“সত্যিকার নেতা হওয়া মানে অন্যদের সফল হওয়ার পথ করে দেয়া এবং তাদের সফল হতে দেখা” -ক্রিস হ্যাডফিল্ড(ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশনের সাবেক কমান্ডার)
নেতৃত্ব(Leadership) হলো এক ধরনের শিল্প যার মাধ্যমে একদল লোককে কোন একটি লক্ষ্য অর্জন এর উদ্দেশ্যে কাজ করতে উদ্বুদ্ধ করা।নেতৃত্ব হলো এমন একটি গুণ যা অন্যদেরকে কোন একটি লক্ষ্য অর্জনের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় অনুপ্রেরণা যোগান দিতে সহায়তা করে।তাই যৌথ কোন কাজে সফলতা পেতে হলে নেতৃত্ব হতে হবে সুষ্ঠু ও সুশৃঙ্খল। নেতৃত্ব এর যোগ্যতাকে কাজে লাগিয়েই সহজেই সকল অসাধ্যকে সাধন করা যায়।শুধুমাত্র একজন সঠিক নেতা এবং নেতৃত্ব এর হাত ধরে কেবল একটি সমাজ বা গোষ্ঠীই নয়, দেশ বরং পুরো বিশ্ব বদলে যেতে পারে।একটি সমাজ,গোষ্ঠী, দেশ, জাতির উত্থান পতন এর প্রায় সবটুকুই নির্ভর করে সঠিক নেতৃত্ব ের উপর।সঠিক নেতৃত্ব বাস্তবায়ন না হলে সেই স্থানে সৃষ্টি হয় বিশৃঙ্খলা,বিরাজ করে না কোন প্রকার শান্তি-শৃঙ্খলা।
নেতৃত্ব একটি ধারাবাহিক চর্চার বিষয়।ছাত্র জীবন থেকেই সবার এই বিষয়ের উপর চর্চা রাখা দরকার।সফল নেতৃত্ব এর মাধ্যমে একজন নেতা সহজেই কোথায় কোন সমস্যা হচ্ছে তা সহজেই বের করে তার সমাধান বের করে ফেলে। নেতৃত্ব অর্জন করতে হলে অবশ্যই আমাদের নেতৃত্ব বিকাশ সাধন এবং চর্চায় মনোনিবেশ করা উচিত।নেতৃত্ব এর গুণাবলী গড়ে তোলার জন্য কোন ধরনের নির্দিষ্ট সাজেশন নেই তবে রয়েছে কিছু পরামর্শ-
- সৎ মতে,সৎ মতে থাকতে হবে।
- স্পষ্টভাষী হতে হবে।বলার থেকে শোনায় বেশি মনোনিবেশ করতে হবে।ভালো শ্রোতা হতে পারা বড় একটি গুণ।
- মানুষের সাথে সংযোগ তৈরি করতে হবে,বিশ্বস্ততা বজায় রাখতে হবে। প্রাচীন চীনা দার্শনিক লাও ঝু বলেছেন, “শ্রেষ্ঠ নেতা সে-ই,যার অধীনে কোনও কিছু অর্জিত হলে তার সাথে জড়িত প্রতিটি মানুষই ভাবে যে তারা সবাই মিলে কাজটি করেছে”
- ইতিবাচক মনমানসিকতা বজায় রাখতে হবে,এর ফলে বাড়বে কর্মক্ষমতা।
- পারিপার্শ্বিক বিষয়গুলো পর্যবেক্ষনের অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।যদি চোখ,কান খোলা রেখে পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে কাজ করা যায় সেক্ষেত্রে পাওয়া যেতে পারে আশাতীত ফলাফল।
- অবশ্যই হতে হবে ধৈর্য্যশীল।মনে রাখতে হবে যে জয়-পরাজয় জীবনেরই অংশ। অর্জনে মাত্রাতিরিক্ত গর্ব বা হেরে যাওয়ায় মাত্রাতিরিক্ত হতাশা কোনটিই একজন নেতার জন্য কাম্য নয়।
লিঙ্কন ইউনিভার্সিটির সহকারী অধ্যাপক এন মেরি ই. ম্যাকসোয়েনের মতে, “নেতৃত্ব আসলে ক্ষমতা : নেতাদের শোনার ও পর্যবেক্ষণ করার ক্ষমতা, সব স্তরের সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে আলোচনা শুরু করায় উৎসাহ দানে নিজেদের দক্ষতা কাজে লাগানোর ক্ষমতা, সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে সঠিক প্রক্রিয়া ও স্বচ্ছতা প্রতিষ্ঠিত করার ক্ষমতা, জোর করে চাপিয়ে না দিয়ে নিজেদের মূল্যবোধ ও দূরদর্শিতা স্পষ্টভাবে প্রকাশ করার ক্ষমতা।”
কেউ জন্ম থেকে এসব গুণ নিয়ে জন্ম নিয়ে জন্ম নেয় না,সব কিছু হচ্ছে সাধনা এবং চর্চার মাধ্যমে অর্জিত হয়।তাই ছাত্র জীবন থেকেই নেতৃত্ব এর গুণাবলি নিয়ে চর্চা থাকা প্রয়োজনীয়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সামাজিক সংগঠন এবং লিডারশিপ ট্রেনিংগুলোতে যোগদানের মাধ্যমে আমরা নেতৃত্বের চর্চা করতে পারি। দেশ ও জাতির উন্নয়নে অবদান রাখতে চাইলে নেতৃত্ব চর্চার বিকল্প নেই।
Source : www.investopedia.com, www.managementstudyguide.com
Mohammad Arshil Azim
Department Of Textile Engineering
BGMEA University Of Fashion & Technology(BUFT)