অল ওভার প্রিন্টিং যা টেক্সটাইল প্রিন্টিং জগতে এনেছে বিশাল পরিবর্তন। অল ওভার প্রিন্টিং এর ক্ষেত্রে তিন ধরনের মেশিন ব্যবহার হয় তন্মধ্যে বহুল ব্যবহৃত এবং জনপ্রিয় একটি মেশিন হল ফ্ল্যাটবেড প্রিন্টিং মেশিন। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক ফ্ল্যাটবেড প্রিন্টিং মেশিন সম্পর্কে।
আধুনিক ফ্ল্যাটবেড স্ক্রিন প্রিন্টিং হ’ল পুরানো হাত দ্বারা চালিত সিলস্ক্রিন প্রিন্টিংয়ের একটি স্বয়ংক্রিয় সংস্করণ। ফ্লাটবেড প্রিন্টিং মেশিন দ্বারা বর্তমানে থ্রিপিস, শাড়ি ,বেডশীট সহ আরো অনেক ধরনের প্রোডাক্ট তৈরি করা হচ্ছে।
ফ্লাটবেড মেশিনের সংস্করণ:
সাধারণত তিন ধরনের ফ্ল্যাটবেড মেশিন রয়েছে।
১. ম্যানুয়াল ফ্লাটবেড মেশিন
২. সেমি অটোমেটিক ফ্ল্যাটবেড মেশিন
৩. ফুল অটোমেটিক ফ্ল্যাটবেড মেশিন
ফ্লাটবেড প্রিন্টিং মেশিনের মাধ্যমে প্রিন্ট করার পদ্ধতি:
যেকোনো প্রিন্টিং এর ক্ষেত্রে প্রথম কাজ হলো স্ক্রীন তৈরি করা। তাহলে আমরা প্রথমে ডিজাইন অনুসারে স্কিন তৈরি করে নিব। আমরা যে ডিজাইনটি সিলেট করব সেই ডিজাইনের অবস্থানরত যতগুলো কালার থাকবে ঠিক ততগুলো আমাদের স্ক্রীন তৈরি করতে হবে। এখানে উল্লেখ্য যে ফ্ল্যাটবেড প্রিন্টিং এর জন্য যে স্কিন ব্যবহার করা হবে সেটি অবশ্যই পলিস্টার ফেব্রিকের তৈরি থাকবে। আমরা জেনে থাকবো ফ্ল্যাটবেড প্রিন্টিং মেশিনের ফ্রেম অ্যালমনিয়ামের তৈরি। এখন অ্যালমনিয়াম ফ্রেম এর সাথে পলিস্টার ফেব্রিক এর স্ক্রিন 100% টেনশন দিয়ে সেটাপ করে নেব। হলে আমাদের প্রথম কাজ স্কিন তৈরীর কাজ হয়ে গেল।
তারপর আমরা মেশিনের ব্ল্যাঙ্কেট এর সাথে ব্ল্যাঙ্কেট গাম দিয়ে ফেব্রিক সমানভাবে রেখে লাগিয়ে নেব। তারপর মেশিন চালু করার পর ফেব্রিকের নির্দিষ্ট জায়গা পরপর অটোমেটিক্যালি স্ক্রিনটি এসে ফেব্রিক এর উপর চাপ দেবে। ফ্লাটবেড মেশিন এর ক্ষেত্রে প্রিন্টিং পেস্ট ম্যানুয়ালি হাতের সাহায্যে দেওয়া হয়। এবার ফ্লাটবেড মেশিনে থাকা স্কুইজার স্কিনের একপাশ থেকে আরেক পাশ পর্যন্ত মুভ করবে। প্রিন্ট সম্পন্ন হলে অটোমেটিক্যালি স্ক্রীন টি উঠে যায় এবং পরের ফেব্রিক কে প্রিন্ট করার জন্য এগিয়ে যায়। এভাবেই একটি প্রিন্টিং ডিজাইন ফুটে ওঠে। প্রিন্ট হওয়ার পরে ফেব্রিক গুলো ড্রায়ার চেম্বারে যায় এবং ফিক্সেশনের জন্য স্টিম ব্যবহার করা হয়।
ফ্লাটবেড প্রিন্টিং সম্পর্কে আরো যা না জানলেই নয়:
১. ফ্লাটবেড প্রতি মিনিটে ১৫ থেকে ৩০ মিটার ফেব্রিক প্রোডাকশন দিতে পারে।
২. ফ্লাটবেড মেশিনের সাহায্যে ১২ থেকে ১৫ টি কালারের ডিজাইন প্রিন্ট করা যায়।
৩. ফ্লাটবেডে ১০০% কভারের ডিজাইন করতে গেলে রিপিট মার্ক দেখা যায়।
ফ্লাটবেড মেশিন মেনুফেকচার কোম্পানি:
1. INTOMA (Taiwan)
2. KUIL (South Korea)
3. RAGGIANI (Italy)
4. STORK (Netherlands)
5. YUJIN (Korea)
6. ZIMMER (Australia)
ফ্লাটবেড প্রিন্টিং মেশিনের কিছু সুবিধা সমূহ:
১. যেকোনো ডিজাইনের মেজারমেন্ট প্রিন্ট করা সম্ভব।
২. প্রিন্ট কোয়ালিটি ভালো
৩. ফ্ল্যাটবেড স্ক্রীন তৈরি করতে খরচ কম হয়।
৪. প্রোডাকশন কস্ট তুলনামূলক কম রোটারী মেশিন থেকে।
৫. বিশেষ করে গ্লিটার প্রিন্ট এবং ডিসচার্জ প্রিন্ট এর ক্ষেত্রে মেশিনটি খুব কার্যকরী।
অনেক সুবিধার মাঝে ফ্ল্যাটবেড মেশিনের কিছু অসুবিধাও আছে:
১. ফ্লাটবেড মেশিনের সাইজ বড় হওয়ায় জায়গা বেশি লাগে।
২. প্রোডাকশন ধীর গতির।
৩. প্রিন্টিং পেস্ট ম্যানুয়ালি দিতে হয়।
৪. তুলনামূলক ম্যানপাওয়ার বেশি লাগে।
৫. ১০০% পার্সেন্ট কভারের ডিজাইন করতে গেলে রিপিট মার্ক লক্ষ্য করা যায়।
সার্বিক সহজোগিতায়:
মোঃ শওকত হোসেন সোহেল
চীফ ডিজাইনার
ইউনিফিল কম্পোজিট ডাইং মিলস লিমিটেড।
Writer Information:
Name: Raied
Ebne Hakim Rifat
Institution: Primeasia University
Batch:192
Department: Textile Engineering