মানুষের চাহিদা অনুযায়ী কাপড় তৈরি করতে সুতার প্রয়োজন, আর সুতা তৈরি করতে টেক্সটাইল ফাইবার প্রয়োজন। অর্থাৎ, কাপড় তৈরির অন্যতম কাঁচামাল হল ফাইবার। আবার পৃথিবীতে অনেক ধরনের ফাইবার আছে, তাদের সবই কাপড় তৈরির কাজে ব্যবহৃত হয় না। অর্থাৎ, সুতা বা কাপড় তৈরিতে যে সমস্ত আঁশ ব্যবহৃত হয় সেগুলকেই আমরা বয়ন তন্তু বা টেক্সটাইল ফাইবার বলব।
টেক্সটাইল ফাইবার বলতে আমরা সে সকল বস্তুকেই বুঝব, যাদের নূন্যতম দৈঘ্য, শক্তি, সূক্ষ্মতা, নমনীয়তা, সমতা, স্থিতিস্থাপকতা, আদ্রতা ধারণ ক্ষমতা, রেসিলিয়েন্সি, তাপ পরিবাহিতা এবং রঙ করার ক্ষমতা ইত্যাদি বজায় থাকে তাদের বুঝি।
টেক্সটাইল কাঁচামাল আমরা দুভাবে পেয়ে থাকি, যেমন-
১)প্রাকৃতিকভাবেঃ প্রাকৃতিক টেক্সটাইল কাঁচামাল যেমন-কটন,জুট,সিসাল,ফ্লাক্স,হেম্প,কয়ার,র্যামি,উল,সিল্ক,গ্লাস,আসবেসটস,মেটাল ইত্যাদি। এবং
২)কৃএিমভাবেঃ কৃএিম টেক্সটাইল কাঁচামাল যেমন- নাইলন, পলিয়েসটার, অরলন, অ্যাক্রাইলিক, স্পানডেক্স ইত্যাদি।
কিছু টেক্সটাইল ফাইবার আছে, যাকে রিজেনারেটেড সেলুলোজিক ফাইবার বলে। এ ধরনের ফাইবারের মূল কাঁচামাল সেলুলোজ, যা প্রকৃতি থেকে সংগ্রহ করা হয়। যেমন- যে সমস্ত উদ্ভিদে সেলুলোজ থাকে ( যেমন- বাশঁ, গাছ) সেগুলকে বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটিয়ে টেক্সটাইল ফাইবার তৈরি করা হয়।
আবার কৃএিম ফাইবারও বিভিন্ন ধরনের জৈব ও অজৈব পদার্থের সাহায্যে বিভিন্ন কেমিক্যালের বিক্রিয়া ঘটিয়ে তৈরি করা হয়।
টেক্সটাইল র ম্যটেরিয়ালস্ এর উদ্দেশ্যঃ
(ক) বিভিন্ন প্রকার টেক্সটাইল র ম্যাটেরিয়ালস্ সম্পর্কে জানা।
(খ) উৎপাদন সম্পর্কে সম্যক ধারণা নেয়া।
(গ) বিভিন্ন প্রকার টেক্সটাইল র ম্যাটেরিয়ালস্-এর ব্যবহার সম্পর্কে জানা।
(ঘ) এদের ভৌত ও রাসায়নিক গুনাবলি সম্পর্কে অবগত হওয়া।
(ঙ) এগুলির প্রসেসিং সম্পর্কে জানা।
টেক্সটাইল ফাইবারের বৈশিষ্ট্য সমূহঃ
যে কোনো তন্তু বা আশঁ কতগুলো গুনাবলির ভিত্তিতেই টেক্সটাইল ফাইবার হিসেবে বিবেচিত হয়। গুনাবলি বক্তে ভৌত এবং রাসায়নিক উভয় প্রকারই অন্তর্ভুক্ত। ভৌত গুনাবলির মধ্যে দৈঘ্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকে। দৈঘ্য বা দৈঘ্যের সমতার উপরই আশঁ দিয়ে সুতা তৈরির সম্ভাব্যতা অথবা তৈরিকৃত সুতার গুণাগুণ। তুলার ক্ষেএে আশেঁর দৈঘ্য বাড়লে তার বিভিন্ন গুণাগুণ বৃদ্ধি পায় আবার পশমের ক্ষেত্রে উল্টো, পাটের ক্ষেত্রে আশেঁর দৈঘ্য এত বেশি যে ক্ষেত্র বিশেষে কেটে ছোট করে সুতা তৈরির উপযোগী করা হয়।
এছাড়াও টেক্সটাইল ফাইবার এর যে সকল বৈশিষ্ট্য বা গুণাবলি থাকতে হয়-
১)দৈর্ঘ্য;
২)সূক্ষ্মতা বা ব্যাস;
৩)প্রস্থচ্ছেদের আকার;
৪)ক্রিম্প;
৫)শক্তি;
৬)স্থিতিস্থাপকতা;
৭)নমনীয়তা ;
৮)পাক ধারণ ক্ষমতা ;
৯)প্রসারণ ;
১০)রেসিলিয়েন্সি;
১১)পানি ধারণ ক্ষমতা ;
১২)রঙ;
১৩)উজ্জ্বলতা ;
১৪)আপেক্ষিক গুরুত্ব বা ঘনত্ত;
১৫)তাপ ধারণ ক্ষমতা ;
১৬)তাপ পরিবাহিতা ;
১৭)সংকোচন ক্রিয়া;
১৮)দাহ্য আচরণ ;
১৯)সূর্য্যের আলোতে ক্রিয়া;
২০)ব্লিচ এ ক্রিয়া;
২১)এসিড এ ক্রিয়া;
২২)ক্ষার এ ক্রিয়া ;
২৩)জৈব দ্রাবকে ক্রিয়া;
২৪)রঙ ধারণ ক্ষমতা ;
২৫)ছএাকে ক্রিয়া;
২৬)কীট পতঙ্গের আক্রমণ ;
২৭)ধোয়া ও যত্নে সুবিধা।
কানিজ ফাতিমা
বাংলাদেশ গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজ
বস্ত্র পরিচ্ছদ ও বয়নশিল্প বিভাগ