মানুষের মৌলিক চাহিদার মধ্যে বস্ত্রের স্থান দ্বিতীয়। সমাজে চলাচলের ক্ষেত্রে বস্ত্রের মাধ্যমেই মানুষ একে অপরের আর্থিক, মানসিক ও মানবিক দিক বিবেচনা করে থাকে।
মানুষের ধারণা যার পরিধেয় বস্ত্র যত উন্নত সে আর্থিকভাবেও ততটাই উন্নত। মানুষ তার আর্থিক অহমিকা প্রকাশের জন্য বস্ত্রের উপর নির্ভর করে। যে যত বিলাসবহুল বস্ত্র পরিধান করে সে যেন ততটাই উন্নতির শিখড়ে পৌছে গেছে। আর এই বিলাসবহুল বস্ত্র তৈরীতে রেশম তন্তু ব্যাবহৃত হয়।
রেশমের প্রধান গুণ হচ্ছে এর সৌন্দর্য। প্রায় তিন শতাধিক রঙের রেশম পাওয়া যায়। রেশম এক প্রকারের ফিলামেন্ট ফাইবার। যা অতি সূক্ষ্ম ও নমণীয়। পলু পোকা তার মুখ নিঃসৃত রেজিন সদৃশ লালা দিয়ে তার শরীরের চারিপাশে ডিম্বাকৃতির গুটি তৈরি করে। যাকে কোকুন(Cocoon) বলা হয়।
এই গুটি তৈরি করে বলেই এই পোকাকে গুটি পোকা বলা হয়। খৃষ্টপূর্ব ২৬০০ বছর পূর্বে চীন দেশে প্রথম Cocoon থেকে রেশম উদ্ভাবিত হয়। চীনের বিখ্যাত দার্শনিক কনফুসিয়াস (Confucius) এর রচনা থেকে জানা যায়। চীনের সম্রাট হুয়াংটাই( Huang-Ti) এর ১৪ বছর বয়সী স্ত্রী সাই লিং শি(Hsi Ling Shi) সর্বপ্রথম কোকুন থেকে রেশমের সুতা আবিষ্কার করেন।
Hsi Ling Shi কে Godess of the silk worms বলা হতো। গল্পে আছে, একদিন সাই লিং শি বাগানের তুঁত গাছের নিচে বসে চা পান করছিলেন। এমন সময় গাছ হতে রেশম পোকার কোকুন এসে তার গরম চায়ে পড়ে।
যখন তিনি কোকুনটি তোলার চেষ্টা করেন। তখন তিনি অবাক হয়ে লক্ষ্য করেন কোকুন হতে সুতা সদৃশ পদার্থ বেরিয়ে আসছে। তিনি এর রহস্য খোজা শুরু করলেন এবং তুঁত গাছে এই কোকুনের রহস্য আবিষ্কার করলেন। Bombyx mori বৈজ্ঞানিক নামধারী কোকুন থেকেই সাই লিং শি রেশম সুতার খোঁজ পান। তিনিই প্রথম রেশম চাষ শুরু করেন। যাকে কৃষি বিজ্ঞানের ভাষায় Sericulture বলা হয়।
লিখেছেনঃ মাহফুজ সাকিব ৮ম ব্যাচ,
বাতাঁশিপ্রই, নরসিংদী।