আদিমকাল থেকেই পরিধেয় বস্ত্র মানুষের অন্যতম চাহিদা মৌলিক চাহিদার প্রথমে আসে খাদ্য এবং পরেই চলে আসে বস্ত্র। আদিমকালে মানুষ তাদের লজ্জা নিবারনের জন্য গাছের পাতা, পশুর চামড়া ব্যবহার করত। যুগে যুগে তাদের এই পোশাক অনেক পরিবর্তন হয়েছে। ধীরে ধীরে তারা বিভিন্ন সুতা আবিষ্কার করেছে। সেই সুতা থেকে কাপড় তৈরি করেছে।
আজ বর্তমান বিশ্বে গড়ে উঠেছে বিভিন্ন ফ্যাশান হাউজ। যেখান থেকে প্রতিনিয়ত চাহিদা অনুযায়ী সারা বিশ্বে পোশাক আমদানি রপ্তানি হচ্ছে এবং বস্ত্রের চাহিদা পূরণ করা হচ্ছে।
বিশ্বের নামিদামি কিছু ফ্যাশান হাউজগুলোর মধ্যে কিছু ফ্যাশান হাউজের নাম হলঃ
· Louis Vuitton
· Gucci
· Balenciaga
· Dior
· Prada
· Giorgio Armani
· Calvin Klein
· Ralph Lauren
· H&M
এছাড়াও সারা পৃথিবীতে আরও অসংখ্য ফ্যাশান হাউজ রয়েছে।এসকল ফ্যাশান হাউজ থেকে প্রতিনিয়ত লাখ লাখ পরিধেয় বস্ত্র তৈরি হচ্ছে।
বাংলাদেশেও রয়েছে অসংখ্য ফ্যাশান হাউজ। এসকল ফ্যাশান হাউজ দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পোশাক রপ্তানি করে যাচ্ছে।
বাংলাদেশের কিছু শীর্ষস্থানীয় ফ্যাশান হাউজ হলঃ
· Aarong
· Kay Kraft
· Cats Eye
· Gentle Park
· Richman
· Yellow
· Rang
· Darjibari
· Ecstasy
· Sailor
বর্তমান বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে দেশের এসকল ফ্যাশান হাউজ প্রতিনিয়ত নিত্য নতুন ডিজাইনের মাধ্যমে দেশের বস্ত্রের চাহিদা মিটিয়ে যাচ্ছে।
বিশ্বের শীর্ষ স্থানীয় কিছু ফ্যাশান হাউজঃ
Louis Vuitton: বহিবিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ফ্যাশান হাউজের নাম বলতে গেলে প্রথমেই Louis Vuitton নামটি মাথায় আসে। কারন বর্তমানে এই ফ্যাশান হাউজ যেকোনো তালিকায় শীর্ষ স্থান গ্রহন করে আছে। এর যাত্রা শুরু হয় ১৮৫৪ সালে ফ্রান্স থেকে। বর্তমানে বিশ্বের প্রায় ৫০টি দেশে ৪৬০টি শও-রুম রয়েছে ফ্যাশান হাউজটির।
Gucci: ১৯২১ সালে ইতালির ফ্লরেন্স শহর থেকে যাত্রা শুরু করে এই প্রতিষ্ঠানটি। এর প্রতিষ্ঠাতা Guccio Gucci। বর্তমানে সারা বিশ্ব জুড়ে এই ফ্যাশান হাউজটির ৪৮৭ টি শাখা রয়েছে যেখানে প্রায় ১৭০০০ কর্মী নিযুক্ত রয়েছে। ২০১৯ সালে কোম্পানিটি ৯.৬২৮ বিলিওন পাউন্ড লাভ করেছে। প্রায় ১০০ বছর পরেও Gucci এর পোশাক সব বয়ষের ক্রেতার কাছে খুবই জনপ্রিয়।
Balenciaga: ১৯১৭ সালে ডিজাইনার Cristóbal Balenciaga স্পেনে প্রতিষ্ঠা করেন এই ফ্যাশান হাউজটি। সৃষ্টিলগ্ন থেকেই বিলাসি এবং অনন্য সব পোশাক নিয়ে কাজ করে আসছে কোম্পানিটি। এই প্রতিষ্ঠান সব বয়সের ক্রেতার জন্য অস্ত্র তৈরি করা হয় . বর্তমানে স্পেন ছাড়াও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ফ্যাশন হাউজটি বিস্তার লাভ করেছে। বিশ্বের প্রায় 22 টি দেশে এই ফ্যাশন হাউজটির শাখা রয়েছে .
Dior: ফ্রান্সে ১৯৪৬ সালে Christian Dior এই ফ্যাশান হাউজটি প্রতিষ্ঠা করেন। Dior এর অধিনে আরও রয়েছে “Dior Homme or Dior Men’s” যা শুধুমাত্র পুরুষদের জন্য এবং রয়েছে “Baby Dior” যেখানে বাচ্চাদের পোশাক পাওয়া যায়। এই প্রতিষ্ঠানটি পোশাকের পাশাপাশি জুতা, চশমা, ব্যাগ, সানগ্লাস প্রস্তুত করে থাকে।
Calvin Klein: ১৯৬৮ সালে যুক্তরাস্ট্রে, ডিজাইনার Calvin Klein এবং তার বাল্যকালের বন্ধু Barry K. Schwartz মিলে প্রতিষ্ঠা করেন এই প্রতিষ্ঠানটি। শুরুর দিকে তারা চামড়াজাত দ্রব্য যেমনঃ চামড়ার ব্যাগ, জুতা, বেল্ট ইত্যাদি তৈরি করলেও পরে অন্যান্য পোশাক তৈরি শুরু করে। এ প্রতিষ্ঠানটি বস্ত্র, পারফিউম, ব্যাগ, জুতা, বেল্ট, সানগ্লাস প্রস্তুত এবং বিক্রি করে থাকে।
H&M: সম্পূর্ণ নাম Hennes & Mauritz AB নিয়ে ১৯৪৭ সালে সুইডেন থেকে যাত্রা শুরু করে ফ্যাশান হাউজটি। বর্তমানে বিশ্বে প্রায় ৭৪ টি দেশে ৫০০০ এরও বেশি দোকান আছে H&M এর। বর্তমানে সারাবিশ্বে 5076 টিরও বেশি শোরুম হয়েছে ফ্যাশন হাউজটির।
মজার বিষয় হচ্ছে H&M, GAP, Levi’s, JCPenney সহ আরো কিছু ফ্যাশন হাউজ বাংলাদেশ থেকে বস্ত্র আমদানি করে তাদের ফ্যাশন হাউসগুলোতে বিক্রি করছে, যেখান থেকে প্রতি বছর লক্ষাধিক বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা সম্ভব হচ্ছে। বাংলাদেশ থেকে এসব রেডিমেড গার্মেন্টস বহির্বিশ্বের এসকল ফ্যাশন হাউসগুলোতে ছড়িয়ে পড়ছে। এভাবেই পোশাক শিল্প আমাদের দেশকে বহির্বিশ্বে তুলে ধরছে.
লেখকঃ
মোঃ রাহাতুল ইসলাম
ডিপার্টমেন্ট অফ টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং
সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটি