Tuesday, December 3, 2024
Magazine
More
    HomeCareerমার্চেন্টডাইজিং টু মার্চেন্টডাইজার

    মার্চেন্টডাইজিং টু মার্চেন্টডাইজার

    আমরা সবাই কম বা বেশি শব্দটার সাথে পরিচিত। তবে সবার পরিচিত হবার ব্যাপার টি ভিন্ন ভিন্ন। ধরুন অষ্টম শ্রেণীর একজন শিক্ষার্থী তাদের আনন্দ পাঠ বই এর ” মার্চেন্ট অব ভেনিস” গল্প টি পড়ার পর এই শব্দ টি শুনলে বলে নিশ্চয়ই ব্যাবসা সংক্রান্ত কোন ব্যাপার, আবার একজন টেক্সটাইল সম্পর্কিত কোন ব্যাক্তিকে করা হয় প্রশ্নটি তিনিও বলবেন একই উত্তর। অর্থাৎ সবার উপলব্ধি একই কিন্তু পরিস্থিতি এবং পরিচিতি গুলো ভিন্ন ভিন্ন। এখন মনে হতে পারে আসোলে মার্চেন্ডাইজিং এর প্রকৃত অর্থ টা কি তাহলে? বুঝতে পারবেন ঠিকমতো শুধু একটু বোঝার চেষ্টা করুন আস্তে আস্তে।

    মার্চেন্টডাইজিং কে সাধারণ অর্থে আমারা বলতে পারি যেকোন বৈধ পণ্য কেনা বেচা করা। বৃহৎ অর্থে বলতে গেলে, আয় করাকে লক্ষ্য স্থির করে কোন পণ্য ক্রয় করার পর তা আবার বিক্রি করার যে পদ্ধতি সেটিই হলো মার্চেন্ডাইজিং । আর মার্চেন্টডাইজিং এর কাজটি যিনি করে থাকেন তিনিই হলেন মার্চেন্ডাইজার।

    পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে নানা ক্ষেত্রে মার্চেন্টডাইজার কাজ করতে বা গুরুত্ব দিতে দেখা গেলেও বাংলাদেশে মূলত পোশাক শিল্পে মার্চেন্ডাইজারদের গুরুত্ব অধিকতর বা বলা যায় মার্চেন্টডাইজার বলতে মূলত আমাদের দেশে টেক্সটাইল সেক্টরে কর্মরত মার্চেইন্টডাইজার দের কেই বোঝায়। যেহেতু তাদের কাজ ক্রয় বিক্রয় সংক্রান্ত সেহুতু তাদের নিজস্ব অফিস রয়েছে যাকে বলে বায়িং হাউস। কিছু কিছু ক্ষেত্রে তারা গার্মেন্টস এই কাজটি সম্পাদন করেন। ক্রেতার কাছ থেকে গার্মেন্টস সামগ্রীর অর্ডার নেয়া থেকে শুরু করে প্রাপ্ত সামগ্রীর দেশের অভ্যন্তরে বা দেশের বাইরে চালান দেওয়া পর্যন্ত সকল প্রকার ক্রয়- বিক্রয় এর হিসাব নিকাশ করে থাকেন একজন মার্চেন্ডাইজার।

    কিন্তু যত সহজ মনে হচ্ছে কাজটি, আসোলে সেটি তত সহজ নয় বরং যথেষ্ট কঠিন সেই সাথে পরিশ্রমেরও বটে।এই কাজের জন্য সাধারন কিছু যোগ্যতা হচ্ছে, টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রি গুলো সম্পর্কে গভীর ভাবে জানতে হবে, জানতে হবে আমদানি-রপ্তানির সাথে জড়িত সকল প্রক্রিয়া সম্পর্কে । থাকতে হবে দীর্ঘক্ষন পরিশ্রম করবার মানসিকতা, সেই সাথে ইংরেজী ভাষায় প্রচুর দক্ষতা, জানতে হবে বায়ারদের সন্তুষ্ট করা উপায়। হতে হবে অর্থনৈতিক হিসাব-নিকাশ ও পরিকল্পনায় দক্ষ। যদিও এই দক্ষতা গুলোর পাশাপাশি আরো অনেক দক্ষতা প্রয়োজন। মার্চেন্ডাইজারদের আরো কিছু কাজ আমাদের জানা প্রয়োজন ।

    আগেই বলেছি মার্চেন্ডাইজারদের কাজ ফ্যাক্টরি ও বায়িং হাউস নিয়েই। তবে মার্চেন্টডাইজার যে দুই ধরনের তা জানা দরকার। গার্মেন্টসের মার্চেন্টডাইজার এবং বায়িং হাউস এর মার্চেন্টডাইজার। যারা বায়িং হাউসের মার্চেন্ডাইজার তাদের কাজ হলো বিদেশি ক্রেতাদের সাথে যোগাযোগ করে পণ্য বিক্রির প্রস্তাব দেন এবং বায়ার বা ক্রেতা যদি রাজি হন তাহলে তাদের কোম্পানির প্রোডাক্টের স্যাম্পল দেখানো হয়। সেই সাথে প্রোডাক্ট তৈরির উপকরণ, প্রোডাক্ট এর মান,প্রোডাক্ট কতটুকু টেকসই হবে এই বিষয় গুলো সহ প্রোডাক্টের সব গুণামান তুলে ধরে এসব বিষয় নিয়ে কথা বলেন এবং বিদেশী ক্রেতারা যদি তা পছন্দ করেন তাহলে দামের বিষয়টি চূড়ান্ত করা হয় সেই সাথে তাদের সাথে চুক্তি করা হয়। মার্চেন্টডাইজাররা বায়ারদের চাহিদা অনুসারে ফ্যাক্টরিতে প্রোডাক্ট তৈরি থেকে শুরু করে শিপমেন্ট পর্যন্ত পুরো কাজ দেখে থাকেন।

    এবার আসি ফ্যাক্টরির মার্চেন্টডাইজার দের কাছে, তাদের কাজ হলো তারা বায়িং হাউসের মাধ্যমে পাওয়া কাজ নির্ধানণ করে দেয়া সময়ের মাঝেই তৈরি করা ও পণ্যের মান যেনো যুতসই থাকে সেই বিষয়টি দেখভাল করেন। এবং সব পন্য প্রস্তুত হলে তা আবার বায়িং হাউসের মার্চেন্ডাইজারদের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া পর্যন্ত তাদের কাজ সীমা । আবার অনেক ক্ষেত্রে দেশের বাইরে থেকে পণ্যের জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ইমপোর্ট ও এলসি খোলার কাজও করেন তাঁরা । যদি এক কথায় বলি তাহলে বলা যায়, একটি অর্ডারকে বাস্তবায়নের জন্য সব ধরনের কাজ করাটাই হচ্ছে একজন মার্চেন্ডাইজারের দায়িত্ব। এছাড়াও তাদের কিছু আনুসাঙ্গিক কাজ রয়েছে যা বায়ারদের সাথে সুসম্পর্ক ধরে রাখা, নিয়মিত কাজের রিপোর্ট তৈরি করা, এমনকি অনেক সময় উৎপাদন খরচ কমাতে বিকল্প ব্যবস্থার পরামর্শ দিতে হয়।

    বাংলাদেশ পোশাক শিল্পে অনেক এগিয়ে রয়েছে। যেখানে মার্চেন্টডাইজার অবদান কোন ভাবেই ছোট করে দেখবার নয়। বর্তমানে দেশে যেমন রয়েছে চার হাজারের অধিক পোশাক শিল্প কারখানা, সেই সাথে রয়েছে তিনশত এর মত বায়িং হাউজ।এসব প্রতিষ্ঠানে যেমন রয়েছে অনেক মার্চেন্টডাইজার সেই সাথে রয়েছে দক্ষ ও অভিজ্ঞ মার্চেন্টডাইজার এর সংকট।যে খাতে ব্যাবসায়ীরা প্রতিবছর বিলিয়ন ডলারের ব্যবসা করে থাকেন সে খাতে যদি দক্ষ মার্চেন্টডাইজার এর ঘাটতি থাকে তাহলে তা হবে পোশাক শিল্পের জন্য হুমকি সরুপ। তাই যারা ভবিষ্যতে নিজেকে একজন সফল মার্চেন্টডাইজার হিসেবে দেখতে চান তাদেরকে অবশ্যই সৃজনশীল কাজ করার পরিধি বাড়াতে সেই বাড়াতে হবে পেশা সংশ্লিষ্ট জ্ঞান এর ভান্ডার ও অভিজ্ঞতা।

    তথ্যসূত্র :
    https://en.m.wikipedia.org/wiki/Merchandising?fbclid=IwAR3ckbe-vjlTYzzPonDWWmw3qHQPE5mWVtMPpSs_tYc_9xAT-C6icP6eric

    Writer information:
    Muntachir Rahman
    Department Of Textile Engineering
    Batch:201
    BGMEA UNIVERSITY OF FASHION AND TECHNOLOGY

    RELATED ARTICLES

    LEAVE A REPLY

    Please enter your comment!
    Please enter your name here

    Related News

    - Advertisment -

    Most Viewed