একসময়ের “সোনালী আঁশ” খ্যাত পাট ও পাটজাত দ্রব্য বিভিন্ন কারণে এদেশে তাঁর জৌলুস হারায়। গত ২৮ই জুন পাটমন্ত্রী বক্তব্য অনুসারে দেশে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে রাষ্ট্রয়াত্ব পাটকলগুলি। দেশে পাট ও পাটজাত পণ্যের যখন এমন বেহাল দশা, ঠিক তখনি আলোর দিশা হয়ে দাঁড়িয়েছে “আকিজ জুট মিলস লিমিটেড”। পাট সুতা উৎপাদনে বিশ্বের সবচেয়ে বড় মিল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। বিশ্ববাজারে যখন পাটের বার্ষিক চাহিদা চার থেকে সারে চার লাখ টন, তখন আকিজ জুট মিলস এক লাখ টন পাটের সুতা উৎপাদন করছে। অর্থ্যাৎ বিশ্বে পাটের সুতার মোট চাহিদার ২৫% সরবরাহ করছে উক্ত মিলসটি। গত অর্থবছরে পাটকলটি রপ্তানী আয় প্রথমবারের মতন ১০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যায়; যা প্রতিষ্ঠানটির জন্য বড় রেকর্ড। সারা বিশ্বে মোট ৪০ টির মতন দেশে পাটের সুতা রপ্তানী করছে প্রতিষ্ঠানটি। এখানে প্রত্যক্ষভাবে ১০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে এবং পরোক্ষভাবে ১৫ হাজার মানুষ এই প্রতিষ্ঠানটির পাটের সুতা উৎপাদনের ওপর নির্ভরশীল। প্রতিষ্ঠানটি প্রতিদিন ৩৯০ টন সুতা উৎপাদন করছে। আকিজ গ্রুপের চেয়ারম্যান সেখ নাসির উদ্দিন এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “পাট খাতের দীর্ঘদিনের ব্যবসায়ী হিসেবে আমার বাবা এ খাতের সুনাম ফিরিয়ে আনার জন্য আমাকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন। ১৯৯৭ সালের শেষের দিকে খুলনায় পাটকলের দায়িত্ব নিই। এরপর পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা আনার পাশাপাশি পাটপণ্যের মানে পরিবর্তন আনি। এর কয়েক বছরের মধ্যেই সফলতা ধরা দেয়। সৃষ্টিকর্তার রহমতে বিশ্বের সবচেয়ে বড় পাট সুতা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানে রূপান্তর করতে পেরেছি আমাদের মিলকে। তকদির ও চেষ্টার মাধ্যমে দেশের সুনাম ও মর্যাদা বৃদ্ধি করব। দেশবাসীর দোয়া ও সহযোগিতা নিয়ে শুধু আকিজ জুট মিলসের মাধ্যমেই ৫০ হাজার কর্মসংস্থান করার স্বপ্ন রয়েছে। এজন্য নতুন কারখানা স্থাপন ও দক্ষতা এনে বৈশ্বিক বাজারে আমাদের অবস্থান আরো সুসংহত করব। আমাদের পণ্যের মান ভালো হওয়ায় ক্রেতারা আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের সঙ্গেও ব্যবসা করতে ইচ্ছুক”।
পাট ও পাটজাত দ্রব্য রপ্তানীতে অসামান্য অবদান রাখার জন্য প্রতিষ্ঠানটি টানা ১৫ বছর জাতীয় রপ্তানী ট্রফি (স্বর্ণ) অর্জন করে দেশের শীর্ষস্থান দখল করে আসছে। এছাড়া ২০১৮-২০১৯ অর্থ বছরে পাট শ্রেণীতে সর্বোচ্চ আয়কর প্রদানকারী ট্যাক্স কার্ড সম্মাননা-২০১৯ পেয়েছে দেশের স্বনামধন্য এ প্রতিষ্ঠানটি।
তথ্যসূত্রঃ bonikbarta.net
Writer: Mehedi Hasan Shojol
1st batch, Wet Process Engineering.
Sheikh Kamal Textile Engineering College, Jhenaidah.