বর্তমান সময়ে আমাদের নিত্য পরিধেয় বস্ত্রগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো শার্ট। মিটিং থেকে শুরু করে যে কোনো ধরনের পার্টি, বিয়ের অনুষ্ঠান অথবা প্রতিদিন এর ব্যবহারে শার্ট আমাদের একটা অবিচ্ছেদ্য অংশ তে পরিণত হয়েছে। একটা সুন্দর, মার্জিত, ফ্যাশনবেল শার্ট আমাদের বাহ্যিক সৌন্দর্যটাকে ফুটিয়ে তুলে। একজন মানুষ এর ফ্যাশন সচেতনতা,তার স্টাইল এই সব তার পরিধেয় পোশাকটি ফুটিয়ে তোলে। আগেকার দিনে মানুষ ঢিলেঢালা পোশাক পরলেও বর্তমানে সবাই চায় তার শরীরের সঙ্গে মানানসই ফিট পোশাক পরিধান করতে। ঠিক তেমনিভাবে শার্ট এর ক্ষেত্রেও বর্তমানে সবাই চায় তার শরীরের সঙ্গে মানানসই এমন শার্ট কিনতে ও পরিধান করতে। ফ্যাশন হাউসগুলো বর্তমানে বিভিন্ন সাইজ এর শার্ট বানালেও প্রত্যেকের শরীরের গঠন অনুযায়ী শার্ট কেনার সময় আমাদের কিছু জিনিস দেখে কিনতে হবে যাতে করে তা আমাদের শরীরের সাথে মানানসই হয়। শার্ট কেনার সময় তাই যেসব দিকগুলো বিবেচনা করা দরকার তা নিচে উল্লেখ করা হলঃ
১) কলার ফিট:
শার্ট এর ক্ষেত্রে প্রথমত কলার এর মাপটা সঠিক হতে হবে। এক্ষেত্রে শার্ট এর উপরের বোতামটা বণ্ধ করলে তা যেনো গলার সাথে টাচ করে এই দিকটা দেখতে হবে এবং গলা ও কলার এর মধ্যে অবশ্যই দুই আঙ্গুল পরিমাণ ফাঁকা থাকতে হবে। শার্ট মানানসই হবার এটি অন্যতম শর্ত। যদি দুই অাঙ্গুল এর কম ফাঁকা থাকে তাহলে গলায় ব্যাথা পাব আমরা এবং ব্যবধান দুই আঙ্গুল এর বেশি হলে দেখতে খারাপ লাগবে এবং শরীরের সাথে মানানসই হবে না।
২) শোল্ডার ফিট:
শোল্ডার বা কাঁধের জন্য, শোল্ডার এবং হাতার মাঝে যে সেলাইটা আছে ওটা যাতে কাঁধের শেষ প্রান্ত বরাবর হয় তা খেয়াল রাখতে হবে। সেলাইটি যদি কাঁধের নিচে চলে যায় তাহলে শার্টটি ঢিলেঢালা হবে; সেলাইটি যদি কাঁধের শেষ প্রান্তের আগে হয় তাহলে শার্টটি আঁটসাঁট হবে, যা খুবই বিরক্তিকর।তাই খেয়াল রাখতে হবে সেলাইটা যেন কাঁধের শেষ প্রান্তের বরাবর হয়।
৩) টর্সো ফিট:
টর্সো ফিট খুবই গুরুত্বপূর্ণ কেননা এটি শরীরের প্রায় অনেকটা জায়গা কভার করে থাকে যেমন; Chest বা বুকের অংশ, Waist বা কোমরের অংশ। এই টর্সো ফিট যদি সঠিক হয় তাহলে শার্ট পরিধানকারী শার্টের Button বা বোতাম লাগানোর সময় টান অনুভব করেন না। এইখেত্রে, সুইং এর সময় এলাউয়েন্স হিসেবে যদি অতিরিক্ত ১-১.৫ ইঞ্চি ফেব্রিক রাখা যায়, তাহলে এই ফিটিং এ তেমন কোনো সমস্যা থাকে না।
এই ফিটিং ভালো না হলে, শার্ট পরিধান করার পর, আপনার বুক আর পাঁজরের অংশের ফেব্রিকে ভাঁজ বা Wrinkles Effect দেখা যাবে। আবার, যদি বেশি এলাউয়েন্স দেওয়া হয়, তখন একটি Baggy Look এর সৃষ্টি হয়। যা দেখতে একদমই বাজে।
৪) স্লিভ ফিট:
স্লিভ বা হাতা এর ক্ষেত্রে হাতের উপরের দিকটার হাতা একটু ঢিলেঢালা হবে এবং নিচের দিকে কাফের অংশটা হাতের কব্জির সাথে লেগে থাকবে। উপরের দিকটা যদি কম ঢিলেঢালা হবে তবে হাত নাড়াচাড়া করতে সমস্যা হবে। আবার বেশি ঢিলেঢালা হলে কাফ এর দিকটা নিচে নেমে যাবে কব্জি থেকে।
৫) স্লিভ লেন্থ:
স্লিভ/হাতা এর দৈর্ঘ্য হবে কব্জির আগ পর্যন্ত এবং কাফ টা থাকবে ঠিক কব্জির উপর। কাফ টা এমন হতে হবে যেন আমরা জ্যাকেট অথবা কোর্ট পরিধান করলে কাফ এর কিছুটা অংশ দেখা যায় এবং ঘড়ি পরিধান করলে তাও যেন দেখা যায়।
৬) স্লিভ কাফ:
হাতার শেষে যে শক্ত অংশটা থাকে ওটাকে মূলত কাফ বলা হয়।স্লিভ কাফ টা মূলত এমন হতে হবে যেন তা পুরোপুরি কব্জিকে আচ্ছাদিত করবে এবং কাফের নিচে একটা ঘড়ি পরার মত জায়গা থাকবে।কাফটা প্রয়োজনমত যেন কব্জির উপরে নিচে আনা যায় ওই দিকটি লক্ষ্য রাখতে হবে।তবে বর্তমানে কাফে দুটো বোতাম ব্যবহার করা হয় যেন সবাই প্রয়োজনমত কাফটা ছোটো বড় করতে পারে।
টিপস: কাফ বা হাতার অংশ যদি বোতাম পরা অবস্থায় কব্জি থেকে নিচে নেমে যায় তাহলে তা সঠিক বা মানানসই হবে না। তাই এই দিকটি খেয়াল রাখতে হবে।
৭) শার্ট এর দৈর্ঘ্য:
শার্ট এর দৈর্ঘ্যটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। শার্ট এর দৈর্ঘ্য এর ক্ষেত্রে বেল্টের নিচে শুধু বাড়তি যেন ২-৩ ইঞ্চি থাকে।। ফরমাল শার্ট এর জন্য সাধারণত ২-৩ ইঞ্চি পরিমাণ বেশি থাকা লাগে বেল্ট এর নিচে; তবে ক্যাসু্য়াল শার্ট এর ক্ষেত্রে ১-১.৫ ইঞ্চি থাকলেই হয়।
টিপস: শার্ট পরিধান করে তা ইং করে বাহুগুলো প্রসারিত করার পর বেল্টের নিচ থেকে শার্ট যদি বেশি বের না হয় তাহলে বুঝতে হবে দৈর্ঘ্য ঠিক আছে।
উপরের এইসব দিকগুলো লক্ষ্য রেখে একজন তার জন্য তার শরীর অনুযায়ী মানানসই শার্টটি কিনতে বা বানাতে পারবে যা তার ব্যহিক সৌন্দর্য্যটাকে ফুটিয়ে তুলবে।
✅ Writer information:
Adnan Mahmud Arko
Primeasia University
Batch: 201
Campus Core Team Member (TES)