ি বাড়ি ফেরি করতো আর তারা বাড়ির সামনে এসে “হরেক মাল” বলে হাক দিত। “হরেক মাল” বলতে বোঝানো হয় বিভিন্ন ধরনের পন্য। আর পাঠ কল বন্ধ হওয়ায় পাঠ নিয়ে সবার আগ্রহ কিছুটা বেড়ে গেছে বলা চলে। এই দুই বিষয় মিলে মাথায় চিন্তা এল যে “পাটের তৈরি হরেক মাল” নিয়ে কিছু বাক্য ব্যয় করা যায় কি না!

    যেহেতু আমার শৈশবের স্মৃতি কল্পনা থেকেই আজকের এই লেখা শুরু তাই চলুন আপনাদেরও কল্পনার রাজ্য থেকে কিছুটা সফর করিয়ে আনি…

    মনে করুন একটি ড্রয়িংরুম খুব সুন্দর ভাবে গোছানো। সেখানে পাটের তৈরি সোফার কভার গুলো খুবই সুন্দর কারুকাজ করা, সামনে রাখা টেবিলটা! হুম টেবিলটাও পাটের একটা টেবিল ক্লথ দিয়ে ঢাকা। আর পায়ের তলায় যে ফ্লোর মেট রয়েছে তাও যদি হয় পাটের তৈরি তবে কেমন হয় বলুন তো! শুধু কি তাই ড্রয়িংরুমের দেওয়ালে থাকা ঘড়িটাও যদি হয় পাটের তৈরি আর তারপাশে ঝুলতে থাকে একটি পাটের তৈরি ওয়ালমেট। ড্রয়িংরুমের পাশের বারান্দাটা লক্ষ করুন না পাটের তৈরি শিকে ঝুলছে কিছু ছোট টব আর বারান্দাটায় কিছু গাছ থাকলে কে না পছন্দ করে। আর পাশেই পাটের তৈরি একটা দোলনা বা রকিং চেয়ার। এক কাপ চা আর বই নিয়ে কাটিয়ে দিল না অবসর সময়টা।

    চলুন, বেডরুমটায় একটা উকি দিয়ে আসি। বিছানার চাদর, আর বালিশের কাবার খানা যদি হয় পাটের তৈরি আর পাশে রাখা টেবিল লেম্প খানাও যদি হয় পাটের মন্দ হয় কি তাতে! আর পর্দা গুলোর দিকে এক নজর দিতেই বা দোষ কি! ওমা, তাও দেখি পাটের তৈরী।

    ভাবুন কোথাও যাচ্ছেন এক্টু ট্রেডিশনাল লুক নিয়ে যেতে চাল পরে ফেলুন না পাঞ্জাবি পায়জামা সাথে পাটের তৈরি জুতো জোড়া আর একখানা পাটের তৈরি কটি হলে কিন্তু খাসা মানাবে! আর মহিলাদের ক্ষেএে তো রয়েছে পছন্দ করে বেছে নেওয়ার জন্য এক বিশাল তালিকা। পাটের তৈরি শাড়ি, সেলোয়ার কামিজ,ওড়না, অলংকার, পার্স ইত্যাদি।

    আচ্ছা তাহলে কল্পনার রাজ্য থেকে বাস্তবে ফিরে আসি। এখন বলতে পারেন কল্পমায় তো সবই সম্ভব কিন্তু বাস্তবে কি সম্ভব। যদি বলি এতক্ষন যা কল্পনা করেছেন বাস্তবের তার সবই সম্ভব। আসলেই হতে তারে আপনার ঘরটি এমন। এ সকল পন্যই বর্তমানে তৈরি হচ্ছে। কেবল আমাদের না জানা এবং বিস্তর বাজারজাতকরণের অভাবেই পাট জাত দ্রব্যের ব্যাবহার খুবই কম হচ্ছে। পাঠ যে এখন কেবল দড়ি আর ছালার বস্তায় সীমাবদ্ধ নয় তা তুলে ধরতে হবে এবং এসব পন্য সঠিকভাবে বাজারজাতকরণের আওতায় আনতে হবে। তবেই আমাদের সোনালি আঁশের অস্তমিত সূর্য আবার উদির হবে এবং আমরা আবারো দেখতে পাবো সোনালি আঁশের, সোনালি সকাল।

    Ashik Mahmud
    Department of Textile Engineering
    National Institute of Textile Engineering & Research

    RELATED ARTICLES

    LEAVE A REPLY

    Please enter your comment!
    Please enter your name here

    Related News

    - Advertisment -

    Most Viewed