ঐতিহ্যবাহী ও সাংস্কৃতিক উৎসবগুলো মূলত কোনো একটি নির্দিষ্ট জাতি বা সম্প্রদায়ের সাথে সম্পর্কযুক্ত অনুষ্ঠান। তেমনি বাংলাদেশের প্রাচীন উৎসবগুলোর মধ্যে পুরান ঢাকার ‘সাকরাইন বা সংক্রান্তি’ উৎসব অন্যতম। এ উৎসব সমগ্র দেশব্যাপী পালিত না হলেও এর মাঝে রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ বাংলাদেশী সংস্কৃতি ও জনপ্রিয়তা। তাই একে ঐক্য, বন্ধুত্ব ও সম্প্রতি বৃদ্ধির প্রতীকও বলা হয়ে থাকে।
পৌষবিদায়ী সাকরাইন উৎসব জানুয়ারি ১৪/১৫ তারিখে অনুষ্ঠিত হয়। এসময় প্রায় প্রতিটি বাড়ির ছাদে লাইটিং করে সাজানো হয় ও মিউজিক সিস্টেম রাখা হয়। সাথে বিকেলে আয়োজন করা হয় ঘুড়ি উড়ানো, রাতে আতশবাজি ও রঙবেরঙের ফানুস উড়ানো এবং পিঠা পুলির।
সেই সাথে অনেকেই দ্বিধায় থাকেন সাকরাইন উৎসবে নিজেকে কিভাবে সুন্দর করে সাজাবেন। অনেক সময় পোশাক নির্বাচন ও সাজ-সজ্জার ভুলের কারণে উৎসবে নিজেকে খুবই বেমানান লাগে এবং সোশ্যাল মিডিয়াতে ছবি আপলোড দিলে লাইকও কম পড়ে। তাই সাকরাইন উৎসবে নিজেকে কিভাবে খুব স্টাইলিশ,ফ্যাশনেবল ও সময়োপযোগী করে উপস্থাপন করবেন সে সম্পর্কে আজকে আমি আপনাদের ধারণা দিব। পোশাক নির্বাচনের ক্ষেত্রে সর্বপ্রথম মনে রাখতে হবে যে এটি আমাদের দেশীয় ঐতিহ্যবাহী আনন্দ উৎসব, তাই পোশাক-আশাক ও সাজ-সজ্জায় চাই দেশীয় সংস্কৃতির ছোঁয়া। এই উৎসবে যেহেতু নানা ধরনের মজার খেলা ও আতশবাজির আয়োজন হয়ে থাকে তাই পোশাকে শাড়ির চেয়ে লেহেঙ্গা, থ্রি পিস কিংবা গ্রাউন ড্রেসই বেশি মানানসই। সেইসাথে পোশাকও হতে হবে কালারফুল ও দেশীয় কারুকাজের। দেশীয় কারুকাজ বলতে মূলত ফুলকারি, লকনৌ, টাই-ডাই,ফেব্রিক পেইন্টিং,মিরর কাজ এসবই বুঝায়। সেইসাথে ডিজাইনে স্টোনের কারুকাজ, জর্জেট কিংবা নেট পরিহার করতে হবে। আর এর সাথে ম্যাচিং করে ফুলকারি কাজের কালারফুল জুতো পরতে পারেন, যা আমাদের দেশে খুবই সহজলভ্য।
এরপর আসা যাক সাজগোজের বিষয়ে। যেহেতু এটি শীতকালীন ও রাতের উৎসব তাই গর্জিয়াস মেকআপ করলেও ঘেমে নষ্ট হয়ে যাওয়ার ভয় নেই। আই মেকআপে আনতে পারেন বৈচিত্রতা নানা ধরনের কালারফুল গ্লিটার আইশ্যাডো ব্যবহার করে। গ্লিটার আইশ্যাডো ব্যবহারের সুবিধা হলো রাতে চারপাশে লাইটিং এর কারণে এটি খুবই গ্লেসি সুন্দর একটা লুক আনবে এবং ছবিতেও সুন্দর আসবে। আর ঠোঁটের সাজে ব্রাইট স্কিন কালার যাদের তারা রেড কিংবা পিংকিশ শেডের লিপস্টিক এবং ডার্ক স্কিন কালার যাদের তারা নুড শেডের লিপস্টিক ব্যবহার করবেন। আর অবশ্যই হাইলাইটার ব্যবহার করবেন। চুলের সাজে ব্যবহার করতে পারেন রংবেরঙের ন্যাচারাল/আর্টিফিশিয়াল ফুল কিংবা গাজরার মালা।
আর জুয়েলারি হিসেবে বেছে নিতে পারেন কালারফুল টেক্সটাইল জুয়েলারি, টেরাকোটার জুয়েলারি, সিলভার, ব্রোঞ্চ কিংবা এন্টিক জুয়েলারি গুলো।
ব্যাস এবার আপনার সাকরাইন উৎসবের পোশাক-আশাকও সাজগোজ সম্পূর্ণ হলো। কিন্তু দুঃখের বিষয় হল যে আজকাল বেশিরভাগ মানুষ বাংলার হাজারো বছরের প্রাচীন ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে ভুলে গিয়ে ওয়েস্টার্ন পোশাক পরে সাকরাইন উৎসবে !
Writer Information:
Tazim Sultana Nandita
Ahsanullah University of Science and Technology (AUST)
Department of Textile Engineering ( Batch-40)
1st year 2nd semester
Wow😮😮😮