বরাবরই মানুষ নতুন্ততের পিছনে ছুটে চলে।প্রতিযোগিতার এই সময়ে সবথেকে সাশ্রয়ী এবং গুনগত দিক থেকে ভাল জিনিস টাই চায়।তার সাথে মানুষ ফ্যাশান সচেতন।সব মিলিয়ে আমাদের সেরাটাই চাই।
গ্লাস ফাইবার বা গ্লাস তন্তু বা কাচ তন্তু হল কাচের অনেকগুলো সূক্ষ্ম এবং শক্তিশালী তন্তুর সমন্বয়। গ্লাস ফাইবারের গুনাগুন অন্যান্য ফাইবারের তুলনায় একেবারেই আলাদা। এই ফাইবার এর শক্তি খুবই বেশি, তাপ প্রতিরোধক এবং সহজে জ্বলে না। কিন্তু স্ট্রেচ একেবারে কম, নাই বললেই চলে।গ্লাস ফাইবার তৈরির চিন্তাভাবনা প্রায় ১০০ বছরের পূরানো। অতি প্রাচীনকাল থেকেই কাচ নির্মাতারা সবসময়ই কাচের তন্তু নিয়ে গবেষণা করেছেন কিন্তু এর বাণিজ্যিক উৎপাদন সম্ভব হয়েছে আধুনিক এবং দ্রুত উৎপাদনশীল যন্ত্র উদ্ভাবনের পর। ১৮৯৩ সালে ওয়ার্ল্ড কলম্বিয়ান এক্সোজিশনে এডওয়ার্ড ড্রুমন্ড লিব্বি সর্বপ্রথম রেশম সুতার সাথে কাচ তন্তু মিশিয়ে একটি পোশাক বানিয়ে প্রদর্শন করেন। এটিই ছিল কাচ তন্তুর তৈরী প্রথম পরিধেয় পোশাক। এছাড়া প্রবল বাতাসে আগ্নেয়গিরি থেকে উৎপন্ন কাচ থেকেও প্রাকৃতিকভাবে কাচ তন্তু উৎপন্ন হয়।
বর্তমানে তাপ নিরোধক হিসেবে বহুল ব্যবহৃত ফাইবার গ্লাস উৎভাবন করেন রাসেল জেমস স্লেটার। এটি একটি বিশেষ কাঁচতন্তু হলেও এটি ফাইবারগ্লাস নামে ট্রেডমার্ক করা আছে।সাধারণত গ্লাস ফাইবার তাপ ও বিদ্যুৎ নিরোধক হিসেবে ব্যবহার করা হলেও বিভিন্ন পলিমারকে শক্তিশালী করতে ব্যবহৃত হয়। এই রি-ইনফোর্সড পলিমার দিয়ে তৈরী দ্রব্যাদি অত্যন্ত শক্তিশালী, টেকসই এবং ওজনে হালকা হয়। গ্লাস ফাইবার কার্বন ফাইবারের মত অতটা শক্তিশালী না হলেও এটি দামে সস্তা এবং সহজে ব্যবহার্য বিধায় এর বহুল ব্যবহার লক্ষ করা যায়।গ্লাস ফাইবারের মূল উপাদান হল সিলিকা (বালি) বা SiO2। সাধারণ অবস্থায় এটি একটি পলিমার বা (SiO2)n হিসেবে থাকে। গ্লাস ফাইবারের কোন সাধারণ গলনাঙ্ক নেই তবে প্রায় ১২০০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উত্তপ্ত করলে তা নরম হয়ে যায় এবং গলতে শুরু করে। ১৭১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে এর অণুগুলো মুক্তভাবে চলাচল করতে সক্ষম তবে এই তাপমাত্রা থেকে দ্রুত ঠাণ্ডা করে সংগ্রহ করা হলে গ্লাস ফাইবারের আকৃতিতে আনা সম্ভব হয় না।
গ্লাস ফাইবারের প্রকারভেদঃগ্লাস ফাইবারের মধ্যে বহুল ব্যবহৃত প্রকরণ হল ই-গ্লাস, এ-গ্লাস, ই-সিআর গ্লাস, সি-গ্লাস, এবং ডি-গ্লাস। ই-গ্লাস হল মূলত এলুমিনো বোরসিলিকেট যার মধ্যে ১ % এরও কম এলকালি অক্সাইড রয়েছে এবং তা প্রধানত প্লাস্টিকের শক্তি বৃদ্ধি করতে ব্যবহৃত হয়।
বৈশিষ্ট্যঃ
১। গ্লাস ফাইবার খুবই মসৃন, তাই ফাইবারে সাধারণত ময়লা ধারন করে না।
২। কাপড়ের ময়লা হলে খুব সহজে পরিষ্কার করা যায়।
৩। গ্লাস ফাইবারের মধ্যে পানি প্রবেশ করতে পারে না।
৪। গ্লাস ফাইবার খুবই ভারী, আপেক্ষিক গুরুত্বও বেশি।
৫। প্রসারণ ক্ষমতা খুবই কম।
৬। গ্লাস ফাইবারের পোষাক পরিধান করলে শরীরের ঘাম বের হতে না পারে না। তাই কাপড় আরামদায়ক হয়না।
গ্লাস ফাইবারের ব্যবহারঃ
১। ফাইবার গ্লাস সাধারণত ম্যাট বা ফেব্রিক হিসেবে তাপ, শব্দ ও বিদ্যুৎ নিরোধক হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
২। তীর, ধনুক, ক্রুশ ধনুক, যানবাহনের খোল, জাহাজের খোল, ইত্যাদি ফাইবার গ্লাসের সাহায্যে তৈরী করা হয়।
৩। ঘরের মেঝে বা ছাদ ফাইবার গ্লাসের সাহায্যে তৈরী করা হয়।
৪। কোন বস্তুকে শক্তি প্রদান করতে বা এর রঙ নষ্ট হয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করতে উপরে গাইবার গ্লাসের আস্তরণ দেওয়া হয়।
৫। বিকিরন এর বিরুদ্ধে ব্যবহার, এক্সরে ও রেডিয়েশন প্রতিরোধের জন্য গ্লাস ফাইবারের তৈরি কাপড় ব্যবহার করা হয়।
৬। গ্লাস ফাইবারের লাইনিং কেমিক্যাল প্ল্যান্ট, স্টোরেজ ভ্যাসেল, ট্যাঙ্ক ও ট্যাঙ্কের ছাদ ইত্যাদিতে ব্যবহার করা হয়।
৭। প্যাকেজিং ম্যাটারিয়াল হিসেবে গ্লাস ফাইবার ব্যবহার করা হয়।
৮। স্পোর্টস্কার টিভি কেবিনেট, এয়ারক্রাফটের পার্টস তৈরিতে ব্যবহার করা হয়।
৯। ক্রাশ ব্যাগ তৈরিতে ব্যবহার করা হয়।
১০। ইনস্যুলেশন সামগ্রী যেমন টেপ, ব্রেইড, ইয়ার্ন ইত্যাদি গ্লাস ফাইবার দ্বারা তৈরি হয়।
Source- Wikipedi, TEXTILE LAB
Mimtul jahan
College of home economics
Department of clothing and textile
Batch – 35