ইন্টারলাইনিং এর মূল কাপড়ের উপর রেজিনের প্রলেপ বা কোটিং দিয়ে ফিউজিবল ইন্টারলাইন তৈরি করা হয়। রেজিনের কোটিং এর প্রকারভেদের উপরও ইন্টারলাইনিং এর গুণাগুণের তারতম্য ঘটে। বিভিন্নভাবে রেজিন কোটিং করা যায়, – তবে সবচেয়ে বহুল ব্যবহৃত কোটিংসমূহ এখানে আলােচনা করা হল।
১। স্ক্যাটার কোটিং (Scatter coating):এ পদ্ধতিতে একটি বিশেষ ধরনের হেড দ্বারা রেজিনকে অতি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কণার আকারে ইন্টারলাইনিং এর মূল কাপড়ের উপর বিক্ষিপ্তভাবে ছিটনাে হয়। অতঃপর তাপের দ্বারা রেজিনকে গলানাে হয় এবং চাপের দ্বারা গলিত রেজিনকে ইন্টালাইনিং এর কাপড়ের সাথে ভালভাবে জোড়া লাগানাে হয়। যখন ইন্টারলাইনিং এর মধ্যস্থ রেজিনের তাপমাত্রা কমে যায় তখন রেজিনের প্রলেপ ইন্টারলাইনিং এর মূল কাপড়ের সাথে দৃঢ়ভাবে লেগে যায়। স্ক্যাটার কোটিং পদ্ধতিতে রেজিনের কণার আয়তন ১৫০ থেকে ৪০০ মাইক্রন হয়ে থাকে যা অন্যান্য পদ্ধতি অপেক্ষা বড় সাইজের।
২। ড্রাই ডট কোটিং (Dry dot coating): রেজিনের মিহি পাউডার 5 এনগ্নেভড় রােলারের সাহায্যে ডাই আকারের ইন্টালাইনিং এর মূল কাপড়ের উপর – প্রিন্ট করা হয়। অতঃপর ডট প্রিন্টেড কাপড়কে ওভেন এর ভিতর দিয়ে অতিক্রম। 1 করানো হয়। ওভেনের তাপের ফলে রেজিন গলে যায় এবং রােলারের চাপে গলিত রেজিন ইন্টারলাইনিং এর মূল কাপড়ের সাথে ভালভাবে লেগে যায়। বিভিন্ন প্রকার।ড্রাই ডটের ক্ষেত্রে রেজিনের কণার আয়তন ৮০ থেকে ২০০ মাইক্রন পর্যন্ত ব্যবহার করা হয়। পাতলা কাপড়ের জন্য ছােট আকারের ডট ও মােটা কাপড়ের জন্য বড় আকারের ডট নির্ধারণ করা উচিত।
৩। পেস্ট কোটিং (Paste coating):এ পদ্ধতিতে মিহি রেজিন পাউডারকে পানি ও কেমিক্যালস এর সাহায্যে পেষ্টে এ রূপান্তরিত করা হয়। অতঃপর ঐ পেস্টকে নির্দিষ্ট প্যাটার্নে খুবই ছােট ছােট ডট আকারে ইন্টারলাইনিং এর। মূল কাপড়ের উপর প্রিন্ট করা হয়। তারে সহায়তায়, পানি ও কেমিক্যালসকে পেষ্ট এর ডট হতে বিতাড়িত করা হয়, ফলে রেজিনের ডট কাপড়ের সাথে লেগে থাকে। পেষ্ট কোটিং এ রেজিনের কণার সাইজ ১ থেকে ৮০ মাইক্রন পর্যন্ত হয়ে থাকে। এ পদ্ধতিতে সবচেয়ে ছােট সাইজের ভট বিশিষ্ট রেজিনের কোটিং দেওয়া হয়।
৪। ফিল্ম কোটিং (Film coating): এ পদ্ধতিতে রেজিনকে তাপের সাহায্যে গলিয়ে মেশিনের সাহায্যে পতলা ফিল্ম (Film) আকারে ইন্টারলাইনিং এর মূল কাপড়ের উপর প্রলেপ দেওয়া হয়। পলিইথিলিন রেজিনের কোটিং সাধারণত এ পদ্ধতিতে বেশি ব্যবহার করা হয়। ফিল্ম কোটেড ইন্টারলাইনিং এর নমনীয়তা কম থাকে।
৫। ইমালশন কোটিং (Emulsion coating): এ পদ্ধতিতে রেজিনের পাউডারকে পানি ও কেমিক্যালস দ্বারা ইমালশনে রূপান্তর করা হয়। অতঃপর ইটারলাইনিং এর মূল কাপড়কে ইমালশন এর পাত্রের মধ্য দিয়ে অতিক্রম করানাে হয়, ফলে কাপড় ইমালশন শুষে নেয়। একজোড়া ইজিং রােলারের সাহায্যে অতিরিক্ত ইমালশন কাপড়ের মধ্যে হতে অপসারিত করা হয়। অবশেষে ইমালশন যুক্ত কাপড়কে একটি ওভেন এর মধ্য দিয়ে অতিক্রম করানাে হয়, ফলে কাপড় শুকিয়ে যায় ও কাপড়ের মধ্যে সুন্দরভাবে ঝেজিনের প্রলেপ কাপড়ের উভয় দিকে লেগে যায়। এ ধরনের কোটিং বিশিষ্ট ইন্টারলাইনিং ফিউজিং-এর পর হাতে ধরলে বেশ শক্ত মনে হয়।
লেখক পরিচিতি:
তানভির আাহামেদ
বুটেক্স (ব্যাচ-৪৪)