মোঃ হাসিবুল হাসান সুজন:
রাজশাহী বিভাগে একসময় রেশম শিল্পের ব্যাপক ব্যবহার ও উৎপাদন ছিল।কালের গর্ভে সেই সোনালী দিন অতীতের খাতায় নাম লিখাচ্ছে।এই রেশম শিল্পের পর এই বিভাগে সেরকম ভাবে আর টেক্সটাইল শিল্প সেভাবে আর দাড়াতে পারেনি। কিন্তু সরকার এই জায়গার মানুষের মাঝে সেই সোনালী দিন আধুনিক ভাবে ফিরিয়ে আনার জন্য পরিকল্পনা করেন এই ইপিজেড এর। যা কিনা এই অঞ্চলের মানুষের মাঝে ব্যপকভাবে প্রভাব পড়ে।বর্তমানে এই ইপিজেড টেক্সটাইল এর সীমাবদ্ধতা ছাড়িয়েও টেকনিক্যাল সেক্টরে পদার্পন করেছে।
#অবস্থান: IEPZ বা ঈশ্বরদী রপ্তানী প্রক্রিয়াকরণ এলাকা ঈশ্বরদী উপজেলা সদর হতে প্রায় ৬ কিঃ মিঃ দক্ষিণে অবস্থিত এবং পাবনা জেলা শহর থেকে মাত্র ৩৫ কি.মি. দূরত্ব ।
#ইতিহাস: বেপজা’র উচ্চ পর্যায়ের কমিটি কর্তৃক এলাকাটি ইপিজেড প্রকল্প হিসেবে অনুমোদন প্রাপ্ত হয়। সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য এরূপ একটি প্রকল্প উত্তরবঙ্গে এই প্রথম।এই রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলটি ২০০১ খ্রিষ্টাব্দে স্থাপিত হয়। ৩০৯ একর এলাকার ওপর প্রতিষ্ঠিত এই ইপিজেডটি বাংলাদেশের ৩য় বৃহত্তম রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা। প্রকল্পভূক্ত এলাকার জমির পরিমাণ ১২৮.৪৬ একর, প্রশাসনিক এলাকা ১৮.৮৫ একর, আবাসিক এলাকা ৩৬.৯৫ একর। এছাড়াও ভবিষ্যতে সম্প্রসারণের কার্যক্রমভূক্ত এলাকা ১২৪.৭১ একর এটি একটি শুল্কমুক্ত এলাকা যেখানে সম্পূর্ণ শুল্কমুক্তভাবে কাঁচামাল আমদানী করত। উৎপাদিত পণ্য সম্পূর্ণ শুল্কমুক্তভাবে বিদেশে রপ্তানী করা যায়। শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোতে সরবরাহের জন্য এখানে ‘বেপজা’ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে পানি সরবরাহ ব্যবস্থা ও বিদ্যুতের জন্য ১১ কেভির একটি সাব স্টেশন রয়েছে; এছাড়াও এখানে পশ্চিমাঞ্চল গ্যাস কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে জ্বালানী হিসাবে প্রাকৃতিক গ্যাসের সরবরাহ করা হয়।
#বিনিয়োগ: শতভাগ বিদেশী পুজিঁ বিদেশী ও দেশী পুজিঁর যৌথ বিনিয়োগ এবং শতভাগ দেশীয় পুজিঁ। এই ইপিজেডে সর্বমোট শিল্প-প্লটের সংখ্যা ২৯০টি। বর্তমানে ৫টি শিল্প কারখানা চালু রয়েছে এবং ৬টি কারখানা নির্মাণাধীন এবং বাস্তবায়নাধীন আছে। ২০০৯ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত ১৪,৫৪৬ মিলিয়ন ইউএস ডলার এ জোনে ইনভেস্টমেন্ট করা হয়েছে। ৭.৩ মিলিয়ন ইউএস ডলার পরিমাণ উৎপাদিত দ্রব্য রপ্তানী করা হয়েছে। স্থানীয় ১১০৭ জন কর্মচারী এ জোনে নিয়োগ করা হয়েছে।
#সুবিধা: এই ইপিজেড- টিতে কাস্টমস্ অফিস, নিরাপত্তা অফিস, জোন সার্ভিসেস কমপ্লেক্স, মেডিকেল সেন্টার, ফায়ার স্টেশন, পুলিশ ক্যাম্প, নিরাপত্তা ব্যারাক, রেস্ট হাউস, নিজস্ব টেলিফোন এক্সচেঞ্জ, গ্যাস বিতরণ অফিস এবং ব্যাংকিং সুবিধা রয়েছে। বর্তমানে দেশীয় এন্টারপ্রাইজ ছাড়াও অস্ট্রেলিয়া, চীন, হংকং, তুর্কিস্তান এবং ভারতের এন্টারপ্রাইজ রয়েছে।
#উৎপাদিত দ্রব্য: তামার তার, এংলো এবং ফ্যাট টিউব, সোয়েটার, পলিথিন দ্রব্য, গার্মেন্টস পোষাক, পলিস্টার, প্লাস্টিক দ্রব্য, মোজা, ব্যাটারী, বিদ্যুৎ, তুলা, ফ্যাব্রিক্স প্রভৃতি। বিদেশী উদ্যোক্তাগণ জোনটি পরিদর্শন করে বিনিয়োগে বেশ আগ্রহী হচ্ছেন। বর্তমানে ঈশ্বরদী বিমান বন্দরটি বন্ধ রয়েছে। বিমান বন্দরটি চালু হলে বিদেশী উদ্যোক্তাদের সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পাবে এবং এ এলাকাটি এদেশের বেশ লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হবে বলে ঈশ্বরদীবাসী মনে করেন।
#যাবার উপায়: বাংলাদেশের যে কোন জায়গা হতে রেল অথবা সড়ক পথে ঈশ্বরদী রেলওয়ে স্টেশন অথবা বাস টার্মিনালে নেমে রিক্সা বা টেম্পুযোগে যাওয়া যায়।