Friday, November 22, 2024
Magazine
More
    HomeTechnical Textileমহাকাশেও যখন টেক্সটাইলের ব্যাপকতা !

    মহাকাশেও যখন টেক্সটাইলের ব্যাপকতা !

    মহাকাশে টেক্সটাইল ধারনাটি আসে এরোস্পেস টেক্সটাইল থেকে। এরোস্পেস হল পৃথিবীর বায়ুমন্ডলের মধ্যে বিমানের বিজ্ঞান এবং বায়ুমন্ডল ছাড়িয়ে একটি বাহনের চলাচল। মহাকাশ টেক্সটাইল বিমান উড়ানোর পুরো বর্ণালীকে আলিঙ্গন করে। মহাকাশের টেক্সটাইল হল প্রযুক্তিগত টেক্সটাইল। পাইলটের কাপড় থেকে শুরু করে বিমানের যেকোনো টেক্সটাইল এপ্লিকেশনে মহাকাশ টেক্সটাইল ব্যবহৃত হয়। এয়ারক্রাফট স্পেস স্যুট, স্পেসশার্টল, চন্দ্র এবং মঙ্গল মিশন ইত্যাদিতে আধুনিক টেক্সটাইল ব্যবহার নিশ্চিত করেই মহাকাশ টেক্সটাইল এর অন্তর্ভুক্ত।

    টেক্সটাইল হল মানুষের দ্বিতীয় মৌলিক চাহিদা। পৃথিবী সৃষ্টির শুরু থেকে মানুষের লজ্জা নিবারন, উষ্ণতা ও বিভিন্ন সম্পদ প্রদর্শনের ক্ষেত্রে বস্ত্রের ব্যবহার রয়েছে। বর্তমানে টেক্সটাইল শিল্প মহাকাশেও সুরক্ষা প্রদান করছে।

    🔸 মহাকাশচারী কন্যাঃ রাশিয়ান মহাকাশচারী ভেলেন্টিনা তেরেস্কোভা প্রথম কনিষ্ঠ  মহিলা মহাকাশচারী সদস্য। তিনি ৪৮ বার পৃথিবী প্রদক্ষিন করেছেন এবং ৩ দিন মহাশূন্যে কাটিয়েছেন । তিনি ছোট থেকে মহাকাশ নিয়ে স্বপ্ন বুনতেন। তিনি ভাবতেন “তিনি একদিন পাইলট হবেন এবং প্যারাসুট নিয়ে লাফ দিয়ে নেমে পড়বেন বিমান থেকে”। অবাম করা বিষয় হচ্ছে তিনি নিজেও ছিলেন একজন টেক্সটাইল কর্মী এবং স্কাই-ড্রাইভার। তবে তিনি  যোগ্যতা অর্জনের পর আর কখনো মহাকাশে যাননি।।

    🔸 টেক্সটাইল শিল্পের যাত্রাঃ এই শিল্পর যাত্রা শুরু হয় ৬০০০ খ্রিস্টপূর্বে। প্রমাণস্বরূপ, WOODEN টেক্সটাইল দক্ষিন তুরষ্কে পাওয়া যায়। এরপর ৫০০০খ্রিস্টপূর্বে ভারত, পাকিস্তান, পূর্ব আফ্রিকায় প্রথম কাপড় আবিষ্কৃত হয়।এরপর থেকে টেক্সটাইল শিল্পের উন্নতি চোখে পরার মত। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে এটি উন্নতির চরম পর্যায়ে যাত্রা করছে।বর্তমানে এটি মহাকাশের আলোচনায় জায়গা করে নিয়েছে। নাসার বিজ্ঞানীরা দীর্ঘদিন যাবৎ মহাকাশে মানুষ পাঠাতে কাজ করে যাচ্ছেন। তাই তারা অসংখ্য টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারদের গবেষণায় নিযুক্ত করেছে স্পেস স্যুট এবং ন্যানোফাইবার ও কার্বন ফাইবার শিন্ড তৈরীর জন্যে।।

    🔹 Aerospace textile তৈরির কাঁচামাল: এক্ষেত্রে বেশ কয়েকধরনের কাচামাল ব্যবহৃত হয়ে থাকে।

    🔸 কার্বন ফাইবার: এটি ০.০০০২-০.০০০৪ ‘ব্যাসের  পাতলা ফাইবার ধারণকারী উপাদান এবং বেশিরভাগ কার্বন পরমাণুগুলো  ক্রুয়েড তেলের ক্র্যাকিং প্রক্রিয়ার সময় উপজাত হিসাবে উৎপাদিত হয়। এটাকে গ্রাফাইট ফাইবার বলা হয়।

    বৈশিষ্ট্যঃ

    ▫ হাই স্ট্রেন্থ।
    ▫তাপ প্রতিরোধক।
    ▫রাসায়নিক প্রতিরোধক।

    ব্যবহারঃ

    ▫তাপ অন্তরক উপকরণ হিসাবে ব্যবহার করা হয়।
    ▫বিমানের মেশিন, স্পেস রকেটের জন্য বিশেষ উপাদান তৈরিতে এবং
    ▫ডিজাইনের জন্য কাঁচামাল হিসাবে ব্যবহৃত হয়।

    🔸 Kevlar fibers:

    Kevlar Aramid fibers এর বানিজ্যিক নাম। তারা হয় তাপরোধী ও উচ্চ শক্তিসম্পন্ন। ঘর্ষণ প্রতিরোধক।এমনকি উচ্চতর তাপমাত্রায় ফেব্রিক ভাঙ্গনরোধ করে। এরা প্রতিরোধক ও নমনীয়। Kevlar ফাইবার উচ্চগুনগত মান সম্পূর্ণ।

    ব্যবহারঃ বিমানের বিভিন্ন ছোট-খাট অংশ মেরামতের কাজে ব্যবহার হয়।

    🔸 আলুমিনা-বোরিয়া-সিলিকা ফাইবার: নেক্সটেল আলুমিনা-বোরিয়া-সিলিকা ফাইবারের বানিজ্যিক নাম।

    বৈশিষ্ট্যঃ

    এগুলো তাপ প্রতিরোধক।এরা প্রতিরোধক ও স্থিতিস্থাপক গুনাবলি প্রদর্শন করে থাকে। উচ্চ তাপমাত্রা ১৫০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস সহ্য করতে পারে।

    🔸 নাইলন ফাইবার:

    নাইলন 6,6 হ্যাক্সামেথিলিন হীরা এবং এডিপিক এসিড থেকে তৈরি, যা নাইলন 6,6 মোট 2 কার্বন দেয়। তাপ প্রতিরোধক.ঘর্ষণ প্রতিরোধক।

    🔸 ই গ্লাস:

    ই-গ্লাস বা বৈদ্যুতিক গ্রেডটি মূলত বৈদ্যুতিক তারের জন্য  তৈরি করা হয়েছিল। পরে এটিতে চমৎকার ফাইবার গঠনের ক্ষমতা পাওয়া যায় এবং এটি কেবলমাত্র ফাইবার গ্লাস বা গ্লাস ফাইবার নামে পরিচিত। যে কোন বস্তুকে অধিক শক্তিশালী করতে ব্যবহার হয় এটি।

    🔸 মহাকাশচারীর কাপড়ের বৈশিষ্ট্যঃ

    ▫উচ্চ শক্তি সম্পন্ন;
    ▫নির্দিষ্ট মডিউলাস
    ▫চাপ প্রতিরোধী
    ▫তাপ নিরোধক এবং তাপ প্রতিরোধী;
    ▫কম জ্বলনক্ষমতা সম্পন্ন;
    ▫ক্ষতিকারক বিকিরণ ও তাপপ্রতিরোধী;
    ▫আরামদায়ক;
    ▫স্থিতিশীলতা প্রদর্শন করে।
    ▫এয়ারস্পেসের উপাদানগুলি রক্ষনাবেক্ষন;

    দৃঢতার দিক থেকে বৈশিষ্ট্য —

    ১) UV স্থিতিশীলতা
    ২)ঘর্ষন প্রতিরোধক

    🔸 মহাকাশে টেক্সটাইলের এপ্লিকেশনঃ

    ▫মহাকাশযানের আসন বেল্ট তৈরীতে;
    ▫আসনকভার তৈরীতে;
    ▫ মেঝের কার্পেট তৈরীতে;
    ▫পর্দা তৈরীতে।

    🔸 মহাকাশ টেক্সটাইল নিয়ে কাজ করছে এমন ইন্ডাস্ট্রিঃ

    ▫Boeing, United states
    ▫Airbus
    ▫Lockheed Mastin, United states
    ▫United Technologist, United states
    ▫Raytheon, United states

    সবশেষে বলা যায় প্রযুক্তির উন্নয়নের সাথে সাথে মানুষ যেমন পৃথিবী থেকে মহাকাশগমন করছে সেই সাথে ভ্রমন উপযোগী পোষাকও উৎপাদিত হচ্ছে। সর্বোপরি, মহাকাশেও টেক্সটাইলের ব্যাপকতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

    তথ্যসূত্রঃ textilelearner, arts blog, slideshare.com, wikipidia

    Written By:

    অর্পিতা সাহা
    এ্যাপারেল ইঞ্জিনিয়ারিং (২য় ব্যাচ)
    ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া টেক্সটাইল ইন্জিনিয়ারিং কলেজ

    Previous article
    Next article
    RELATED ARTICLES

    LEAVE A REPLY

    Please enter your comment!
    Please enter your name here

    Related News

    - Advertisment -

    Most Viewed