টেক্সটাইল গার্মেন্টস রপ্তানীতে চীন, ভিয়েতনামের পরেই বাংলাদেশের অবস্থান। কিছুদিন আগেও বাংলাদেশ পৃথিবীতে ২য় অবস্থানে ছিল এবং মোট রপ্তানী আয়ের ৮৪ শতাংশই এই টেক্সটাইলের অবদান। তবুও আমরা কেন প্রতিবেশী দেশ ভারতের কাপড়ের প্রতি এত আগ্রহ প্রকাশ করি?? আমি কয়েকটি কারণ ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেছি।
ভারতীয় সিরিয়াল ও সিনেমার প্রভাবঃ শুনতে হাস্যকর মনে হলেও এটি একটি মারাত্মক কারণ বলে মনে করি। কেননা, বাংলাদেশে ডিস এবং ইন্টারনেটের সুবাদে এবং সংস্কৃতির অনেকটা মিল থাকায় তাঁদের ফলো করে থাকি। যেমনঃ স্টার জলসার একটা মেগা সিরিয়ালে নায়িকার নামে পাখি থ্রি-পিস নামকরণে ইউনিক ডিজাইনে থ্রি-পিস এর আবির্ভাব হয়েছিল ঈদকে সামনে রেখে। আমাদেরই বোন, স্ত্রীদের নতুন উক্ত ড্রেস কেনার উৎসাহ ছিল আকাশচুম্বী। তৎকালীন সময়ে প্রচুর পরিমাণে চাহিদা থাকায় এদেশে রেকর্ড পরিমাণ বিক্রি হয়। অপরদিকে পুরুষেরা বিভিন্ন মুভির নায়কদের ফলো করে তাঁদের মতন পোশাক পড়তে পছন্দ করে। ফলে, সেসব পোশাক এদেশের বাজার দখল করতে সক্ষম হয়।
🇨🇮 রপ্তানীমুখী পোশাকশিল্পের সিস্টেমে বন্দীঃ আমাদের গার্মেন্টসগুলা অধিকাংশই রপ্তানীমুখী। তাঁরা বিশ্বের অনেক নামী-দামী ব্রান্ডের সাথে চুক্তিবদ্ধ থাকে। এদেশে তৈরি হলেও এদেশে বিক্রয় করা যাবে না। চুক্তিভঙ্গ করলে জেল, জরিমানাও হতে পারে।
দামের পার্থক্যঃ যদিও দেশে বিক্রয়যোগ্য অনেক ফ্যাসন ব্রান্ড আছে। তবে, দুঃখের সাথে বলতে হয় স্থানীয় বাজারের অধিকাংশ কাপড়গুলো নিম্নমানের। তবুও আড়ং, রিচম্যান লুবনান, দর্জিবাড়ীসহ অনেক ভাল ব্রান্ড রয়েছে। তবে, দাম সাধারণের হাতের নাগালে থাকে না। অপরদিকে, ভারতের কাপড়গুলি তুলনামূলকভাবে কম দামের হয়ে থাকে।
🇨🇮 কর ফাঁকিঃ বাংলাদেশের সীমান্ত দিয়ে কর ফাঁকি দিয়ে অবৈধভাবে অনেক কাপড় আসে। যেগুলা একদিকে রাজস্ব খাতের জন্য যেমন ক্ষতিকর, ঠিক তেমনি দেশীয় উদ্যোক্তা, বুটিক শিল্পের জন্য হুমকিস্বরূপ।
দ্রুত ভারতীয় ভিসা প্রাপ্তিঃ সম্প্রতী সরকার দ্রুত ভারতীয় ভিসা প্রাপ্তীর ব্যবস্থা করায় অনেকে ভারতে গিয়ে সপিং করে আনছে নিজের এবং পরিবারের জন্য। ঈদ বা পূজা উপলক্ষে খুব সহজেই ভারত থেকে কাপড় কেনা সহজ হয়েছে।
২০১৮ সালে বুটিক হাউজ বিবিয়ানার সত্ত্বাধিকারী ও ডিজাইনার লিপি খন্দকার এক সাক্ষাৎকারে বলেন-
“আমরা যেভাবে ডিজাইন করে যাচ্ছি সেগুলো দিয়েই কিন্তু তিনবছর আগে ভালো ব্যবসা করে গেছি। কিন্তু তখন কেন করতে পেরেছি? কারণ তখন এই মার্কেট এত ওপেন ছিলো না। প্রতিযোগিতা যত বাড়ছে আমরা ডিজাইন নিয়ে তত কাজ করছি। আসলে মার্কেটটা এখন এত ওপেন হয়ে গেছে, এমনকি ওইসব দেশ থেকে বিশেষ করে ইন্ডিয়া থেকে লোকজন এসে হোটেল ভাড়া করে পুরোদমে বিজনেস করে, এই সিজনটাতে (ঈদ) কাজে লাগিয়ে তারা চলে যাচ্ছে।”
সোর্সঃ bbc.com
Writer: Mehedi Hasan Shojol
1st batch, Wet Process Engineering.
Sheikh Kamal Textile Engineering College, Jhenaidah.