Thursday, November 21, 2024
Magazine
More
    HomeNewsবাংলাদেশর সম্ভাবনাময় পোশাক শিল্পে হঠাৎ কোভিড-১৯ এর প্রভাব

    বাংলাদেশর সম্ভাবনাময় পোশাক শিল্পে হঠাৎ কোভিড-১৯ এর প্রভাব

    বাংলাদেশে পোশাক শিল্পের উত্থান: 
    বাংলাদেশের অর্থনীতিতে পােশাক শিল্প এক নতুন দিগন্তের উন্মোচন করেছে । কর্মসংস্থান এবং রপ্তানি বাণিজ্যের ক্ষেত্রে পােশাক শিল্প দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে খুবই সন্তোষজনক ভূমিকা রাখছে । পােশাকের ক্ষেত্রে বাংলার মসলিন ও জামদানী ও সময় পৃথিবী বিখ্যাত ছিল । ব্রিটিশ শাসনের আগ্রাসনে সেই ঐতিহ্যবাহী দেশীয় শিল্পের ধ্বংস সাধিত হয় । বর্তমানে পােশাক শিল্প বাংলা সেই হারানো গৌরব পুনরুত্থানে যত্নবান  । সদ্য স্বাধীনতা প্রাপ্ত বাংলাদেশে অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে দেশে ১৯৭৩ সালে বেসরকারি উদ্যোগে বেশ কিছু পােশাক তৈরির শিল্প গড়ে ওঠে । ১৯৮৫ সালে এ পােশাক শিল্পের ব্যাপক সম্প্রসারণ শুরু হয় । স্বল্প সময়ের মধ্যে সংখ্যা দাঁড়ায় ১২৫। মূলত এই ১২৫ টি পােশাক কারখানা নিয়েই নতুন উদ্যমে পােশাক শিল্পের যাত্রা শুরু হয় । বর্তমানে দেশে প্রায় আড়াই হাজার পােশাক কারখানা চালু আছে । দেশের অর্থনীতিতে পােশাক শিল্পের অবদান খুবই ইতিবাচক ।বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের পােশাক শিল্প খুব দ্রুত বাজার লাভে সক্ষম হয়েছে । বাংলাদেশের পােশাক শিল্পের অন্যতম ক্রেতা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র । এছাড়াও কানাডা , জাপান , অস্ট্রেলিয়া , ফ্রান্স , জার্মানি , নিউজিল্যান্ড , বেলজিয়াম ও প্রাচ্যের দেশগুলােসহ বিশ্বের ২৩ টি দেশে বাংলাদেশী তৈরি পোশাক রপ্তানি করা হয়। সামান্য ক’টি আইটেম দিয়ে বাংলাদেশের পােশাক শিল্পের অভিযাত্রা শুরু হলেও বর্তমানে তা অনেক সম্প্রসারিত হয়েছে । বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের তৈরি পােশাকের চাহিদা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পােশাকের বৈচিত্র্যও বৃদ্ধি পেয়েছে । এ দেশের পোশাক শিল্প দেশে নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিয়ে বেকারত্ব বিমোচনে উল্লেখযােগ্য ভূমিকা রাখছে । বর্তমানে পােশাক শিল্পে প্রায় ১২ লক্ষ নরনারী কর্মরত আছে । এর মধ্যে মহিলা শ্রমিকের সংখ্যা প্রায় ৮৫ % । বাংলাদেশের অবহেলিত নারী সমাজের কর্মসংস্থান সৃষ্টি  ও স্বাবলম্বী জীবনযাপনের ক্ষেত্রে পােশাক শিল্পের অবদান অপরিসীম ।

    কোভিড ১৯ এর প্রভাব :
    বাংলাদেশের অর্থনীতির মেরুদণ্ড এবং দেশের আয় এর প্রধান উৎস হলো আমাদের টেক্সটাইল শিল্প। আমাদের গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রি বিগত ২৫ বছর ধরে দেশের রপ্তানি বিভাগ এর মূল আয়ের উৎস হয়ে আছে। বাংলাদেশে কোভিড ১৯ সংক্রমণের হার অনিয়ন্ত্রিতভাবে বেড়ে যাওয়ায় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার ২রা মার্চ 2020 থেকে সম্পূর্ণ দেশ লকডাউন ঘোষণা করেন।  যার ফলে একসময় (বিজিএমইএ) অর্থাৎ বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন দেশের সকল পোশাক কারখানা বন্ধের ঘোষণা দেয়।  উড়তে থাকা পোশাকশিল্প নিমিষেই মাটিতে নেমে আসে।  লকডাউন এর ফলে পোশাক শিল্পের সকল চালান গুলো বন্ধ হয়ে যায় এবং নিমিষেই বিশাল ধ্বস নেমে আসে ।

    লকডাউন এর কারণে প্রচুর মানুষ ঢাকা থেকে তাদের নিজ নিজ গন্তব্যস্থলে গিয়েছে, যা কিনা করোনার প্রভাব কে আরো দীর্ঘ করেছে এবং এবং মানুষের দুর্ভোগকে নিয়ে গিয়েছে অন্য পর্যায়ে। বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিকেএমইএ)র এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, দেশে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ এর আলামত পেয়ে অনেক বিদেশি ক্রেতা আবারো অর্ডার স্লো করে দিয়েছেন এবং পাশাপাশি অনেকে অর্ডার স্থগিত করে দিয়েছেন । কিছু অর্ডার আসার কথা ছিল সেগুলো আর দিচ্ছে না বায়াররা। এক প্রতিবেদনে বলা হয় করোনা পরিস্থিতিতে অক্টোবরে 6 টি প্রধান দেশের পোশাক রপ্তানি ব্যাপক হারে কমেছে। জুলাই থেকে অক্টোবরে তিন মাস প্রধান রপ্তানির বাজারে পোশাক রপ্তানি কিছুটা ঘুরে দাঁড়িয়েছিল কিন্তু অক্টোবরে এসে যা ব্যাপক হারে কমে যায় শুধু করোনার দ্বিতীয় ঢেউ এর জন্য মার্চ থেকে জুলাইয়ে পোশাক রপ্তানি কমে ছিল ৩৪ দশমিক ৭২ শতাংশ। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ এর প্রভাবে বিশ্ববাজারে অক্টোবর-নভেম্বরে আরো পোশাকের খুচরা বিক্রয় মূল্য ও চাহিদার বড় ধরনের পতন ঘটেছে এর নেতিবাচক প্রভাবে দেশের পোশাক শিল্পের রপ্তানির প্রবৃদ্ধি ও মূল্য উভয় কমেছে।

    সম্ভাবনার নতুন হাতছানি মাস্কে: 
    দেশের প্রধান প্রধান পণ্যের রপ্তানি প্রবৃদ্ধি কমলেও করোনাভাইরাসের সুরক্ষাসামগ্রী রপ্তানি আয়ের প্রবৃদ্ধিতে রেকর্ড গড়েছে বাংলাদেশ, যা দেশের রপ্তানি বাণিজ্যের বহুমুখিতায় নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে। স্বাস্থ্য সুরক্ষাসামগ্রীর মধ্যে সার্জিক্যাল মাস্ক, ফেস মাস্ক, হ্যান্ড গ্লাভস, স্যু কাভার ও মেডিকেল গাউন ইত্যাদির প্রবৃদ্ধি হয়েছে বেশি। বেড়েছে পারসোনাল প্রটেকটিভ ইকুইপমেন্ট (পিপিই) বা ব্যক্তিগত সুরক্ষাসামগ্রীর চাহিদা। 
    বিজিএমইএ জানায়,   ২০২০ সালের (মার্চ-জুলাই) পাঁচ মাসে দুই কোটি ৬৯ লাখ ডলারের মাস্ক রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ। যা ২০১৯ সালে একই সময়ে রপ্তানি হয়েছিল ২৭ লাখ ডলারের মাস্ক। এ হিসাবে ২০২০ সালে মাস্কের রপ্তানি বেড়েছে ৮৮৩ শতাংশ। 

    সূত্রঃ গুগল, অনলাইন নিউজপোর্টাল।

    লেখকঃ 
    1. Md Moallim Islam

    2. Md Ashiful Islam Sawon 
    Department of Textile Engineering Southeast University 

    RELATED ARTICLES

    1 COMMENT

    LEAVE A REPLY

    Please enter your comment!
    Please enter your name here

    Related News

    - Advertisment -

    Most Viewed