Sunday, December 22, 2024
Magazine
More
    HomeCampus Newsবস্ত্র প্রকৌশল ও এর শুরুর ইতিহাস

    বস্ত্র প্রকৌশল ও এর শুরুর ইতিহাস

    আমাদের এই দেশে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং এর ইতিহাস অনেক পুরোনো। ১৯১১ খ্রিষ্টাব্দে ব্রিটিশ সাশনে পুর্ব বাংলায় ৩৩টি উইভিং স্কুল প্রতিষ্ঠা করা হয়। এই স্কুল গুলো করা হয়েছিল বাংলার চলমান বস্ত্র শিল্পে কিছু সংখ্যক টেকনিশিয়ান নিয়োগদানের উদ্দ্যেশ্যে। সেই সময়ে এই স্কুল গুলোতে মাত্র ছয় মাসের একটি আর্টিসান লেভেল কোর্স করানো হতো। এই ৩৩ টি স্কুল বর্তমান বাংলাদেশের ঢাকা সহ প্রায় ৩৩টি লোকেশনে গড়ে উঠেছিল। ছাত্র ততটা ছিলো না বলা চলে। তবু আস্তে আস্তে চলছিলো এই প্রতিষ্ঠান গুলো। সাথে সাথে বেড়ে চলছিল টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং এ দক্ষ জনশক্তি।

    ১৯২১ খ্রিষ্টাব্দে সেই একই আইনে ব্রিটিশ সরকার নতুন আরেকটি উইভিং স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন ঢাকার নারিন্দায়। সেখানে আর্টিসান লেভেল ছয়মাসের কোর্স করানো হতো। অর্থাৎ অই ৩৩ টির সমান পর্যায়ের। সেই সব স্থান থেকে কেবল মুষ্টিমেয় টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং এ দক্ষ টেকনিশিয়ান বের হয়ে এসেছিল। ১৯৩০ এর পর ৩৩টি স্কুলের কিছু কিছু আপগ্রেড করে একবছরের কোর্সে উন্নীত করা হয়। ১৯৫০ সালে নারিন্দার সেই উইভিং স্কুল কে পুর্ব পাকিস্তান টেক্সটাইল ইনষ্টিটিউট নাম দিয়ে ডিপ্লোমা কোর্সে উন্নীত করা হয়। ১৯৬০ সালে এই প্রতিষ্ঠান কে বর্তমান ক্যাম্পাস তেজগাঁও শিল্প এলাকায় স্থানান্তরিত করা হয়। ১৯৭৮ সালে এই প্রতিষ্ঠান কে ডিগ্রী বা স্নাতক পর্যায়ে উন্নীত করা হয়। তখন এর নাম দেয়া হয় কলেজ অব টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টেকনোলজি।

    ১৯৬৮ থেকে ১৯৮১ সালে ৩৩টি উইভিং স্কুলের কোনো কোনোটিতে চালু হয় দুই বছরের টেক্সটাইল টেকনোলোজী কোর্স। কিন্তু এই কোর্স শিল্প কারখানায় তেমন সাড়া ফেলতে পারেনি। তাই ১৯৯৩ সালে চালু হয় তিন বছরের ডিপ্লোমা কোর্স। এটি এক যোগে ছয়টি ইনষ্টিটিউটে চালু হয়। এগুলো যথাক্রমে বেগমগঞ্জ, জোরারগঞ্জ,টাঙ্গাইল, বরশাল, দিনাজপুর ও রংপুর টেক্সটাইল ইনষ্টিটিউট। ২০০১ সালে এই ডিপ্লোমা কোর্স কে চার বছরে উন্নীত করা হয় এবং ২০০৭ সালে স্নাতক কোর্স চালু হয়। এই সব কলেজ থেকে এখনো বের হয়ে আসছে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং এ দক্ষ কিছু ব্যক্তি। বর্তমানে কতজন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং এ দক্ষ মানুষ এই সব প্রতিষ্ঠান থেকে বের হয়ে আসছেন? এটা আসলে বলা মুশকিল তবে ২০১০ সালে বাংলাদেশের প্রথম টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে তেজগাঁওয়ের সেই টেক্সটাইল কলেজটি। এটি-ই প্রথম টেক্সটাইল কলেজ এবং প্রথম টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়। তবে এ পর্যন্ত কতজন শিক্ষার্থী এখান থেকে বের হয়েছে তা বলা মুশকিল।

    বর্তমানে সরকারি যেসব প্রতিষ্ঠানে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ানো হয়-

    বিশ্ববিদ্যালয়ঃ

    ১. বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়।
    ২. ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, গাজীপুর।
    ৩. খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা।
    ৪. মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, টাঙ্গাইল।
    ৫. যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, যশোর।

    মহাবিদ্যালয়ঃ

    ১. ড.এম এ ওয়াজেদ মিয়া টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ,রংপুর।
    ২. চট্টগ্রাম টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, চট্টগ্রাম।
    ৩. বেগমগঞ্জ টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, নোয়াখালী।
    ৪. পাবনা টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, পাবনা।
    ৫. শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবাত টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, বরিশাল।
    ৬. শেখ কামাল টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ,ঝিনাইদহ।
    ৭. বঙ্গবন্ধু টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, কালিহাতী, টাংগাইল (সাবেক বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব টেক্সটাইল টেকনোলজি)
    ৮. বাংলাদেশ তাঁত শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউট, নরসিংদী।

    সরকারি-বেসরকারি অংশীদারঃ

    জাতীয় বস্ত্র প্রকৌশল ও গবেষণা ইনস্টিটিউট এই ইনস্টিটিউটটি (নিটার) নামে পরিচিত। এখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রযুক্তি ইউনিট এর অধীনে ভর্তি কার্যক্রম পরিচালিত হয়। বর্তমানে এখানে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং এ বি.এস.সি ডিগ্রী প্রদান করা হয়। বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় এর অধীনে এবং BTMA দ্বারা পরিচালিত নিটার বর্তমানে বাংলাদেশ এর দ্বিতীয় বৃহত্তম টেক্সটাইল শিক্ষাবিষয়ক ইনস্টিটিউট। যথাবিধ অনুযায়ী নিটার পূর্বে একটি সরকারি ইনস্টিটিউট ছিল যার নাম TIDC।
    বর্তমানে এটি বাংলাদেশ এর সর্বপ্রথম এবং একমাত্র সরকারি-বেসরকারি অংশীদার এর সম্পৃক্ততায় একটি টেক্সটাইল শিক্ষাবিষয়ক ইনস্টিটিউট।

    ইনস্টিটিউটঃ

    ১. দিনাজপুর টেক্সটাইল ইন্সটিটিউট, পুলহাট, দিনাজপুর।
    ২. টাঙ্গাইল টেক্সটাইল ইন্সটিটিউট, বাজিতপুর, টাঙ্গাইল।
    ৩. শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট,গৌরনদী, বরিশাল।
    ৪. নাটোর টেক্সটাইল ইন্সটিটিউট, নাটোর।
    ৫. রংপুর টেক্সটাইল ইন্সটিটিউট, রংপুর।
    ৬. চট্টগ্রাম টেক্সটাইল ইন্সটিটিউট, চট্টগ্রাম।
    ৭. টেক্সটাইল ইন্সটিটিউট, লবনচরা , খুলনা।
    ৮. বাংলাদেশ তাঁত শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউট, নরসিংদী।

    বেসরকারি টেক্সটাইল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানঃ

    ১. বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটি অব ফ্যাশন এ্যান্ড টেকনোলজি।
    ২. ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি।
    ৩. শান্ত-মারিয়াম ইউনিভার্সিটি অব ক্রিয়েটিভ টেকনোলজি।
    ৪. বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজি।
    ৫. সাউথ ইস্ট ইউনিভার্সিটি।
    ৬. আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।
    ৭. সিটি ইউনিভার্সিটি।
    ৮. সোনারগাঁও বিশ্ববিদ্যালয়।
    ৯. প্রাইমএশিয়া ইউনিভার্সিটি।
    ১০. নর্দার্ন ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ।
    ১১. গ্রীন ইউনিভার্সিটি।
    ১২. আইডিয়াল টেক্সটাইল ইন্সটিটিউট।
    ১৩. শ্যামলী টেক্সটাইল ইন্সটিটিউট।

    এছাড়া আরো অনেক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ানো হয়।

    Sajjadul Islam Rakib
    Campus Ambassador-TES
    National Institute of Textile Engineering and Research-NITER

    RELATED ARTICLES

    LEAVE A REPLY

    Please enter your comment!
    Please enter your name here

    Related News

    - Advertisment -

    Most Viewed